প্রিসাইন্সিয়ার নবনির্মিত ভবনে ব্যতিক্রমী আনন্দসন্ধ্যা
বরাক তরঙ্গ, ২৫ এপ্রিল : হাইলাকান্দির টোল রোডে অবস্থিত প্রিসাইন্সিয়া সিনিওর সেকান্ডারি স্কুল তাদের নবনির্মিত ভবনে ‘নতুনের আহ্বানে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নতুন যাত্রা শুরু করে। এদিন তিনটি আলাদা আলাদা বিভাগে স্বতন্ত্র থিম অনুযায়ী অনুষ্ঠান আয়োজন করেন স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ। গোটা অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা, পরিচালনা ও সঞ্চালনায় ছিলেন স্কুল এর বাংলা বিভাগের শিক্ষক তীর্থঙ্কর চক্রবর্তী। অনুষ্ঠান শুরু হয় অরুণ কুমার সিনহা সহ হাইলাকান্দি সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের আমন্ত্রিত নৃত্য শিল্পীদের পরিবেশনার মাধ্যমে। শিল্পীরা প্রায় ২০ মিনিট তাদের মনোজ্ঞ উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে দর্শক শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে করে রাখেন।
এ বিভাগের থিম ছিল ‘সন্ধ্যা’। ভারতীয় সংস্কৃতিতে এ সময়টির বহুমাত্রিক তাৎপর্য নৃত্যের ভাষায় ব্যক্ত করেন শিল্পীরা। এরপর স্কুলের পক্ষ থেকে অ্যাকাডেমিক ডিরেক্টর অঞ্জন কুমার সাহা ও অধ্যক্ষ ড° পারিজাত দেবরায় সম্মাননা প্রদান করেন হাইলাকান্দি সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের নৃত্য বিভাগের প্রধান শিক্ষিকা মিতালী চক্রবর্তীকে এবং স্টেপ আপ ডেন্স অ্যাকাডেমির শিক্ষক তথা নৃত্যশিল্পী অরুণ কুমার সিনহাকে। দ্বিতীয় পর্বে ছিল ‘শ্রী সম্মান’। প্রিসাইন্সিয়ার ছাত্রীরা লেখাপড়ায় তুখোড়, কিন্তু গৃহকর্মে তারা কতটা নিপুণা- সেরকমই কিছু গৃহকাজ বিষয়ক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে ‘শ্রী’ এর সন্ধান চালান স্কুলের অ্যাডুকেশন বিষয়ের শিক্ষিকা গৌতমী শর্মা। প্রেক্ষাগৃহে তৈরি হয় টান টান উত্তেজনা। একের পর এক প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়ে এদিন ‘শ্রী সম্মান’ অর্জন করে ছাত্রী ভাগ্যশ্রী ভট্টাচার্য। তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে স্মারক তুলে দেন বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষিকা প্রজ্ঞা দেব। তৃতীয় তথা শেষ সেগমেন্টে ছিল ‘ক্যুইজ অন ক্রিকেট’।
উল্লেখ্য, গত ২৪ এপ্রিল ছিল ভারতরত্ন শচীন তেন্ডুলকরেরে ৫২তম জন্মদিন। এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে আয়োজন করা হয় ক্যুইজের। এ পর্বের সঞ্চলনায় ছিলেন ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড° অভিজিৎ মিত্র। আমন্ত্রিত ক্যুইজ মাস্টার তথা মুখ্য অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন হাইলাকান্দি শহরের জেলাস্তরের প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা বিসিসিআই সার্টিফাইড আম্পায়ার মনোজিৎ দাস। তাঁকে প্রথমে স্কুলের পক্ষ থেকে উত্তরীয় পরিয়ে, স্মারক প্রদান করে সম্মান জানানো হয়। তাঁর নাতিদীর্ঘ বক্তৃতায় সমৃদ্ধ হয় প্রেক্ষাগৃহের ক্রিকেট-প্রেমী ছাত্র-শিক্ষক সকলে। এরপর অনুষ্ঠিত হয় ক্যুইজ। এতে ছাত্রদের সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ ছিল নজরকাড়া। ভারতীয় ক্রিকেট, শচীন তেন্ডুলকরের ক্রিকেট জীবনের বহুবিধ দিক নিয়ে প্রশ্ন করা হয় এপর্বে। একের পর এক সঠিক উত্তর দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় একাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান শাখার ছাত্রী মাইসা জাবিন লস্কর। শেষ পর্বে ছাত্র-ছাত্রীদের আনন্দ দিতে সেইসঙ্গে ভারতরত্নকে ভালোবেসে শ্রদ্ধা জানাতে আয়োজন করা হয় কেক কাটিং সেরোমনি। সব মিলিয়ে স্কুলের সকল ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ আমন্ত্রিত আপনজনদের উপস্থিতিতে এ সন্ধ্যা এক আনন্দ মুখর সন্ধ্যায় পরিণত হয়েছিল। অনুষ্ঠানের ট্যাগ লাইন ‘আমাদের যাত্রা হলো শুরু…’ প্রকৃত অর্থেই যেন মঙ্গলময় হয় এই শুভেচ্ছাই জানিয়েছে বর্তমান-প্রাক্তন শিক্ষার্থী সহ অভিভাবক ও বিশিষ্ট গুণীজনেরা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী, বিপ্লব ভট্টাচার্য, তুহিনা পাল, চিন্ময় দত্ত, কিষান কাহার, চৈতালী চক্রবর্তী, শামিম আহমেদ বড়ভূইয়া, সূর্যশিখা দাস মজুমদার, অনন্যা দাস, বহ্নিশিখা দে, কেয়া নাগ, শুভম শর্ম্মা মজুমদার, পার্থ সারথী দে, বিশাল দেব রায় ও আবুল কালাম চৌধুরী।