মুসলিম ভয় দেখিয়ে ভোট আদায় বিজেপির অন্যতম নির্বাচনী হাতিয়ার : বিডিএফ
বরাক তরঙ্গ, ১১ ডিসেম্বর : আসাম চুক্তির ৬ নং ধারার বৈধতা নিয়ে উচ্চতম ন্যায়ালয়ে শুনানি চলাকালীন আসাম সম্মিলিত মহাসংঘের নিয়োজিত আইনজীবী বলেছেন যে অবৈধ প্রব্রজন তথা জন্মহারে আধিক্যের জন্য আসামে মুসলিম জনসংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে ২০৪০ সালের মধ্যে এই রাজ্যে হিন্দুরা সংখ্যালঘুতে পরিণত হবেন। এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন রাজ্যপাল কে পি সিনহার রিপোর্টের কথা আবার উল্লেখ করা হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে বাদী পক্ষের বিরুদ্ধে সওয়াল করলেই এই যুক্তিকে পূর্ণ সমর্থন করেছেন কেন্দ্রীয় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। এই বিষয়ে এবার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
সোমবার বিডিএফ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, বর্তমানে সারা ভারতে মুসলমান জনসংখ্যা ১৪ শতাংশ, অসমে মুসলিম জনসংখ্যা ৩০ শতাংশ মাত্র। কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী মুসলমানদের মধ্যে জন্মহার কমেছে। জনজাতিদের ক্ষেত্রে জন্মহার সর্বাধিক। তারপরও এইসব অমূলক বক্তব্য রাখা হচ্ছে এবং কেন্দ্র সরকারের প্রতিনিধি তা সমর্থনও করছেন। তিনি বলেন, প্রতিবার নির্বাচনের প্রাক্কালে এই ভয় দেখিয়ে হিন্দুদের ভোট আদায় বিজেপির অন্যতম নির্বাচনী হাতিয়ার। এবারও সেই একই প্রয়াস চলছে।
তিনি বলেন, কেপি সিনহার যে রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে প্রতিদিন সীমান্ত পেরিয়ে অসংখ্য বাংলাদেশি অসমে ঢুকছে তা যদি সত্যি হয়ে থাকে তবে এনআরসি প্রক্রিয়ায় তাদের শনাক্ত করা গেল না কেন ? তাঁরা কি উবে গেলেন ? প্রদীপবাবু বলেন, এসব অপপ্রচার চালিয়ে জনগনকে বোকা বানানোর দিন শেষ। এই রাজ্যের হিন্দুরা, বিশেষতঃ বাঙালি হিন্দুদের এই সরকারের আমলে যে অবস্থা আরও শোচনীয় হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
প্রদীপ দত্তরায় এদিন আরও বলেন,, যে বিজেপি সরকার যদি এতই হিন্দু দরদী হয়ে থাকে তবে কেন রাষ্ট্রপতির সাক্ষর হবার পরও এতদিন ধরে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল কার্যকর করতে অক্ষম ? প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি স্বত্ত্বেও ডিটেনশন ক্যাম্প ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেবার বদলে কেন নতুন করে ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে, কেনই বা সেখানে ২০০০ বাঙালি হিন্দুকে আটকে রাখা হয়েছে ? কেন এনআরসি প্রক্রিয়া শেষ করে ১০ লক্ষ হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে না, কেন তাঁদের আধার কার্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে ? কেন বাঙালি হিন্দু প্রার্থীদের সরকারি নিয়োগে বঞ্চনা করা হচ্ছে ? তিনি বলেন, এই সরকার আসলে হিন্দু নয় নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ নিয়ে ব্যাস্ত। তাই মেকী রাষ্ট্রবাদের আড়ালে জাতিয়তাবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নই রাজ্যের বর্তমান বিজেপি সরকারের অন্যতম উদ্দেশ্য। তিনি বলেন এর জবাব এই সরকারকে ভোটের মাধ্যমে পেতেই হবে, এটা নিশ্চিত।