পশ্চিম কার্বিতে পরিস্থিতি ভয়াবহ, জীবন্ত দগ্ধ প্রতিবন্ধী বাঙালি যুবক, আইজিপি-সহ আহত ৩৯

বিশেষ প্রতিবেদক, হাফলং।
বরাক তরঙ্গ, ২৩ ডিসেম্বর : পশ্চিম কার্বির পরিস্থিতি ভয়াবহ। ‘বহিরাগতদের’ উচ্ছেদের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন এখন চূড়ান্ত হিংসাত্মক রূপ নিয়েছে এবং মঙ্গলবার এক প্রতিবন্ধী বাঙালি যুবককে আন্দোলনকারীরা জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে। এছাড়া পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে এক প্রতিবাদকারী এবং স্থানীয়দের আক্রমণে গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন আইজিপি অখিলেশ কুমার সিং সহ অন্তত ৩৮ জন পুলিশ এবং সুরক্ষা বাহিনীর লোকেরা। পরিস্থিতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে এবং মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অতিরিক্ত বাহিনী আনা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খেরণি বাজার সংলগ্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীদের একটি দল একটি দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয়। সেই সময় দোকানের ভেতরেই আটকে পড়েন ২৫ বছরের যুবক সুরজ দে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে তিনি পালাতে পারেননি। আগুন নেভানোর পরে দমকল কর্মীরা তাঁর দগ্ধ দেহ উদ্ধার করেন। যদিও পুলিশ প্রথমে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি অনুযায়ী ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

একই দিনে পুলিশি গুলিতে আহত হয়ে মৃত্যু হয় আরেক স্থানীয় বাসিন্দা চিংথি তিমুং-এর। মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

ডিজিপি হরমিত সিং বুধবার সন্ধ্যায় জানান, সংঘর্ষে অন্তত ৩৮ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে এক জন আইপিএস অফিসারও রয়েছেন। তিনি বলেন, “দুই দিক থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা চালানো হয়। পাথর, তীর ও স্থানীয়ভাবে তৈরি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। বহু পুলিশ কর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন।’ সিং নিজে কোনও নিরাপত্তা ছাড়াই ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু আলোচনার পরেই পরিস্থিতি ফের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তিনি বলেন, ‘আমি যখন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছিলাম, তখনই কাছাকাছি একটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আপস করা যায় না।’ পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস এবং নিয়ন্ত্রিত গুলিবর্ষণের আশ্রয় নেয়। খেরণি ও আশপাশের ডংকামোকাম এলাকায় কার্যত কার্ফু-সদৃশ পরিস্থিতি তৈরি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *