রাজ্যের ৯৭৯টি গ্রাম বন্যার কবলে, মৃত্যু বেড়ে ৪২

বরাক তরঙ্গ, ১৯ জুন : কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের হিসেবে অনুযায়ী জুন মাসের ১ তারিখ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত অসমে স্বাভাবিক থেকে ২৮ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে রাজ্যের ১৯ জেলায় প্রায় তিন লক্ষের কাছাকাছি লোক বন্যায় আক্রান্ত। এর মধ্যে সবথেকে খারাপ অবস্থা করিমগঞ্জ জেলার, সেখানে ২ লক্ষ ৪০ হাজারের বেশি লোক বন্যায় আক্রান্ত। বুধবার সকালে করিমগঞ্জে ভূমিধসে পাঁচ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে, এনিয়ে এবছর বন্যা ভূমিধস এবং ঝরে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২-য়ে। এ দিকে বরাক উপত্যকার তিন জেলা সহ রাজ্যের কামরূপ, দক্ষিণ শালমারা, গোয়ালপাড়া, নগাঁও, বঙাইগাঁও, লখিমপুর, হোজাই, দরং, নলবাড়ি, উদালগুড়ি, তামুলপুর, বরপেটা, বাকসা, বজালি এবং শোণিতপুরের বিভিন্ন এলাকা বন্যায় আক্রান্ত।

রাজ্যের ৯৭৯টি গ্রাম বন্যার কবলে রয়েছে এবং ৩৩২৬.৩১ হেক্টর কৃষিজমি জলের তলায় রয়েছে। এতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে কৃষি সামগ্রী, যার প্রভাব পড়বে শাক সবজির দ্রব্যমূল্যে। কৃষকরা জানিয়েছেন, প্রথম দফায় বন্যায় তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং এক মাসের মাথায় ফের বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। গত ১৮ দিন মিজোরামে বৃষ্টিপাত কম হলেও মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই রাজ্যে ৮৭ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে করিমগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতিতে। গ্রামাঞ্চল ছাড়াও রাজ্যের প্রধান দুই শহর শিলচর এবং গুয়াহাটিতে শহুরে বন্যা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিলচর শহর। সঙ্গে করিমগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকা বন্যার কবলে রয়েছে। কপিলী এবং কুশিয়ারার জল উপচে পড়ে বিভিন্ন জায়গা প্লাবিত করেছে।

বর্তমানে যে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছিস সেটাকে দ্বিতীয় ওয়েব (ধাক্কা) হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে সরকারি বিভাগ। প্রথম ওয়েব শুরু হয়েছিল ২৮ মে এবং সেই দিন থেকে শুরু হয় মৃত্যু। সরকারি হিসেব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত রাজ্যে ৪২ জন ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন, এর মধ্যে শুধুমাত্র বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। বন্যার ফলে রাজ্যের ১২ হাজারের বেশি লোক শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে ৯৭৮৮ জন করিমগঞ্জ জেলার। রাজ্যের ৯ জেলায় এখন পর্যন্ত এক ১০৫টি গান শিবির গড়ে তোলা হয়েছে এবং সরকারের তরফে সেখানে খাদ্য, পানীয়জল সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

Author

Spread the News