সাংবাদিকদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার লড়াইয়ে বার্তাজীবী সংঘ : মুকুট রাজ

বরাক তরঙ্গ, ১৫ সেপ্টেম্বর : অসম বার্তাজীবী সংঘের কাছাড় জেলা কমিটির সম্মেলনে আলোচনায় উঠে আসল কর্মরত সাংবাদিক তথা সরকারি স্বীকৃতি প্রাপ্ত সাংবাদিকদের অসম পরিবহন নিগমের দূরপাল্লার বাস যাত্রা ও ট্রেনের যাতায়াতে ছাড় দেওয়া, গ্রাম ও শহরাঞ্চলের সাংবাদিকদের জীবন বিমা, মুখ্যমন্ত্রী আয়ূষ্মান কার্ড প্রদান, অবসর গ্রহণের পর সরকারি পেনশন বাধ্যতামূলক করা সহ সাংবাদিকদের নিয়মিত বেতন ও ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা সহ একাধিক দাবি ও বিভিন্ন সমস্যা। শুক্রবার শিলচর কাছাড় জেলা পরিষদ কনফারেন্স হলে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ। জেলা কমিটির সভাপতি বিশ্বজিৎ শীলের পৌরোহিত্য সভায় বক্তারা রাজ্যের কর্মরত সাংবাদিকদের স্বার্থে বিভিন্ন দাবি পূরণে জনসংযোগ মন্ত্রী পীযূষ হাজরিকার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বার্তাজীবী সংঘের কাছাড় জেলা সম্মেলন, গঠিত নয়া কমিটি_____

সম্মেলনের মুখ্য অতিথি মুকুট রাজ শর্মা বক্তব্যে বলেন, দায়িত্ব গ্ৰহণের পর থেকে সাংবাদিকদের বেতন নির্ধারণ সহ বৃদ্ধি ইত্যাদি কর্মরত সাংবাদিকদের ন্যায্য দাবি পূরণের  লক্ষ্যে সরকারের সঙ্গে আলোচনা মর্মে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু পেনশনের অর্থ বৃদ্ধি যেভাবে হওয়া উচিত, তা সরকার মেনে নেয়নি। আট হাজার থেকে দশ হাজার এখনও অনুমোদন দেয়া হয়নি। বর্তমান সাংবাদিকরা সমাজের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু বর্তমানে সরকারি যেসব আইনকানুন বলবৎ করা হচ্ছে তাতে সাংবাদিকদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টাই চলছে। সাংবাদিকদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত বলয়ের আওতায় নিয়ে আসার জন্য অসম বার্তাজীবী সংঘ নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে জানান তিনি।

সাংবাদিকদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার লড়াইয়ে বার্তাজীবী সংঘ : মুকুট রাজ
বাড়িতে গিয়ে প্রবীণ সাংবাদিক পরেশ দত্তকে সংবর্ধনা জেলা কর্মকর্তাদের।

এ ছাড়া সভায় কবি সাংবাদিক বিজয় কুমার ভট্টাচার্য, তমোজিৎ ভট্টাচার্য, বিকাশ চক্রবর্তী ও চয়ন ভট্টাচার্য বক্তব্যে সংবাদ প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকের বেতন নির্ধারণ সহ বেতন নিয়মিত প্রদান, পেনশন বাধ্যতামূলক সহ কর্মরত সাংবাদিকদের ন্যায্য দাবি পূরণের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাঁদের কথায়, সমাজে সাংবাদিকের ভূমিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ। এই পেশার দায়িত্ব অনেক এবং ঝুঁকি যেমন অনেক, তেমনই সম্মানীয় পেশা। সাংবাদিকদের আদর্শবান, সৃজনশীল এবং যুক্তিবাদী হতে হবে। সাংবাদিকতা হচ্ছে সেবামূলক একটি পেশা। পেশাটি খুবই সহজ বা আরামের বলে অনেকের কাছে প্রতীয়মাণ হলেও আদতে সাংবাদিকতা ব্যতিক্রমধর্মী পেশা- যা কষ্টসাধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় অন্য সব পেশার চাইতে তা সম্পূর্ণ ভিন্ন। বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক কিশোর জ্যোতি শর্মা, রাহুল চক্রবর্তী, অভিজিৎ ভট্টাচার্য, সাংবাদিক উত্তম সী, আশু চৌধুরী, রাজীব মজুমদার, মকসুদুল চৌধুরী, নীহার রায় প্রমুখ।

সাংবাদিকদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার লড়াইয়ে বার্তাজীবী সংঘ : মুকুট রাজ
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কিশোরজ্যোতি শর্মার হাতে স্মারক তুলে দিচ্ছেন শচীন্দ্র পাল।

সম্মেলনের শুরুতে বরাক উপত্যকার বিশিষ্ট সাংবাদিক পরেশ দত্ত সহ আশির দশক থেকে সাংবাদিকতায় কর্মরত পাঁচ বিশিষ্ট সাংবাদিক যথাক্রমে সাংবাদিক বিজয় কুমার ভট্টাচার্য, তমোজিৎ ভট্টাচার্য, বিকাশ চক্রবর্তী, চয়ন ভট্টাচার্য ও পার্থ ভট্টাচার্যকে সংঘের পক্ষ থেকে উত্তরীয়, স্মারকসম্মান ও উপহার দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়।

সাংবাদিকদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার লড়াইয়ে বার্তাজীবী সংঘ : মুকুট রাজ
বক্তব্য রাখছেন উত্তমকুমার সী।

সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কিশোরজ্যোতি শর্মা, গোয়ালপাড়া জেলার সভাপতি সৈয়দ রবিউল হক, দরং জেলা সভাপতি হেমন্ত ডেকা, দক্ষিণ পশ্চিম সহসভাপতি অভিজিৎ ভট্টাচার্য, রাজ্য কমিটির কার্যকরী সদস্য রাহুল চক্রবর্তী, দক্ষিণ পশ্চিম সাধারণ সম্পাদক অসীম দেব, হাইলাকান্দি জেলা সভাপতি অনিন্দ্য নাথ, কাছাড় জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক গৌতম তালুকদার প্রমুখ।

সাংবাদিকদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার লড়াইয়ে বার্তাজীবী সংঘ : মুকুট রাজ
সম্মেলনে চয়ন ভট্টাচার্য বক্তব্য রাখছেন।

সম্মেলন শেষে জেলা কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। নয়া জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ফের মনোনীত হন বিশ্বজিৎ শীল ও রত্নদীপ দেব। সাংগঠনিক সম্পাদক গৌতম তালুকদারকে মনোনীত করা হয়। তিন সহসভাপতি ভাস্কর সোম, উত্তমকুমার সী ও অনিরুদ্ধ দেব। যুগ্ম সম্পাদক অমলকুমার লস্কর ও আশু চৌধুরী। কোষাধ্যক্ষ মনোনীত হয়েছেন সুব্রত দাস। প্রচার সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন শমীন্দ্র পাল। এ দিন ২১ সদস্য বিশিষ্ট অসম বার্তাজীবী সংঘের কাছাড় জেলা কমিটি গঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সহযোগিতায় ছিলেন সংঘের অন্যতম সদস্য মৃদুলা ভট্টাচার্য, দীপককুমার পাল, অজিত দাস, সঞ্জীব ভট্টাচার্য, দেবাশিস রায়। গোটা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাছাড় জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রত্নদীপ দেব।

Author

Spread the News