সিইউইটি বাতিল করে নম্বরের ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির দাবি

বরাক তরঙ্গ, ২ এপ্রিল : ছাত্র স্বার্থ বিরোধী সিইউইটি (ইজি) পরীক্ষা বাতিল করে হায়ার সেকেন্ডারি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীদের কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ প্রদানের দাবি জানিয়ে বুধবার নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় কমিটি, আসাম এর পক্ষ থেকে একটি স্মারকপত্র আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে প্রদান করা হয়। স্মারকপত্রে উল্লেখ করা হয় যে রাজ্যের অন্য দুটি বিশ্ববিদ্যালয় যথাক্রমে গৌহাটি ও ডিব্রুগড়ের অনুমোদন প্রাপ্ত ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার কলেজগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে পুরোনো নিয়ম অনুযায়ী হায়ার সেকেন্ডারি পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরকে বিবেচনা করা হয়। অথচ পিছিয়ে পড়া উন্নত পরিকাঠামোহীন এবং শিক্ষককের অভাব থাকা বরাক উপত্যকা সহ পাহাড়ি জেলা যথাক্রমে ডিমা হাসাও, কার্বি আংলং ইত্যাদিতে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন প্রাপ্ত কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ পেতে গেলে সর্বভারতীয় স্তরের ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি কর্তৃক পরিচালিত সিইউইটি (ইউজি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে বলে অযৌক্তিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। সিইউইটি (ইজি) পরীক্ষা আয়োজনের ক্ষেত্রে এনটিএ’ আসাম বিশ্ববিদ্যালয় ও আসাম সরকারের মতামতকেও গুরুত্ব দেয় না ফলে ভারতের সংবিধানে শিক্ষার ক্ষেত্রে যে স্বাধীকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এবং  সরকারকে দিয়েছে তা সরাসরি উলঙ্ঘন করা হচ্ছে। তাছাড়া এই পরীক্ষা আয়োজনের ক্ষেত্রে রাজ্যের সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ভাষাগুলির মর্যাদাকেও উপেক্ষা করা হয়েছে। গত বছর এই পরীক্ষা আয়োজনের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গেছে যে বাংলা মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিকে পাস করা ছাত্রছাত্রীদের ইংরেজি, বড়ো ও অসমীয়া ভাষায় পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

তাছাড়া বাংলা বিষয়ের পরীক্ষা কেন্দ্র বরাক উপত্যকা সহ ডিমা হাসাও, কার্বি আংলং এর ছাত্র ছাত্রীদের জন্য কোকরাঝাড়, ডিব্রুগড়, শিলং, আগরতলা ইত্যাদি স্থানে রাখা হয়েছিল। যেগুলোতে অনেকেই আর্থিক অনটনের জন্য যেতেই পারেনি। স্মারকপত্রে এও উল্লেখ করা হয় যে কলেজে ভর্তির পূর্বে অহেতুক তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফিজ আদায় করে তাদের বাধ্য করা হয়

সিইউইটি বাতিল করে নম্বরের ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তির দাবি

সর্বভারতীয় পরীক্ষায় বসার জন্য। তাই গত ২৮ মার্চ নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় সমিতি, আসাম এর কাছাড় জেলা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিরঞ্জন দত্ত সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য, অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্য, অধ্যাপক ড অজয় রায়, সুব্রতচন্দ্র নাথ, বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের অন্যতম পদাধিকারী গৌতম প্রসাদ দত্ত, ফোরাম ফর স্যোশাল হারমনির অরিন্দম দেব, ইয়াসি’র সভাপতি সঞ্জীব রায়, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের বিশ্বজিৎ দাস, ডাঃ এম শান্তি কুমার সিংহ, প্রাক্তন অধ্যক্ষ দীপঙ্কর চন্দ প্রমুখ সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে সিইউইটি( ইউজি) বাতিল করে হায়ার সেকেন্ডারি পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ছাত্র ছাত্রীদের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনের কলেজগুলোতে ভর্তির দাবিতে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এর প্রথম ধাপ হিসেবে আজ সংগঠনের তিন পদাধিকারী যথাক্রমে ডাঃ এম শান্তি কুমার সিংহ, সঞ্জীব রায় ও হিল্লোল ভট্টাচার্য আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে উক্ত দাবিতে স্মারকপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে প্রদান করেন এবং এর প্রতিলিপি আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার, কন্ট্রোলারের কাছে প্রদান করা হয়। এই স্মারকপত্রের প্রতিলিপি ইমেইল যোগে ভারতের শিক্ষা মন্ত্রী, আসামের শিক্ষা মন্ত্রী, বরাক উপত্যকার সাংসদ যথাক্রমে পরীমল শুক্লবৈদ্য, কৃপানাথ মালা, মিশনরঞ্জন দাস ও সুস্মিতা দেবের কাছে প্রেরণ করা হয়।

Author

Spread the News