মোহাম্মদ জনি, শ্রীভূমি।
বরাক তরঙ্গ, ১৯ ডিসেম্বর : জিপি সভাপতি ও সদস্যদের না জানিয়ে গোপনে সভা করা নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠল শ্রীভূমি জেলার সুপ্রাকান্দি জিপি কার্যালয়। প্রতিবাদী মহিলারদের হাতে ঘটে গেল এক অবাঞ্ছিত কাণ্ডও। শুক্রবার এমন অভিযোগে কার্যালয় উত্তাল করে তুলেন স্থানীয় পুরুষ ও মহিলারা। একসময় মহিলারা জিপি সচিবের একতরফা সিদ্ধান্তে উত্তেজিত উঠেন। জিপি সচিব মনোজকুমার দাসকে কার্যালয় থেকে বের করে নিয়ে আসেন ক্ষুব্ধ জনতা। বের করে আনার সময় রাস্তার পাশে থাকা একটি খালে সচিবকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় উত্তেজিত এক ব্যক্তি। এর সচিব খাল থেকে উঠার সময় এক বয়স্ক ব্যক্তি তার ওপর চড়াও হলে সচিব ওই ব্যক্তিকে খালে ফেলে দেন। এ কাণ্ড দেখে আরেক যুবক ফের সচিবকে খালে ফেলে কিছুটা দিয়ে দেন। পুরো ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চায়েত মন্ত্রী রঞ্জিতকুমার দাসের নির্দেশে কিছুদিন আগেই জিপি সচিব মনোজ কুমার দাসকে বদলি করা হয়। তাঁর পরিবর্তে নতুন সচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় পল্লব চক্রবর্তীকে। এই সিদ্ধান্তে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে পেয়েছিলেন পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ। কিন্তু আজ হঠাৎ করেই পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। প্রাক্তন সচিব মনোজকুমার দাস সুপ্রাকান্দি গ্রাম পঞ্চায়েতে পুনর্বহালের একটি সরকারি নির্দেশ নিয়ে কার্যালয়ে হাজির হন। তাঁকে আবার দায়িত্ব গ্রহণ করতে দেখেই পঞ্চায়েত সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়, যা মুহূর্তের মধ্যেই রূপ নেয় বিক্ষোভে।

উল্লেখ্য, একটি মদের দোকানের ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ দেওয়াকে কেন্দ্র করে আগেই জিপি সভানেত্রী কল্পনা রায়ের সঙ্গে সচিব মনোজকুমার দাসের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। সেই সময় সচিবের বিরুদ্ধে জেলা কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগও দাখিল করা হয়। তবে অভিযোগ জানানো হলেও প্রশাসনিক স্তরে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ বাড়তে থাকে। পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে পঞ্চায়েত মন্ত্রী রঞ্জিত দাসের হস্তক্ষেপে অবশেষে মনোজ কুমার দাসকে বদলি করা হয় এবং দায়িত্ব দেওয়া হয় সচিব পল্লব চক্রবর্তীকে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, মাত্র এক দিনের মধ্যেই পল্লব চক্রবর্তীকে সরিয়ে পুনরায় মনোজ কুমার দাসকে বহাল করার নির্দেশ জারি হয়। এই আকস্মিক সিদ্ধান্ত কোনওভাবেই মেনে নিতে পারেননি পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা বজায় না রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ মনোজকুমার দাস নিজ উদ্যোগে পঞ্চায়েত কার্যালয়ে সভা ডাকার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি চরম আকার নেয়।


