মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ২০ নভেম্বর : পাথারকান্দিতে পুলিশের সুকৌশলী অভিযানে বড় সাফল্য ত্রিপুরা থেকে অসম হয়ে পাচারের পথে সোয়া কোটি টাকার গাঁজা বাজেয়াপ্ত করল। গোপন সূত্রের ভিত্তিতে পরিচালিত এক অভিযানে বাজেয়াপ্ত করা হল গাঁজা। উদ্ধার করা হল নকল দু’টি নম্বর প্লেটও। পাচারকাজে ব্যবহৃত গাড়ির চালক অবশ্য অন্ধকারের সুযোগে পালাতে সক্ষম হলেও পুরো চক্রের হদিস পেতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। বুধবার গভীর রাতে ত্রিপুরা থেকে একটি টাটা পাঞ্চ গাড়ি নম্বর টিআর ০৫ এফ ০৪৬৫ অত্যন্ত দ্রুতগতিতে সীমান্ত পেরিয়ে বিকল্প পথে পাথারকান্দি হয়ে অন্যত্র পৌঁছানোর চেষ্টা করে। কাঁঠালতলি এলাকায় ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য করে গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে পুলিশের স্থাপিত ব্যারিকেড ভেঙে সোজা এগিয়ে যায় কুকিতল রোডের দিকে। ঘটনাটি কাঁঠালতলি পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে সোনাখিরা পুলিশকে জানায়। এরপর গাড়িটি সোনাখিরায় প্রবেশ করলে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে চালক গাড়িটি ফেলে অন্ধকারে কোথাও পালিয়ে যায়। পাচারের সন্দেহে পুলিশ তৎক্ষণাৎ ব্যাপক অনুসন্ধানে নামে।
খবর পেয়ে পাথারকান্দি থানার ইন্সপেক্টর ওসি সোমেশ্বর কেওয়ার নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল অভিযান চালায়। রাত প্রায় এগারোটা নাগাদ চাঁদখিরা–পাথারকান্দি রোড এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ওই টাটা পাঞ্চ গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে গাড়িটি নিজেরা জিম্মায় নেয় পুলিশ।বৃহস্পতিবার সকালে গাড়িটির গভীর তল্লাশি চালালে দেখা যায়—গাড়ির ভেতরে বিশেষভাবে তৈরি লুকোনো খোপে গুঁজে রাখা আছে বিভিন্ন প্যাকেটে বিপুল পরিমাণ শুকনো গাঁজা। পরে মোট দুই কুইন্টাল ৫৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে গাড়ির গোপন জায়গা থেকে উদ্ধার হয় দু’টি নকল নম্বর প্লেট, যা পাচারের সময় পরিচয় গোপন রাখার উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করা হয়েছিল বলে পুলিশের অনুমান। পুলিশের এক সূত্র জানায়, উদ্ধারকৃত মাদকের কালোবাজারি মূল্য আনুমানিক সোয়া কোটি টাকারও বেশি হবে। এই পরিমাণ মাদক উদ্ধার স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের জন্য এক বড় সাফল্য। পাচারের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, গাড়িটির মূল মালিক বা পাচারচক্রের মাথা কারা—এসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চালকের খোঁজেও চলছে জোর তল্লাশি। সীমান্ত জুড়ে নজরদারিও আরও বাড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে। মাদকবিরোধী লড়াইয়ে পাথারকান্দি পুলিশ প্রশাসনের এই অভিযান নিঃসন্দেহে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে। স্থানীয় মানুষও পুলিশের এই সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।


