আয়নাখালে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, ই-রিকশা ও রেল-কারের সংঘর্ষে মৃত্যু চালকের

এবি লস্কর, লালা।
বরাক তরঙ্গ, ৩০ আগস্ট : ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটল হাইলাকান্দির আয়না খালে। উন্মুক্ত রেল ক্রসিঙে রেলের উত্তর পূর্ব রেলের ওএইচই ইন্সপেকশন কারের (নং-২২০০০৪) সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারালেন এক ই-রিকশা চালক। শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ হাইলাকান্দি থেকে লালা আসার পথে আয়নাখাল রেল ক্রসিঙে ই-রিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাট ঘটে রেল কারের। রেল-কারের ধাক্কায় নম্বর বিহীন ই-রিকশাটি প্রায় ৫০০ মিটার পর্যন্ত গড়িয়ে যায়। এতে দুজন যাত্রী ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও চালকের হাত-পা টুকরো টুকরো হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। হতভাগ্য চালক লালার ধনীপুর গ্রামের বিলাল উদ্দিন  (৩৫)। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা গুরুতর জখম অবস্থায় হাইলাকান্দি সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার সময় রেল গেট খোলা ছিল বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ। জানা গেছে, রেল গেটম্যান নেশায় এতটা আসক্ত অবস্থায় ছিলেন যে রেল-কার আসার ব্যাপারে কিছুই বুঝতে পারেননি। তাকে লক্ষীনগর পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই স্থানীয় মানুষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে লালা থানার ওসি পল হ্লিমসাং দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। খবর পেয়ে বদরপুর থেকে ছুটে আসে জিআরপি বাহিনী। লালার সার্কল অফিসার ভাস্করজ্যোতি তালুকদারের উপস্থিতিতে নিহত বিলাল উদ্দিনের মৃতদেহ উদ্ধার করে হাইলাকান্দি সিভিল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।

আয়নাখালে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, ই-রিকশা ও রেল-কারের সংঘর্ষে মৃত্যু চালকের

দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বিক্ষোব্ধ মানুষ হাইলাকান্দি সিভিল হাসপাতালে জমায়েত হয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানান। তারা রেল গেটের রক্ষীর কর্তব্যে অবহেলার জন্য মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বলে দায়ী করে তাকে গ্রেফতার এবং চাকরি থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান। পরিবারের এক মাত্র উপার্জনকারী বিলাল উদ্দিনের পরিবারের একজনকে রেলে চাকরি এবং বিপন্ন পরিবারকে সরকারি আর্থিক সাহায্যের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্তর। দাবি পূরণ না হলে মরদেহ পরিবার সমঝে নেবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। পরে রেলের অ্য়ারিয়া ম্যানেজার আকাশ বার্মা উপস্থিত হন। তিনি লালা থানার ওসি পল হ্লিমসাং এবং সার্কল অফিসার ভাস্করজ্যোতি তালুকদারের সামনে বিক্ষুব্ধ জনতার দাবি মেনে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হন। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি পঞ্চাশ হাজার টাকা বিলাল উদ্দিনের বাবার হাতে তুলে দেন। তিন চার দিন পরে বাকি সাড়ে চার লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়া পরিবারের একজনের চাকরির বিষয়টি তিনি উপর মহলের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। এরপর বিলাল উদ্দিনের জানাজার ব্যবস্থা করা হয়।

আয়নাখালে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, ই-রিকশা ও রেল-কারের সংঘর্ষে মৃত্যু চালকের
আয়নাখালে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, ই-রিকশা ও রেল-কারের সংঘর্ষে মৃত্যু চালকের

Author

Spread the News