শহিদ মুকুন্দ কাকতি হাসপাতালে পরিষেবা প্রদানের দাবিতে বিক্ষোভ
বরাক তরঙ্গ, ১০ ফেব্রুয়ারি : ২৩৫ শয্যা বিশিষ্ট শহিদ মুকুন্দ কাকতি অসামরিক চিকিৎসালয়ের আগের মৰ্যাদা ও পরিষেবা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে নলবাড়ি জেলা স্বাস্থ্য সেবা যুগ্ম-সঞ্চালকের কাৰ্যালয়ের গণ অবস্থান কাৰ্যসূচীতে তিনশোর বেশি প্রতিবাদী জনতা অংশগ্ৰহণ করে। শহিদ মুকুন্দ কাকতি সিভিল হাসপাতালের অসামরিক মৰ্যাদা কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি ১২৫ টি শয্যা হ্রাসের বিরুদ্ধে জনগণ গর্জে উঠেন। শহিদ মুকুন্দ কাকতি অসামরিক চিকিৎসালয় সুরক্ষা সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত প্ৰতিবাদী কাৰ্যসূচীতে অংশগ্ৰহণ করা আন্দোলনকারীরা ২৩৫ শয্যার শহিদ মুকুন্দ কাকতি সিভিল হাসপাতালের পূৰ্ণ মৰ্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার দাবিতে দীর্ঘক্ষণ স্লোগান দিতে থাকে।
শহিদ মুকুন্দ কাকতি অসামরিক চিকিৎসালয় সুরক্ষা সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্ৰকুমার জৈনের পরিচালনায় আয়োজিত প্ৰতিবাদী সভায় সুরক্ষা সমিতির সভাপতি ড৹ নারায়ণচন্দ্ৰ শৰ্মা, উপদেষ্টা তাইজুদ্দিন আহমেদ, নলবাড়ির বিশিষ্ট ব্যক্তি জীতেন্দ্ৰ নাথ শৰ্মা, সমিতির উপ সভাপতি যথাক্রমে বিরেশ মল্ল বরুয়া, জ্ঞানেন চক্ৰবৰ্তী, প্ৰজ্জ্বোল দেব, সহকারী সম্পাদক দিব্যজ্যোতি হালৈ এবং এজেওয়াইসিপি’র নলবাড়ি জেলা সম্পাদক যোগেশ কলিতা বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, দীৰ্ঘ ৯ মাসের ধারাবাহিক আন্দোলনের চাপে ২০২৩ এর ১৬ নভেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্ৰী এবং নলবাড়ির বিধায়ক ও কেবিনেট মন্ত্ৰী শহিদ মুকুন্দ কাকতির নামে হাস্পাতাল উদ্বোধন করতে এসে ১১০ শয্যার হাসপাতালের কথা ঘোষণা করেন। অথচ আজ প্ৰায় তিন মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও রোগী ভৰ্তির ব্যবস্থা নেই, প্ৰয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ করা হয়নি। বরং একটি বিভাগ বিলুপ্ত করা হয়েছে। ফলে দরিদ্র মানুষ অভাবনীয় দুৰ্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন। যারা আৰ্থিক অভাবে প্ৰাইভেট নার্সিং হোমে চিকিৎসা করাতে পারছে না তাদের উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে অকাল মৃত্য ঘটছে। সকল বক্তাই নলবাড়ি জেলার প্ৰাণকেন্দ্ৰ তথা নলবাড়ি শহরের মধ্যে অবস্থিত ২৩৫ শয্যার শহিদ মুকুন্দ কাকতি সিভিল হাসপাতালের “অসামরিক” মৰ্যাদা” সহ পরিষেবা সম্পূর্ণভাবে ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ়মত পোষণ করেন।
দুপুর ২ টা নাগাদ নলবাড়ি জেলা স্বাস্থ্য যুগ্ম সঞ্চালক ও অতিরিক্ত আয়ুক্ত প্ৰতিবাদ স্থলে উপস্থিত হলে তাদের হাতে স্মারকপত্ৰ তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও জেলা আয়ুক্ত মারফত মুখ্যমন্ত্ৰী, স্বাস্থ্য মন্ত্ৰী ও নলবাড়ির বিধায়ক ও কেবিনেট মন্ত্ৰীকে স্মারকপত্ৰ প্ৰেরণ করা হয়। স্মারকপত্রে অবিলম্বে ২৩৫ শয্যার শহিদ মুকুন্দ কাকতি সিভিল হাস্পাতালের মর্যাদা ও পরিষেবা ফিরিয়ে দেওয়া সহ অত্যাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করা, নলবাড়ি এবং আসামের গৌরব, স্বাধীনতা আন্দোলনের অমর শহিদ মুকুন্দ কাকতির অবমাননা বন্ধ করে শহিদের নামে হাসপাতালের প্ৰেসক্রিপসন ও অন্যান্য কাগজপত্র ব্যবহার করা, বৰ্তমান সরকারের ঘোষণা মতে ১১০ শয্যার পরিষেবা ও আধুনিক সুযোগ সুবিধা প্রদান করা, প্ৰয়োজন অনুসারে চিকিৎসক, নার্স ও কৰ্মচারী নিয়োগ করা, চক্ষু অপারেশনের ব্যবস্থা বহাল রাখা, দন্ত বিভাগ অবিলম্বে চালু করা ও সহ অন্যান্য চিকিৎসার সুবিধা বহালের দাবি উত্থাপন করা হয়।
জিতেন্দ্ৰকুমার জৈন বলেন, মূল দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলতে থাকবে এবং আরও শক্তিশালী রূপে গড়ে উঠবে। তিনি বলেন,বিধান সভার অধিবশনে প্ৰশ্ন উত্থাপন করতে বিধায়কদের অনুরোধ জানানো হবে, রাজ্যপালকে সাক্ষাৎ করে স্মারকপত্ৰ প্ৰদান, গুয়াহাটিতে সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজন এবং প্ৰতিবাদী আন্দোলন কাৰ্যসূচী গ্ৰহণ করা হবে।