হামলায় ৪ জনের মৃত্যু, ঘুমপাড়ানি গুলি করে উদ্ধার হাতি

৪ নভেম্বর : কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকায় বিগত তিন দিন ধরে তান্ডব চালাচ্ছিল ছয়টি হাতির একটি দল। হাতির হামলায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল, আহত হয়েছিলেন একজন বনকর্মী সহ ৫ জন। শুক্রবার এই দলটির ৫ টি হাতিকে জঙ্গলে ফেরত পাঠানো সম্ভব হলেও দলের সবচেয়ে আগ্রাসী হাতিটি ছিল অধরা। সেটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে দড়ি দিয়ে বাঁধা হলেও শুক্রবার রাতে সেটি দড়ি ছিড়ে পালিয়ে যায়। হাতিটিকে জঙ্গলে ফেরাতে দুটি কুনকি হাতিকেও কাজে লাগায় বনদপ্তর। শনিবার দুপুরে মাথাভাঙ্গার উনিশবিশা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সেটিকে আবার ঘুমপাড়ানি গুলি করে ক্রেনের সাহায্যে ট্রাকে তুলে জলদাপাড়ায় নিয়ে যাওয়া হল। ফলে এখন অনেকটাই আতঙ্কমুক্ত হলেন কোচবিহার জেলার বাসিন্দারা।

জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে ৬টি হাতির দল কোচবিহার জেলার দিনহাটার মাতালহাটে ঢুকে পড়ে। দলটি কোন পথ দিয়ে দিনহাটায় এল সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। এর পর হাতির দলটি শুক্রবার ভোর থেকে সিতাই, শিতলকুচি, নিশিগঞ্জ ও মাথাভাঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। মাথাভাঙ্গায় ২ নম্বর ব্লকের পারডুবি গ্রাম পঞ্চায়েতের টাউরিকাটা গ্রামে হাতির হামলায় বুধেশ্বর অধিকারি (৬৫) নামের ১ জনের মৃত্যু হয়, এই এলাকারই ভানুরকুঠিতে হাতির হামলায় আনন্দ প্রামানিক (৬১) মারা যান। হাতির দলটি দুপুর নাগাদ ঘোকসাডাঙ্গায় ঢোকে। সেখাকার বনিকপাড়ার জয়ন্তী সরকার (৪৬) এবং রেখারানী রায় (৬৮) হাতির হামলায় মারা যান। বিভিন্ন গ্রামে হাতির তাণ্ডব চলতে থাকে, আহত হন ৫ জন। দলটিকে জঙ্গলে ফেরত পাঠাতে বনদপ্তর তৎপর হয়ে ওঠে। বিকেলে চারটি হাতি উনিশবিশা হয়ে জাতীয় সড়ক পার হয়ে পাতলাখাওয়া জঙ্গলের ঢুকে পড়ে। অপর দুটি হাতিকে জঙ্গলে ফেরাতে বনকর্মীরা নাজেহাল হয়ে পড়েন। সন্ধ্যায় একটি দাঁতাল পারডুবি থেকে মানসাই নদী অতিক্রম করে মাথাভাঙ্গার দিকে চলে গেলেও কিছুক্ষণ পর ফের রুইডাঙ্গা এলাকায় চলে আসে।

রুইডাঙ্গা থেকে কোচবিহার চা বাগান হয়ে হাতিকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হয়েছে বলে বনকর্মীরা জানান। অপর হাতিটির গতিবিধি কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলেন না বনকর্মীরা। এর পরই সেটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শুক্রবার রাতে ঘুমপাড়ানি গুলি করে হাতিটিকে দড়ি দিয়ে বাঁধা হলেও সেটি দড়ি ছিড়ে পালিয়ে যায়। শনিবার এটিকেই আবার ঘুমপাড়ানি গুলি করে উদ্ধার করা হল। খবর আজকাল অনলাইন।

Author

Spread the News