পৃথকীকরণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকপত্র বিডিএফের
বরাক তরঙ্গ, ২৮ নভেম্বর : বরাকের বিভিন্ন জ্বলন্ত সমস্যা সমাধানের জন্য গত দু’বছর ধরে রাজ্য সরকারের কাছে বারবার আবেদন, নিবেদন এবং বিভিন্ন প্রতিবাদী কর্মসূচি নেবার পরও সরকারের পক্ষ থেকে কোন ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় বরাক পৃথকীকরণের ডাক দিয়েছে বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।আজ এই ব্যাপারে সমস্ত যুক্তি তুলে ধরে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরে স্মারকপত্র জমা দিল বিডিএফ এর দশ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল।
পরে এই ব্যাপারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিডিএফ মিডিয়া সেলের মুখ্য আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, অসমের প্রান্তিক, অবহেলিত এক জনপদের প্রকৃত সমস্যা সম্বন্ধে কেন্দ্রীয় সরকারকে যথাযথ অবহিত করতেই তাঁদের পক্ষ থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাস্ট্র। তাই গণতান্ত্রিক ভাবে বরাকের জনগণের দুঃখ দুর্দশা, বঞ্চনা, বৈষম্য এর কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাস্ট্র মন্ত্রীকে অবহিত করার অধিকার সংবিধান স্বীকৃত। সেই উদ্দেশ্যেই তাঁদের এই দিল্লি সফর।
তিনি বলেন তাঁদের এই স্মারক লিপিতে তাঁরা স্বাধীনতার পর থেকেই বরাক পৃথকীকরণের দাবিতে সংঘটিত বিভিন্ন আন্দোলনের কথা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছেন, তুলে ধরছেন আসামে বাঙালি জনগোষ্ঠী তথা বাঙলা ভাষার উপর ক্রমাগত সরকারি অবজ্ঞা, অবহেলার ইতিহাস।
তিনি বলেন, ডিটেনশন ক্যাম্পে যেভাবে বাঙালি হিন্দুরা বন্দি রয়েছেন, বরাকের যেসব সরকারি চাকরি প্রার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন, যেভাবে কাগজকল সহ বরাকের বিভিন্ন বৃহৎ শিল্পদ্যোগকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যেভাবে বরাকের যোগাযোগ ব্যাবস্থা, নাগরিক সুবিধা পঙ্গু হয়ে রয়েছে সেই সমস্ত কথা তাঁরা তাঁদের স্মারকলিপিতে তুলে ধরেছেন। এছাড়া শিলচর সৌরাষ্ট্র মহাসড়কের ডিমেতালে কাজ,মাল্টি মডেল লজিস্টিক পার্কের কাজ শুরু না হওয়া, বরাকে হাইকোর্টের শাখা স্থাপনের ব্যাপারে সরকারি অনীহা, বরাকের পর্যটনের উন্নয়নে অবহেলা, চন্দ্রনাথপূর লঙ্কা বিকল্প রেলপথের তৈরিতে অনীহা ইত্যাদি সমস্ত সমস্যার কথা তাঁরা সবিস্তারে এই স্মারকলিপির মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছেন।
জয়দীপ আরো বলেন, আগামীকাল প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া অর্থাৎ দিল্লি প্রেস ক্লাবে তাঁরা তাদের পৃথকীকরণ তথা পূর্বাচল রাজ্যের দাবির সপক্ষে সমস্ত যুক্তি দিল্লি তথা আপামর ভারতবাসীর কাছে তুলে ধরবেন। তিনি বলেন, তাঁরা আশা করছেন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তাঁদের দাবিকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবেন এবং অনতিবিলম্বে এই ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেবেন।
বিডিএফ এর এই প্রতিনিধি দলে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় সহ হৃষীকেশ দে,খাইদেম কান্ত সিং, আকমল হোসেন বরভূইয়া, নির্মল বর্মন, যুবফ্রন্টের মুখ্য আহ্বায়ক কল্পার্ণব গুপ্ত, মিনহাজ উদ্দিন লস্কর, প্রমোদ শ্রীবাস্তব, রাজু সিনহা প্রমুখ।বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে হৃষীকেশ দে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন।