যুদ্ধকালীন তৎপরতায় গুয়াহাটির সংযোগকারী রেল ও সড়ক পথ মেরামতের দাবিতে বিক্ষোভ
বরাক তরঙ্গ, ২৬ জুন : যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বরাক উপত্যকার সঙ্গে গুয়াহাটির সংযোগকারী শিলচর-লামডিং রেল পথের জাতিঙ্গা লামপুর অংশ, শিলচর হাফলং সড়কের বেহাল অবস্থা এবং হারাং সেতু ও বদরপুরের গ্যামন সেতু দ্রুত মেরামতের দাবিতে এসইউসিআই( সি) দলের কাছাড় জেলা কমিটির পক্ষ থেকে শিলচরের ক্ষুদিরাম মুর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ চলাকালে বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক অজয় রায়, শিলচর আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক দুলালী গাঙ্গুলি প্রমুখ। বিক্ষোভ চলাকালে সেখানে উপস্থিত দলের কর্মী, সমর্থকরা দীর্ঘক্ষণ স্লোগান দেন আকাশচুম্বি মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ রাখতে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, কালোবাজারি এবং মজুদদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত চন্দ্রনাথপুর-লঙ্কা দ্বিতীয় রেল লাইনের কাজ অবিলম্বে আরম্ভ করতে হবে, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহের ক্ষেত্রে কোন ধরনের গাফিলতি করা চলবে না।
বিক্ষোভ চলাকালে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক অজয় রায়। তিনি বলেন প্রতি বর্ষায় বরাক উপত্যকা সহ ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মণিপুরের একাংশ জনগণের দুর্ভোগ পোয়াতে বাধ্য হয়। অপরিকল্পিতভাবে তৈরি করা মহাসড়ক আজ যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, শিলচর-লামডিং ব্রডগেজ লাইনে প্রতি বর্ষায় ধস পড়ে যাত্রাপথে বাধার সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, ২০১৫ সাল থেকেই চন্দ্রনাথপুর- লংকা দ্বিতীয় রেলপথ চালুর দাবি জানানো হচ্ছে। অথচ কেন্দ্র সরকার এই রেল পথের সমীক্ষা করলেও তা জনসমক্ষে প্রকাশ করছে না। এরফলে এই গণদাবি উপেক্ষিত রয়ে গেছে। তিনি বলেন এই সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় দ্বিতীয় রেল পথ নির্মাণ করা। দুলালী গাঙ্গুলি বলেন, উন্নয়নের ভগীরথ সেজে মুখ্যমন্ত্রী সহ বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা এখানে এসে বক্তব্য দেন অথচ আজ বরাক উপত্যকার জনগণ উন্নয়নের আসল চেহারা দেখতে পাচ্ছেন।

সড়ক ও রেলপথে কয়েকদিন পর পর বরাক উপত্যকা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর সুযোগে বিমান ভাড়া পাঁচ- ছয় গুণ বৃদ্ধি করে বিমান কোম্পানিগুলো অথচ বরাক উপত্যকার মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়করা নিরব। অসুস্থ রোগীরা এর ফলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে না পেরে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন। ছাত্রছাত্রীরা দেশের অন্যান্য স্থানের উন্নত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। তিনি বলেন, এই যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধের ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য আকাশচুম্বী হয় ফলে সাধারণ মানুষের উপর বাড়িতে আর্থিক বোঝা এসে পড়ে। তিনি সবাইকে এই সমস্যা সমাধানে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এছাড়াও দলের পক্ষ থেকে এদিন একটি স্মারকপত্র জেলা কমিশনারের কাছে প্রদান করা হয়। বিক্ষোভ চলাকালে সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিটির অন্যতম সদস্য সুব্রতচন্দ্র নাথ, নকুলরঞ্জন পাল, দিলীপ নাথ, চাম্পালাল দাস, স্বাগতা ভট্টাচার্য প্রমুখ।