কোটা : বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ২
১৮ জুলাই : বাংলাদেশে কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলন অব্যাহত। বৃহস্পতিবার সেদেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছে। চলছে টিয়ারগ্যাস, লাঠি, গুলি। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে দুইজন গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ দু’জন হলেন একজন অটোরিকশা চালক আশরাফুল (২৫) ও অন্যজন দোকান কর্মচারী রিয়াদ শিকদারের (২৪)।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ী শনির আকড়া ও কাজলা এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত আশরাফুল জানান, সকালে অটোরিকশা নিয়ে কাজে বের হন। তখন যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ বাদে। পুলিশ তাদের ছাত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে এবং শটগানের গুলি চালায়। এতে আশরাফুলের মুখমণ্ডলে গুলিবিদ্ধ হয়। আহত রিয়াদ শিকদারের (২৪) স্বজনরা জানান, পুরান ঢাকার নবাবপুরে গাড়ির পার্টসের দোকানে কাজ করেন রিয়াদ। সকালে শনির আকড়ার বাসা থেকে হেটে কাজে যাচ্ছিলেন। পথে পুলিশের শটগানের গুলিতে আহত হন তিনিও।
এ দিকে, ছাত্রলিগের চামড়া তুলে নিবো আমরা এমন স্লোগানে স্লোগানে রাজপথ কাঁপিয়ে তুলছে উত্তরার স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা উত্তরার জমজম টাওয়ার এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। জমজম টাওয়ার থেকে মিছিল নিয়ে আজমপুর বিমানবন্দর মহাসড়কে আসলে পুলিশ মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেন। অপরদিকে পুলিশকে লক্ষ করে ছাত্ররা ইট পাটকেল মারতে থাকেন। পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলিগনেতারা কোটা বিরোধী আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলা করায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় উত্তরা বিমানবন্দর মহাসড়ক আজমপুর বিএনএস সেন্টার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
এ দিকে, রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে অবস্থান নেয় পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে আন্দোলনকারীদের দিকে রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। রামপুরা ব্রিজ থেকে বাড্ডার ইউলুপ পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
এ ছাড়াও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী সেতু এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলিগ ও পুলিশের সংঘর্ষ চলছে। শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে মিছিল করছিল। তাদের অভিযোগ শান্তিপূর্ণ সমাবেশের এক পর্যায়ে ছাত্রলিগের কর্মীরা হামলা চালায়। তারা হামলাকারীদের প্রতিরোধে করছিল। এসময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। ত্রিমুখী সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
খবর ও ছবি : দৈনিক ইনক্লাব পত্রিকা।