বদরপুরঘাটের গ্যামন সেতু দুই মাসের জন্য বন্ধ, বিকল্প কালাইন-শিলচর সড়ক
জনসংযোগ, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২০ মে : বদরপুরঘাটে বরাক নদীর উপর অবস্থিত ঐতিহাসিক গ্যামন সেতু আগামী ২১ মে থেকে দুই মাসের জন্য যান চলাচলের জন্য সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখা হবে। ভারতের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রকের অধীনস্থ ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড -এর পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সেতুর কাঠামোগত দৃঢ়তা এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। কাছাড় জেলার অন্তর্গত কিলোমিটার ২০০.৮৯৪-এ অবস্থিত এই সেতুটি ৩৫৯.৮০ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং জাতীয় সড়ক নং ৪৪ (বর্তমান ০৬)-এর অংশ। ৩ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই সড়ক পরিসরটি এনএইচআইডিসিএল-কে দায়িত্বভার অর্পণ করে মন্ত্রক। অঞ্চলটির যাতায়াত ব্যবস্থার এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংযোগকারী হিসেবে পরিচিত গ্যামন সেতুটি বহুদিন ধরেই যাত্রী ও মালবাহী গাড়ির চলাচলে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে কাজ করে আসছে।

সেতুর কাঠামোগত মেরামতির জন্য ২১ মে থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত সবধরনের যান চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কন্ট্রোল অব ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যক্ট ২০০২, এর ধারা ৩১ ও ৩৩ মোতাবেক এই নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে। সেতুর টেকসইতা ও ভবিষ্যতের নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এটি একটি সময়োপযোগী ও দূরদর্শী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ভারত সরকারের ‘ভারতমালা’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে এনএইচআইডিসিএল সড়ক পরিকাঠামোর উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। যদিও এই সিদ্ধান্ত কিছুটা সময়ের জন্য স্থানীয় যান চলাচলে প্রভাব ফেলবে, তবুও এটি দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা ও মানোন্নয়নের স্বার্থে এক ইতিবাচক উদ্যোগ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাত্রী ও পরিবহণ সংস্থাগুলির কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, তারা যেন সহযোগিতা করে এবং বিকল্প রুট পরিকল্পনা করে এই সময়কালীন অসুবিধা অতিক্রম করেন।

এনএইচআইডিসিএল-র ব্যবস্থাপনা পরিচালক তথা হাইওয়ে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর কৃষণ কুমার স্বাক্ষরিত এই সরকারি আদেশে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ কর্মসূচির অন্তর্গত পরিকাঠামোগত মানোন্নয়নের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
এ দিকে, সেতু বন্ধ থাকার কারণে শ্রীভূমি, হাইলাকান্দি এবং অন্যান্য রাজ্যগামী সমস্ত যানবাহনকে কালাইন-শিলচর সড়ক দিয়ে চলাচল করবে। এই বিকল্প রুটের মাধ্যমে চলাচল নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যদিও পথটির স্থিতিশীলতা রক্ষার্থে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে, কালাইন-শিলচর সড়কে ৪০ টনের বেশি মোট লোডযুক্ত মালবাহী যানবাহনের চলাচল সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হচ্ছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, বিকল্প রুটের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়লে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকে যায়, তাই এই নিষেধাজ্ঞা অতি জরুরি।