এখন আর সচিব নন অতনু ভট্টাচার্য, আইনজীবীদের নিয়ে জানিয়ে দিল ডিএসএ
সেক্রেটারির অফিসকক্ষ খুলে দেওয়ার অনুরোধ দেবাশিসের
ইকবাল লস্কর, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ১৬ জুলাই : আইন অনুযায়ী এখন আর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব পদে নন অতনু ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এসব আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিলেন অতনুবাবুর বিপক্ষের আইনজীবীরা। সংস্থার সভাকক্ষে আয়োজিত এদিনের সম্মেলনে উপস্থিত দুই আইনজীবী জয়দীপ বিশ্বাস ও মৃদুল দেব জানান, অতনুবাবুর দায়ের করা তিনটি মিসকেস (মিসলেনিয়াস কেস) সোমবার খারিজ করে দিয়েছে শিলচরের বরিষ্ট -১ দেওয়ানি আদালত। বেশকিছু কারণেই অতনুবাবুর মিসকেসগুলো খারিজ হয়েছে। প্রথমটা হচ্ছে তিনি জিবি-র দ্বারস্থ না হয়ে সরাসরি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। এখানে তিনি ডিএসএ-র নিজস্ব সংবিধান অবমাননা করেছেন। ডিএসএ-র বিধি অনুযায়ী তাকে প্রথমে যেতে হয়েছিল জিবি-র কাছে। কিন্তু সেখানে তিনি যাননি। এছাড়া ডিএসএ যেখানে তাঁকে সাসপেন্ড করেছে। কিন্তু তিনি মামলা করেছেন ডিএসএ-র সভাপতি সহ ২২ জনকে বিবাদী করে। তাছাড়া মূল মামলা (টাইটাল সুইট)-র সঙ্গে মিসকেসগুলোও সংযুক্ত করা হয়নি। মিসকেসে প্রার্থনা করা হয়েছে অধিকার ফিরিয়ে দিতে কিন্তু এইসব আর্জি নেই মুল মামলায়। সংশোধিত করে পরবর্তীতে করা মিসকেসে জুড়ে না দেয়ার জন্য আদালত সব মিসকেস খারিজ করে দেয়।
সচিব অতনু ভট্টাচার্যকে পদ থেকে নিলম্বিত করার পর প্রথমে তার অধিকার ফিরিয়ে দিতে আদালতের দ্বারস্থ হন পড়ুন টাইটাল সুট করেন। এর পরে পরপর তিনটি মিসকেস করেন যথাক্রমে ডিএসএ-র জিবি মিটিং না করা, মিটিংয়ে প্রস্তাব সমুহ বাস্তবায়ন না করা, সাসপেন্সশন রদ করা ইত্যাদি নিয়ে। কিন্তু মিসকেসের কোনো একটি আইনি দৃষ্টিকোণে ধোপে টিকেনি। সবটাই খারিজ হয়ে যায়। অতএব, ডিএসএ-র নিজস্ব সংবিধান অনুযায়ী সাধারণ সচিব পদ থেকে নিলম্বন আইনগতভাবে ঠিকে গেল। তবে টাইটাল সুটসের শুনানি আগামী ৬ সেপ্টেম্বর রয়েছে। উপস্থিত দুই আইনজীবী এও, জানান টাইটাল সুটস এখন আদালতের এক্তিয়ারভুক্ত। তবে মিসকেস যেহেতু অতনুবাবুর অনুকূলে যায়নি, তাই মুল মামলার ক্ষেত্রে এটা তারপক্ষে বড় ধাক্কা হিসেবে আগাম ধরে নেয়া যায়। এছাড়া, মামলা করা হয়েছে দেওয়ানি আদালতে এক্তিয়ারে। পরবর্তীতে আপিল করতে হবে জেলা আদালতে। সেখানে সন্তোষ্টি না হলে তিনি উচ্চ আদালতে যেতে পারবেন। এই অবস্থায় জল অনেক দূর গড়াতে হবে অতনুবাবুকে।
কোষাধ্যক্ষ বুদ্ধদেব চৌধুরী বলেন, সাধারণ সভা আয়োজনের প্রথম প্রস্তুতি হচ্ছে হিসেবের প্রতিবেদন প্রস্তুত করা। যা তার কাছে রেডি রয়েছে। কিন্তু সম্পূর্ণটা করতে হলে পূর্বতন সচিব অতনু ভট্টাচার্যর করা হিসেবসমহ দিতে হবে।

সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, গত ৭ জুন মামলার পর থেকে আজ ৩৮ দিন হয়েছে । এরমধ্যে ডিএস এ-র কর্মকাণ্ড স্বাভাবিকভাবে চলছে বলে দাবি করেন। এক প্রশ্নের উত্তরে দেবাশিস সোম বলেন, এই মুহূর্তে ডিএসএ-র সাধারণ সভা কবে হবে নিয়ে কিছু বলতে পারবেন না। এজন্য কিছুটা সময় চেয়ে নেন। তিনি এও বলেন, সচিব অতনু ভট্টাচার্য তার কক্ষ ‘লক এন্ড’ কি করে রেখেছেন, সেটা যেন খুলে দিয়ে ডিএসএ-র সঙ্গে সহযোগিতা করেন। ডিএসএ-র সংবিধান অনুযায়ী এখন তিনি আর সাধারণ সচিব নন। এজন্য সচিব যেন তার কক্ষের তালা খুলে দিতে সংবাদ মাধ্যম মারফত অনুরোধ জানান।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুই সহ সভাপতি আশুতোষ রায়, নন্দুদুলাল রায়, সহ-সচিব অরিজিৎ গুপ্ত, অজয় কুমার রায়, নন্দন চৌধুরী, সুদর্শন চৌধুরী প্রমুখ। উল্লেখ্য, এদিনের সভায় গরহাজির ছিলেন সভাপতি শিবব্রত দত্ত।