আজ থেকে কাছাড় সহ দশটি জেলায় গুণোৎসব

জনসংযোগ, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ৪ ফেব্রুয়ারি : শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের শেখার দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাছাড় জেলা প্রশাসন এবার আরও সুসংগঠিত ও ফলপ্রসূ উদ্যোগ নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদবের নেতৃত্বে, কাছাড় জেলা প্রশাসন ও অসম সরকারের অন্যতম বৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা মূল্যায়ন কর্মসূচি গুণোৎসব ২০২৫ সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। শিক্ষার মান উন্নত করতে এই কর্মসূচি রাজ্যের ৩৫টি জেলায় ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত হবে এবং এর চূড়ান্ত মূল্যায়ন পর্ব শুরু হবে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে।

এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো বিদ্যালয়গুলোর স্ব-মূল্যায়নের পাশাপাশি বাহ্যিক মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার গুণগত মানকে আরও উচ্চতর পর্যায়ে উন্নীত করা। ৫-৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাছাড়, ডিব্রুগড়, নলবাড়িসহ ১০টি জেলায় একযোগে বাহ্যিক মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। কাছাড় জেলায় ২,১৭৫টি বিদ্যালয় এবং ২.৩৪ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী এই বিশাল কর্মসূচির আওতায় আসবে। শিক্ষার মানোন্নয়নে নিরপেক্ষ ও কার্যকর মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই ৫৫০ জন বাহ্যিক মূল্যায়কের মধ্যে ৪৪৪ জনকে হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জ জেলা থেকে চূড়ান্ত করা হয়েছে, এবং বাকি শূন্যপদ দ্রুত পূরণের লক্ষ্যে সক্রিয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

আজ থেকে কাছাড় সহ দশটি জেলায় গুণোৎসব

উল্লেখ্য, গুণোৎসবের আগের সংস্করণগুলোতে কাছাড় জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অগ্রগতি লক্ষণীয় ছিল। ২০২৩ সালে যেখানে মাত্র ৩৪.৩৮ শতাংশ বিদ্যালয় ‘এ’ গ্রেড অর্জন করেছিল, ২০২৪ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৪৪.৫৪ শতাংশে পৌঁছায়। এই ধারাবাহিক উন্নতির ধারা বজায় রাখতে গুণোৎসব ২০২৫ আরও উচ্চমানের শিক্ষাগত মূল্যায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব বলেন, “গুণোৎসব কেবল বিদ্যালয়গুলোর মূল্যায়ন নয়, এটি শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”

আজ থেকে কাছাড় সহ দশটি জেলায় গুণোৎসব

এই বছরের গুণোৎসবে আধুনিক প্রযুক্তি ও নতুন উদ্যোগের সংযোজন শিক্ষার মূল্যায়ন ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর ও স্বচ্ছ করে তুলবে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ও মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে, যা বিদ্যালয়গুলোর তথ্য দ্রুত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণে সাহায্য করবে। শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্মের মান নির্ধারণ এবার প্রথমবারের মতো মূল্যায়নের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নির্দেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শিক্ষাক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে “স্বচ্ছতা পুরস্কার” চালু করা হয়েছে, যেখানে সবচেয়ে নিরপেক্ষ ও কার্যকর মূল্যায়ন পরিচালিত জেলাগুলোকে বিশেষ স্বীকৃতি প্রদান করা হবে। এছাড়াও, আগের মূল্যায়ন রিপোর্টের সুপারিশ বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যাতে পূর্ববর্তী ত্রুটিগুলো সংশোধন করে শিক্ষার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়।

কাছাড় জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যেই নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, যার মাধ্যমে শিক্ষার গুণগত মান আরও উন্নত হবে এবং বিদ্যালয়গুলোর সামগ্রিক উৎকর্ষ নিশ্চিত করা যাবে। গুণোৎসব ২০২৫ শুধুমাত্র একটি মূল্যায়ন কর্মসূচি নয়, এটি শিক্ষার এক নতুন নবজাগরণ, যা শিক্ষাব্যবস্থাকে আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর এবং কার্যকর করে তুলবে। শিক্ষকদের অনুপ্রেরণা, শিক্ষার্থীদের উদ্দীপনা ও প্রশাসনের নিষ্ঠার সংমিশ্রণে কাছাড় জেলা এক নতুন শিক্ষাক্ষেত্রের দিগন্ত উন্মোচনের পথে এগিয়ে চলেছে, যেখানে প্রতিটি শিশুর মানসম্মত শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত হবে।

Author

Spread the News