২৩ নভেম্বর : তেলেঙ্গানায় মাওবাদী আন্দোলন এক বিশাল সাংগঠনিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ল। শনিবার রাজ্যের শীর্ষ কমিটি সদস্য ও ২৫ জন তরুণীসহ মোট ৩৭ জন আত্মগোপনকারী ক্যাডার হায়দ্রাবাদে তেলেঙ্গানার ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ (ডিজিপি) বি শিবাধর রেড্ডির কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।
এই গণ-আত্মসমর্পণ, যা চলতি বছরে এক দিনে হওয়া সবচেয়ে বড় আত্মসমর্পণগুলির মধ্যে অন্যতম, তা নিষিদ্ধ সংগঠনটির ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর ক্রমবর্ধমান চাপ এবং রাজ্যের পুনর্বাসন নীতির সাফল্যের ইঙ্গিত দেয়। গোয়েন্দা-নির্ভর অভিযান এবং কঠোর দমন নীতির ফলেই মাওবাদী শিবির কোণঠাসা হয়ে পড়ছে বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসন।
আত্মসমর্পণকারী গোষ্ঠীর মধ্যে ছিলেন মাওবাদী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ মুখ। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মাওবাদীদের তেলেঙ্গানা রাজ্য কমিটির সদস্য ৪৯ বছর বয়সী কোয়্যাদা সাম্বাইয়া ওরফে আজাদ এবং আপ্পাসি নারায়ণ ওরফে রমেশ। আজাদ প্রায় তিন দশক ধরে এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যা পুরনো নেতৃত্বের একটি বড় অংশের পতনের প্রতীক। এছাড়াও, দণ্ডকারণ্যের স্পেশাল জোনাল কমিটির সদস্য মুচাকি সোমাদা ওরফে এররা-ও আত্মসমর্পণ করেছেন।
আত্মসমর্পণের সময় ক্যাডাররা নিজেদের কাছে থাকা বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্রও পুলিশের হাতে তুলে দেন। উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে, একটি AK-47 অ্যাসল্ট রাইফেল,দুটি SLR (সেল্ফ-লোডিং রাইফেল),চারটি .303 রাইফেল,একটি G3 রাইফেল এবং ৩৪৩ রাউন্ড তাজা গুলি।
আত্মসমর্পণকারী দলের মধ্যে ২৫ জনই ছিলেন মহিলা, যাদের অনেকেরই বয়স ২০-এর কোঠায়। সশস্ত্র সংগ্রাম ছেড়ে আসার কারণ হিসেবে তারা আদর্শগত মোহভঙ্গ, শারীরিক ক্লান্তি এবং সরকারের কল্যাণ ও পুনর্বাসন প্রকল্পগুলির সুবিধা গ্রহণ করার ইচ্ছাকে তুলে ধরেছেন। তরুণ ক্যাডারদের এই দলত্যাগ মাওবাদী সংগঠনের নতুন নিয়োগ এবং ভবিষ্যতের ওপর প্রশ্নচিহ্ন সৃষ্টি করল বলেই মনে করা হচ্ছে।
খবর : উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল।


