৫ ডিসেম্বর : লদেশের বৃহত্তম বিমান সংস্থা ইন্ডিগো (IndiGo)-তে নজিরবিহীন ‘অপারেশনাল সংকট’ (operational crisis) সামাল দিতে শুক্রবার তড়িঘড়ি ‘ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশনস’ (FDTL)-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রত্যাহার করে নিল ভারতের বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা, ডিরেক্টরেট-জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন (DGCA)। গত কয়েক দিনে ইন্ডিগোর ১৩০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিলের জেরে সৃষ্ট চরম বিশৃঙ্খলার পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হল।
কয়েকদিন ধরে দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে ২২০০ টিরও বেশি ফ্লাইট পরিচালনাকারী ইন্ডিগোর পরিষেবা কার্যত বিপর্যস্ত। এই সংকটের মূল কারণ নতুন FDTL নিয়মাবলীর অধীনে পর্যাপ্ত সংখ্যক পাইলটের অভাব। ইন্ডিগো বুধবার স্বীকার করেছে যে, তারা নতুন নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পাইলটের সংখ্যা নির্ধারণে ভুল করেছিল। উল্লেখ্য, এই নতুন নিয়মে পাইলটদের সাপ্তাহিক বিশ্রামকাল ৩৬ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ৪৮ ঘণ্টা করা হয়েছিল, যার প্রথম পর্ব কার্যকর হয় ১ জুলাই এবং দ্বিতীয় পর্ব ১ নভেম্বর।
ফলস্বরূপ, শুধুমাত্র বৃহস্পতিবারেই প্রায় ৫৫০টি ফ্লাইট বাতিল করতে হয় ইন্ডিগোকে—যা তাদের ইতিহাসে এক দিনে সর্বোচ্চ ফ্লাইট বাতিলের রেকর্ড। দিল্লি বিমানবন্দর শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত ইন্ডিগোর সব বহির্গামী ফ্লাইট বাতিল করে দেয়। চেন্নাই থেকেও একাধিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
এই অপারেশনাল অচলাবস্থা কাটানোর জন্য ডিজিসিএ নজিরবিহীন দ্রুততায় FDTL নিয়মে পরিবর্তন আনল। এক বিবৃতিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানায়, “অপারেশনাল বিঘ্ন এবং বিভিন্ন এয়ারলাইন্স থেকে আসা স্থিতিশীলতা বজায় রাখার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই নিয়মটি পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।”
যে অংশটি প্রত্যাহার করা হয়েছে, তা হল—সাপ্তাহিক বিশ্রামের পরিবর্তে কোনও ছুটি প্রতিস্থাপিত হবে না। এই সংশোধনের অর্থ হল, এখন থেকে কোনও পাইলট যদি ৪৮ ঘণ্টার জন্য অর্জিত ছুটি (Earned Leave) নেন, তবে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ‘সাপ্তাহিক বিশ্রাম’ হিসেবে গণ্য হবে। এর ফলে এয়ারলাইন্সগুলো সহজেই পাইলটদের রোস্টারে সাপ্তাহিক বিশ্রাম এবং ছুটির মধ্যেকার পার্থক্য দূর করতে পারবে। প্রসঙ্গত, গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটি ডিজিসিএ-এর দ্বিতীয় সংশোধনী। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে পাইলটের একটানা বিমান চালানোর সর্বোচ্চ সময়সীমা ১২ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ১৪ ঘণ্টা করা হয়েছিল।


