মণিপুরে খুন হাইলাকান্দির চালক, গ্রেফতার পাঁচ

বরাক তরঙ্গ, ১২ ফেব্রুয়ারি : গুয়াহাটি থেকে চূড়াচাঁদপুরগামী ট্রাক চুরিকরে চালক হত্যা। হাইলাকান্দির গাড়িচালক মেঘালয়ে খুন করে গাড়ি চুরি। দীর্ঘ তদন্তের পর পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের অভিযানে গ্রেফতার ছয় অভিযুক্ত। পূর্বপরিকল্পিত প্রতিশোধের জেরে পিশতুতো ভাইয়ের হাতে খুন কাটলিছড়ার ট্রাক চালক বিধান দত্ত।
ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি। বিধান দত্ত নামের হাইলাকান্দির কাটলিছড়ার বাসিন্দা এক ট্রাকচালক গুয়াহাটি থেকে আশোক লেল্যান্ড কোম্পানির এএস ০১ এসসি ১৫৯০ নম্বরের একটি সাদা রঙের ট্রাক নিয়ে মণিপুরের চূড়াচাঁদপুরের উদ্দ্যেশে রওনা দেন। ট্রাকে তেল, সয়াবিন ও মাছ বোঝাই ছিল। কিন্তু শিলচর পৌঁছানোর পর থেকে চালকসহ ট্রাকটির কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবার ও মালিকপক্ষ অনেক চেষ্টা করেও তার খোঁজ না পেয়ে অবশেষে ট্রাকের মালিক থেকে রাম বাহাদুর গুপ্ত ৮ জানুয়ারি গুয়াহাটি শিলচর এসে সদর থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেন। এরপর তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে এসআইটি অভিযানে নামে। আর কচুদরম এলাকার মোহনখাল থেকে প্রথমে তিন অভিযুক্ত ক্রমে বখতিয়ার হুসেন লস্কর (৩২), সঞ্জীব আহমেদ লস্কর (৪২) ও দিলওয়ার হুসেন লস্কর (২৯)-কে গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায়, চুরি হওয়া ট্রাকটি অসম-মিজোরাম সীমান্তের এক নির্জন জায়গায় লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হাইলাকান্দির লালা বাজারের সাহারুল ইসলাম লস্কর (২৭) কাটলিছড়ার আমল পাল-কেও গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে আরও রোমহর্ষক তথ্য।

জানা যায়, আমল পাল ছিলেন নিহত বিধান দত্তের পিসতুতো ভাই। পুরনো আর্থিক বিবাদের জেরে সে সাহারুলের সঙ্গে পরিকল্পনা করে বিধানকে মেঘালয়ের লুমশুলং এর এক নির্জন স্থানে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরে তার মরদেহ কাছের একটি টোল গেটের পাশে ফেলে রেখে ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু শুধু খুনই নয়, পরিকল্পনার আরও এক স্তর ছিল। ট্রাকে থাকা পণ্য ৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে শ্রীকোনার আসেব হুসেন বড়ভূইয়া (২৫) ও কলাইনের তাফিজুল হুসেন বরভূইয়া ওরফে রমিজ (৩১)-এর কাছে বিক্রি করা হয়। পুলিশ এদেরও গ্রেফতার করেছে এবং তদন্তে আরও নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে।অবশেষে গত মঙ্গলবার পুলিশ চুরি হওয়া ট্রাকটি অসম-মিজোরাম সীমান্তের কারকট বাসতি এলাকা থেকে উদ্ধার করে। এই সুপরিকল্পিত অপরাধে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। পুরো ঘটনায় গোটা উপত্যকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।