কাছাড়ের সিন্দুরা পর্যটনস্থলে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জেলা প্রশাসনের
জনসংযোগ, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২৪ জুলাই : পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হলেও, সিন্দুরা এলাকার একাধিক পর্যটনস্থলে লুকিয়ে রয়েছে বিপদের ছায়া। কটিগড়া রাজস্ব চক্রের অন্তর্গত এই স্থানগুলিতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা, দুর্বল পরিকাঠামো এবং জরুরি পরিস্থিতিতে মোকাবিলার মতো কোনও সংঘটিত প্রস্তুতি না থাকার পরিপ্রেক্ষিতে কাছাড় জেলা প্রশাসনের তরফে নেওয়া হয়েছে এক সুদূরপ্রসারী সিদ্ধান্ত। পর্যটনস্থলগুলিতে সাধারণ মানুষের প্রবেশ আপাতত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা কমিশনার মৃদুল যাদব জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৫-এর ৩৪ নম্বর ধারার অধীনে এই নির্দেশ জারি করেছেন। তাঁর মতে, উপযুক্ত সতর্কতা ছাড়াই এই স্থানগুলিতে মানুষের অবাধ চলাচল বড়সড় বিপদের কারণ হতে পারে। প্রশাসনের স্পষ্ট বক্তব্য জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আপস নয়। বুধবার থেকে এই নির্দেশ কার্যকর হয়েছে এবং পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি না দেওয়া পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে।
এই নির্দেশ রূপায়ণে ময়দানে নেমেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দফতরগুলি। কটিগড়ার সার্কল অফিসার, কালাইন ও কটিগড়া ব্লকের বিডিও, স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার, আউটপোস্ট এবং গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীকে কড়াভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে কেউ এই নিষিদ্ধ এলাকার ধারে-কাছে ঘেঁষতে না পারেন। নজরদারির জন্য কালাইন আউটপোস্ট এবং কটিগড়া থানাকে নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। কেউ আইন অমান্য করলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের পাশাপাশি প্রযোজ্য অন্যান্য ধারাতেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তবে এই নিষেধাজ্ঞা কোনও স্থায়ী রূপরেখা নয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতির উন্নতি হলেই পুনরায় খুলে দেওয়া হবে এই পর্যটনস্থলগুলি। সেক্ষেত্রে অবশ্যই গড়ে তোলা হবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বলয়, গঠনমূলক পরিকাঠামো এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় আধুনিক ব্যবস্থা। উন্নয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতরগুলিকে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে এবং প্রতিনিয়ত তা পর্যালোচনাও করা হবে জেলা কমিশনার কার্যালয় থেকে।
নাগরিকদের কাছে প্রশাসনের আবেদন, এই সময়ে সকলেই যেন নিষিদ্ধ স্থানগুলিতে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকেন এবং প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা বজায় রাখেন। কারণ এই পদক্ষেপ একমাত্র তাঁদের সুরক্ষার জন্যই নেওয়া হয়েছে। কাছাড় প্রশাসনের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক বার্তা পর্যটন যেমন উন্নয়নের হাতিয়ার, তেমনি তা যেন নিরাপত্তার সঙ্গে আপস না করে। ভবিষ্যতের একটি সুরক্ষিত ও সুগঠিত পর্যটন ব্যবস্থার লক্ষ্যে এই নিষেধাজ্ঞা হয়ে উঠতে পারে এক মাইলফলক।