শিলচরে প্রীতম ভট্টাচার্য স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠান

দীপ দেব, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ৯ ফেব্রুয়ারি : শিলচর কেশব স্মারক সমিতির ব্যবস্থাপনায় “প্রীতম ভট্টাচার্য স্মারক বক্তৃতা শৃঙ্খলার অষ্টম বক্তৃতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রবিবার শিলচর গুরুচরণ কলেজ প্রেক্ষাগৃহে বক্তৃতা অনুষ্ঠানে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের নির্ধারিত ৬টি বিভাগে কৃতী ছাত্রছাত্রীদের পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে অভিনন্দিত করা হয় এবং তাদের আদর্শ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার পক্ষে উৎসাহ প্রদানও করা হয়।  প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ, অতিথিদের বরণ ও উদ্বোধনী সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে এই অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। কেশব স্মারক সমিতির সভাপতি মৃদুলকুমার ধরের সভাপতিত্ব সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত প্রীতম ভট্টাচার্যের বাবা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তথা আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক শঙ্কর ভট্টাচার্য ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের দক্ষিণ অসম প্রান্তের প্রান্ত সংঘচালক জোৎস্নাময় চক্রবর্তী।অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের বরিষ্ঠ প্রচারক শশিকান্ত চৌথাইওয়ালে, প্রান্ত প্রচারক গৌরাঙ্গ রায়, প্রান্ত কার্যবাহ সুভাষচন্দ্র নাথ, প্রান্ত কার্যকারিনীর সদস্য কৌণিশ চক্রবর্তী, শিলচর নগর সংঘচালক প্রণব পাল চৌধুরী, বিধায়ক মিহিরকান্তি সোম, গুরুচরণ কলেজের অধ্যক্ষ বিভাষ দেব, অধ্যাপক নিরঞ্জন রায়, সমাজকর্মী কণাদ পুরকায়স্থ প্রমুখ।

শিলচরে প্রীতম ভট্টাচার্য স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠান

বিষয় ভিত্তিক স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন কলকাতা থেকে আগত বিশিষ্ট বক্তা, সামুদ্রিক প্র-কৌশলী সপ্তর্ষি বসু । “বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র বিরোধী বিমর্শ ও তার মায়াজাল”- এই বিষয়ের উপর প্রাসঙ্গিক বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন মূলত সমাজের মানুষের চারিত্রিক ও নৈতিক স্খলনের জন্যই নানারূপ বিমর্শের তৈরি হয়েছে এবং আজ তা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে। উদাহরণ স্বরূপ মডার্ন লিভারেলাইজেশন, লেফট্ লিভারের বিমর্ষ যার উদ্দেশ্য হচ্ছে রাষ্ট্রের অস্তিত্বকে সরাসরি অস্বীকার করা এবং একবিশ্ব এক শাসন ব্যবস্থা, এক অর্থ ব্যবস্থা কায়েম করা। এটা স্বভাবতই ফান্ডামেন্টালিজমের জন্ম দেয়। এর সঙ্গে ভয়ঙ্করভাবে যুক্ত হয়েছে আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গুলির বিরুদ্ধে বিমর্শ। এছাড়া মধ্য প্রাচ্য থেকে আমদানি হয়েছে মুসলিম টেররিজম, আছে রেইন অব টেরর, এন্টি স্টেট রিভলিউশন, রাষ্ট্রহীন সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, ওয়ান আইডলজিক্যাল স্টেট – যেখানে আছে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, ক্যালচারাল লিবারেলিজম ইত্যাদি ছাড়াও ইতিহাসে আছে নানা ধরনের বিমর্শ। তিনি বলেন, আমাদের এখন সময় এসেছে স্ব-রাষ্ট্রের পক্ষে ইতিবাচক বিমর্শ তৈরি করতে হবে, যেখানে থাকবে-ন্যাশন ফাষ্ট অর্থাৎ রাষ্ট্রের প্রাধান্য প্রথম। তিনি আরও বলেন, বিচার ধারার লড়াই তরবারি দিয়ে হবে না, বিচার ধারার মাধ্যমে লড়তে হবে।

শিলচরে প্রীতম ভট্টাচার্য স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠান

প্রয়াত প্রীতম ভট্টাচার্যের বাবা শঙ্কর ভট্টাচার্য বক্তব্যে বলেন, ২০১৩ সালে পিতা শঙ্কর ভট্টাচার্য উদ্যোগে ও কেশব স্মারক সমিতির তত্ত্বাবধানে প্রয়াত প্রীতম ভট্টাচার্যের নামে একটি স্মৃতি তহবিল গঠন করা হয়। এতে করপাস ফান্ডে দুটি পর্যায়ে মোট ২০ লক্ষ টাকা জমা রাখা হয়। এই অর্থের সুদ দিয়ে দুস্থ ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা, গরীর লোকদের চিকিৎসা, অসহায় লোকদের যথাসম্ভব সাহায্য ইত্যাদি করা হয়। তাছাড়া বিভিন্ন বিভাগে মেধাবী শিক্ষার্থীদের এর মাধ্যমে প্রতিবছর পুরস্কৃত করা হয়। এইভাবে বিগত ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত কয়েক লক্ষ টাকা তহবিল থেকে সহায়তা করা হয়েছে। পরিশেষে কেশব স্মারক সমিতির সম্পাদক বিজন দেব ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।

শিলচরে প্রীতম ভট্টাচার্য স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠান
শিলচরে প্রীতম ভট্টাচার্য স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠান

Author

Spread the News