অধ্যাপক প্রশান্ত চক্রবর্তীর মন্তব্যে নিন্দা আকসার প্রাক্তনীদের, ক্ষমা প্রার্থনা করার দাবি

বরাক তরঙ্গ, ২৭ মে : আসাম বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে অধ্যাপক প্রশান্ত চক্রবর্তীর মন্তব্যে তোলপাড় বরাক উপত্যকা। চক্রবর্তীর মন্তব্যকে ধিক্কার ও নিন্দা জানিয়ে বরাকবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার দাবি জানিয়েছেন আকসার প্রাক্তনীরা। মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এ দাবি জানিয়েছেন ছাত্র সংগঠন আকসার প্রাক্তন সদস্য অধ্যাপক হিলাল উদ্দিন লস্কর, বদরপুরের পঙ্কজকান্তি দেবরায়, প্রমোদ শ্রীবাস্তব, শান্তনু দাস, গীতেশ পাল, সঞ্জীব রায় প্রমুখ। তাঁরা জানান, ৮০র দশকে বরাকের ভৌগোলিক দিক থেকে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিতে সংগঠন আকসা তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। কারণ সেসময় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় পাড়ি দিয়ে বরাকের অনেক ছাত্রছাত্রীকে উগ্র জাতীয়তাবাদীদের কাছে চরম হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল। এমনকি অনেক ছাত্রছাত্রীর নথিপত্র সেখানে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল। আকসার নেতৃত্বে আয়োজিত আন্দোলনে জাতি-ধর্ম-বর্ণ ও রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে হাজার হাজার মানুষ বরাকে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিতে মাঠে নেমেছিলেন। টানা ১০ বছর আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পর সরকার শিলচরে আসাম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমোদন দেন। এবং ১৯৯৪ সালে শিলচরের আসাম বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গ রূপে তার যাত্রা শুরু করে। কিন্তু আসাম বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনের ইতিহাস না জেনে হঠাৎ বহিরাগত একজন বরাকে এসে আসাম বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ভূল মন্তব্য করে এখানে বিভ্রান্ত ছাড়ানোর বিষয়টি মোটেও গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন তাঁরা।

প্রশান্ত চক্রবর্তী হঠাৎ এসে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসকে বিকৃত করে বরাকে বিভ্রান্ত ছড়াবেন তা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অধ্যাপক প্রশান্ত চক্রবর্তী সম্প্রতির বার্তা ছড়াতে এসে বরাকের মানুষের পিঠে ছুরি দিয়ে আঘাত করে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আকসার প্রাক্তনীরা। আসাম বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনে আসুর কোন যোগদান রয়েছে বলে প্রমাণ করতে পারলে অধ্যাপক প্রশান্ত চক্রবর্তীর কাছে আকসার প্রাক্তন সদস্যরা প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবেন বলে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েন।

অধ্যাপক প্রশান্ত চক্রবর্তীর মন্তব্যে নিন্দা আকসার প্রাক্তনীদের, ক্ষমা প্রার্থনা করার দাবি

বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের ইতিহাস বরাকের তরুণ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করারও প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান তাঁরা।

উল্লেখ্য, গত ১৯শে মে ব্রহ্মপুত্র থেকে বরাক সফরে এসে বাংলা সাহিত্য সভার অসমের সদস্য তথা অধ্যাপক প্রশান্ত চক্রবর্তী আসাম বিশ্ববিদ্যালয় অসম আন্দোলনের ফসল বলে যে মন্তব্য করেছিলেন। তা নিয়ে বরাক উপত্যকা জুড়ে বিতর্ক তীব্র আকার ধারণ করেছে।

Author

Spread the News