হাইলাকান্দি পুলিশ বিভাগের পুজোয় ধুনচি নৃত্য প্রতিযোগিতা
সবাইকে অভিনন্দন জানালেন ডিআইজি কঙ্কনজ্যোতি শইকিয়া
বরাক তরঙ্গ, ১৫ অক্টোবর : এবছরের দুর্গোৎসব হাইলাকান্দি পুলিশ বিভাগের পুজোয় বিশেষ সাড়া পড়ে। হাইলাকান্দি পুলিশ রিজার্ভে অনুষ্ঠিত এবছর পুজোতে ভীষণ আকর্ষণীয় মণ্ডপ ও প্রতিমা শৈলী উপভোগ করেন দর্শনার্থীরা। মণ্ডপটি বাঁশের চাটাই দিয়ে তৈরি করা হয়। এর মাধ্যমে এক পরিবেশ বান্ধব মণ্ডপ শৈলী সহ প্রবেশ পথের গেইটে পরম্পরাগত অসমিয়া গামছা ও শরাই প্রদর্শিত হয়। প্রতিদিনই উপচে পড়া ভীড় পরিলক্ষিত হয়। মূলত পুলিশ সুপার লীনা দোলের নেতৃত্বে পুলিশ বিভাগের বরিষ্ট আধিকারিকরা সুন্দর আয়োজনে ব্রতী ছিলেন। সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন ডিএসপি (সদর) সুরজিৎ রায়।
তাছাড়া নবমীর সন্ধ্যায় এক মুক্ত ধুনচি নৃত্যের আয়োজন করলে পুলিশ পরিবার সহ অন্যান্যরা ও এতে সামিল হোন। মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ আসাম রেঞ্জের ডিআইজি কঙ্কণজ্যোতি শইকিয়া। তিনি স্বপরিবারে উপস্থিত থেকে নিজের অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, হাইলাকান্দি পুলিশ বিভাগের এধরণের আয়োজন সত্যিকার অর্থে প্রশংসার দাবি রাখে।তিনি সবাইকে অভিনন্দন জানান। এর আগে পুলিশ সুপার লীনা দোলে বলেন তিনি মূলত নারী সমাজকে উদ্ভুদ্ধ করতে এই আরতি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। একই সঙ্গে তিনি মহিলা ক্ষমতায়ন, বাল্য বিবাহ ইত্যাদি কুরীতি থেকে সমাজ কে বিরত থাকতে আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, জেলা পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এবারের দুর্গাপুজো সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বিশেষ করে ১০০ শতাংশ পরিবেশবান্ধব মণ্ডপ এবং মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল এবারের পুলিশের পুজোর বিশেষ আকর্ষণ। সপ্তমীর সন্ধ্যায় পূজা মণ্ডপে ভারতীয় সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে তুলে ধরে একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাইলাকান্দি জেলার জেলাশাসক নিসর্গ হিভারে। অন্যদিকে, হারিয়ে যাওয়া ধনুচি নৃত্য কে উৎসাহিত করতে নবমী-দশমীর সন্ধ্যায়আরতি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এই প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বয়সের ১২ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন, যা দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি করে। প্রতিযোগীদের উৎসাহ দিতে পূজা মণ্ডপে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ অসম প্রান্তের ডিআইজি কঙ্কনজ্যোতি শইকিয়া এবং জেলার পুলিশ সুপার লীনা দলে।
মা দুর্গাকে আরাধনা করে আয়োজিত এই আরতি প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার অর্জন করেন সুপ্রিয় রায়। দ্বিতীয় পুরস্কার লাভ করেন মৌমিতা দেবনাথ এবং তৃতীয় স্থান অধিকার করেন রেশমি সিনহা। বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আবৃত্তিকার তথা শিক্ষিকা বিজয়িনী ভট্টাচার্য এবং নৃত্যশিল্পী ঋতুপর্ণা রায়।
পুলিশ সুপার লীনা দলে জানান, আরতি প্রতিযোগিতাকে নবপ্রজন্মের মধ্যে পুনরায় জনপ্রিয় করতে তাদের এই প্রয়াস। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলি তরুণ প্রজন্মকে নিজেদের সংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট করতে সহায়ক হবে।
প্রথম পুরস্কার হিসেবে একটি বাইসাইকেল জেলা পুলিশ বিভাগের তরফ থেকে প্রদান করা হয়, এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারকারীরা সুসজ্জিত ট্রফি লাভ করেন। পুরো অনুষ্ঠানটি সুচারুভাবে পরিচালনা করেন সংস্কৃতি কর্মী শংকর চৌধুরী।
এদিন বিভিন্ন বয়সের লোক এতে উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি পুলিশ বিভাগের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিক সহ তাদের পরিবার বর্গ সবাই মিলে এই ধনুচি নৃত্য উপভোগ করেন।পাশাপাশি দুইজন বর্ষীয়ান মহিলা ও আরতি করেন।
এদিকে, প্রথম পুরস্কার প্রাপক যুবক সুপ্রিয় রায় বলেন পুরষ্কার লাভ করা সাইকেলটি সে কোন এক ছাত্রীকে দিয়ে দেবে যাতে করে ওই মেয়েটি এর সুবিধা গ্রহণ করতে পারে।