বাগানে এয়ারপোর্টের কাজ সাময়িক বন্ধ থাকলেও বাস্তব সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি : সিটু

বরাক তরঙ্গ, ১৫ মে : রাজ্য সরকারের অপরিনামদর্ষিতা ও মালিক পক্ষের অবহেলার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ডলু চা বাগানের শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় সিটু অন্তর্ভুক্ত অখিল ভারতীয় চা মজদুর সংঘ বৃহত্তর আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিল। বুধবার আন্দোলনের কথা জানিয়েছে সিটুর কাছাড় জেলা সুপ্রিয় ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক মণীশ কর্মকার এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, ডলু বাগানে এয়ারপোর্ট নির্মাণে দেশের সর্বোচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ দিয়েছে। মূলতঃ আইন অনুযায়ী পরিবেশ ছাড়পত্র না নিয়ে চা গাছ উপড়ে ফেলার কারণে এই স্থগিতাদেশ দিয়ে পরিবেশে ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত এয়ারপোর্টের কাজ বন্ধ করা হয়েছে। এর ফলে বাগানে এয়ারপোর্টের কাজ সাময়িক বন্ধ থাকলেও বাস্তব সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। একদিকে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের অপরিনামদর্ষী পদক্ষেপ, অন্যদিকে বাগান মালিকপক্ষের অবহেলা ও উদ্যোগের অভাব ডলু চা বাগানের অস্তিত্ব ও বাগান শ্রমিকদের  জীবন জীবিকার অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলেছে। ডলু বাগানের শ্রমিকদের অবগত থাকা দরকার, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এয়ারপোর্টের কাজ সাময়িক স্থগিত থাকলেও সম্পূর্ণ বন্ধ করার নির্দেশ দেয়নি। অধিগৃহিত জমি বর্তমানে সরকারের দখলে, বাগানের হাতে নেই, সুতরাং ডলু বাগান কর্তৃপক্ষ সেখানে কোনও চারা রোপণ করতে পারবেন না। সুতরাং শ্রমিকদের নুতন কাজের সুযোগ অথবা অন্য কোন উন্নতির সুযোগ সৃষ্টি হয়নি।

“বাগান বাঁচাও শ্রমিক বাঁচাও” শিরোনামে ডলু বাগানে শ্রমিক স্বার্থে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত____

অন্যদিকে বাগান কর্তৃপক্ষের অবহেলায় খালি জমিতে অথবা পুরনো চা গাছের স্থানে নুতন চারা রোপণ করে উৎপাদন এবং কাজের সুযোগ বৃদ্ধির ব্যবস্থা সঠিক ভাবে হচ্ছেনা। অথচ বহুপাক্ষিক চুক্তিতে সেই প্রতিশ্রুতি ছিল। মালিক পক্ষের অবহেলায় বাগানের চা গাছ গুলিতে পোকা ও রোগের আক্রমণে গাছগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, কিন্ত উপযোগী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। মজুরি বৃদ্ধির বাবদ এরিয়ারের সমস্ত টাকা শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে না। শ্রমিক পরিবারের বিবাহ শ্রাদ্ধ অথবা কোনো প্রয়োজনে পিএফ এর অগ্রিম টাকা দেওয়া হচ্ছে না। কেজুয়াল শ্রমিক যাদের পিএফ এর টাকা কাটা হয়েছিল তাদের মধ্যে যারা বর্তমানে কাজে নেই অথবা মৃত, তাদের টাকা পরিবারকে ফেরত দেওয়া হচ্ছে না, বাগান শ্রমিক আইন অনুযায়ী ও বহুপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী গৃহ সংস্কার হচ্ছে না, ইউনিয়নের বা পঞ্চায়েতের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে রেশনে চালের অংশ কমিয়ে পরিবর্তে নিম্ন মানের আটা দেওয়া হচ্ছে। এই সামগ্রিক পরিস্থিতিতে আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনও বিচ্ছিন্ন অথবা বিশৃঙ্খল পদক্ষেপের শিকার হলে শ্রমিকদের অবস্থার আরও অবনতি হবে।যে কোনও বাগানের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ও শ্রমিকের জীবন জীবিকার সুরক্ষায় বাগানের সমস্ত শ্রমিকদের কোনো বিভ্রান্তির শিকার না হয়ে সার্বিক ঐক্য বজায় রাখা এবং গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গড়ে তোলা প্রয়োজন। সিটু অন্তর্ভুক্ত অখিল ভারতীয় চা মজদুর সংঘ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শ্রমিকদের উপরোক্ত সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি দাবি সনদ বাগান কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে পেশ করবে। এর পর ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন চলবে।
এবিসিএমএস (সিটু) র পক্ষ থেকে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থেকে বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যতের সমস্ত আক্রমণের মোকাবিলা করার আবেদন জানানো হয়েছে। 

Author

Spread the News