মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ১৯ নভেম্বর : পাথারকান্দিতে চা জনগোষ্ঠীর জোর দাবি এবার মনোনয়ন চাই আমাদেরই। তিন দশকের অপেক্ষা—২০২৬-এ চা জনগোষ্ঠীর প্রার্থীকেই চেয়ে পাথারকান্দি” চা জনগোষ্ঠীর ঐক্যের ডাক। পাথারকান্দিতে চা জনগোষ্ঠীর বিজেপি পুরনো সৈনিক উত্তম রিখিয়াসনকেই চাইছেন বাগানবাসী।দীর্ঘ মনোনয়ন বঞ্চনার ইতিহাস ভাঙতে চা জনগোষ্ঠীর দাবি এবার আরও জোরালো হয়ে উঠেছে এমন আবাস দিলেন চা বাগানবাসী।আগন্ত ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগমুহূর্তে পাথারকান্দি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সুরের আগমন দেখা গেলো বিগত ২০১৬ সাল থেকে বিজেপি দল তথা পাথারকান্দি বিধানসভার দু’বারের জনপ্রিয় বিধায়ক ও বর্তমান রাজ্যে সরকারে গুরুত্বপূর্ণ মীন পশু পাল ভেটেনারি ও পূর্ত বিভাগের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু পালের ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে পরিচিত চা-বাগান এলাকায়। এবার চা-বাগান থেকে চা জনগোষ্ঠীর প্রার্থীকে বিজেপির পক্ষ থেকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে সরব হলেন পাথারকান্দি কেন্দ্রের চা-বাগানের এলাকার একাংশ বিশিষ্ট ব্যাক্তিব সহ চা-জনগোষ্ঠীর কর্মীরা।
এই দাবিতে বুধবার সন্ধ্যায় চান্দখিরায় আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁরা ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে জানান, এবারের নির্বাচন চা জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক স্বীকৃতির লড়াইয়েরও এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত চা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা বলেন, “দলের ইতিহাস অধ্যয়ন করলে পরিস্কার বোঝা যায়—বিজেপি সর্বদাই সকল জনগোষ্ঠীর ন্যায়সঙ্গত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেছে এবং সামাজিক-রাজনৈতিক অধিকার প্রতিটি সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর।”
তাঁদের বক্তব্য, গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে পাথারকান্দির চা জনগোষ্ঠী অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে এসেছে বিজেপিকে। নির্বাচনের প্রতিটি পর্বে দলীয় প্রার্থীকে ‘দুহাত ভরে’ ভোট দিয়েছে এই জনগোষ্ঠী। তবুও দীর্ঘ ৩০–৩৫ বছর ধরে চা জনগোষ্ঠীর একজন প্রতিনিধিকে মনোনয়ন দিতে ব্যর্থ হয়েছে দল এমন ক্ষোভও প্রকাশ করেন তাঁরা। চা জনগোষ্ঠী থেকে কার মনোনয়ন চান—সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে কর্মীরা একবাক্যে জানান, উত্তম রিকিয়াসন-এর নাম। তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের জেলা স্তরের কর্মকর্তা, লোয়াইরপোয়া মণ্ডলের দুই টার্মের প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি এবং বর্তমানে অসম চা জনগোষ্ঠী জাতীয় মহাসভার শ্রীভূমি জেলা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তাঁদের দাবি, “নেতৃত্ব, সংগঠনের প্রতি নিষ্ঠা, জনগণের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক—সব ক্ষেত্রেই উত্তম রিকিয়াসন উপযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী। চা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা আরও জানান, ১৯৯৬ সাল থেকে তাঁরা নিয়মিতভাবে মনোনয়নের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু প্রতি নির্বাচনেই তাঁরা বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। তবে এবারের পরিস্থিতি নাকি ভিন্ন। তাদের মতে, এবার শুধু চা জনগোষ্ঠী নয়—কেন্দ্রের অন্যান্য জনগোষ্ঠীও চা জনগোষ্ঠীর একজন যোগ্য প্রতিনিধিকেই দলীয় মনোনয়ন দিতে চাইছে। এই দাবি এখন পাথারকান্দির রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে।সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সন্তোষ গোয়ালা, মিলন দাস পানিকা, সুব্রত নাথ, সজল দাস পানিকা, অরূপ সিংহ, রঞ্জিত ভূঁইয়া, দেওনারায়ন গৌড়, নির্মল দাস পানিকা প্রমুখ চা জনগোষ্ঠীর বিশিষ্ট কর্মী–সমর্থকেরা। সম্মেলনজুড়ে তাঁদের বক্তব্যের মূল সুর চা জনগোষ্ঠী ন্যায়সঙ্গত দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছে, আর এবার তাঁরা যোগ্য প্রার্থী হিসেবে উত্তম রিখিয়াসনকেই দেখতে চান। এতেই পাথারকান্দির রাজনীতিতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এবার পাথারকান্দিতে নতুন সুর চা জনগোষ্ঠীর কণ্ঠে মনোনয়নের দাবি আরও তীব্র হচ্ছে।


