২০ নভেম্বর : অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় লিবিয়ায় ইঞ্জিনচালিত নৌকায় মাফিয়াদের গুলিতে ৩ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- মাদারীপুর সদর উপজেলার আদিত্যপুর গ্রামের তৈয়ব আলি খানের ছেলে ইমরান খান, রাজৈর উপজেলার দুর্গাবদ্দী গ্রামের ইমারাত তালুকদারের ছেলে মুন্না তালুকদার ও ঘোষলাকান্দি গ্রামের কুদ্দুস শেখের ছেলে বায়েজিত শেখ।
স্বজনেরা জানান, অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে গত ৮ অক্টোবর বাড়ি ছাড়েন ইমরান খান। সরাসরি ইতালি পৌঁছে দেওয়া হবে এমন শর্তে প্রতিবেশী ও মানবপাচারচক্রের সদস্য শিপন খানের সঙ্গে চুক্তি হয় ২২ লক্ষ টাকায়। কিন্তু ইমরানকে লিবিয়ায় আটকে নির্যাতন করে পরিবার থেকে আরো ১৮ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়।
গত ১ নভেম্বর লিবিয়া থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করলে ভূমধ্যসাগরে মাফিয়ার গুলিতে মারা যান ইমরান। শুধু ইমরান নয়, একইভাবে মাফিয়াদের গুলিতে ওইদিন মারা যান মুন্না তালুকদার ও বায়েজিত শেখ। তাদের মরদেহ ফেলে দেয়া হয় সাগরে। ঘটনা জানাজানি হলে ঘরে তালা ঝুলিয়ে লাপাত্তা দালাল চক্রের পরিবারের লোকজন।
তবে দালাল শিপনের এক স্বজন দাবি করেন, এই ঘটনায় শিপন জড়িত নন। জোর করে কারো পাসপোর্ট নেননি তিনি।
অভিযোগ আছে, কয়েক বছর ধরে লিবিয়ায় অবস্থান করছেন শিপন। আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে এলাকার যুবকদের খুব সহজে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখান তিনি। এর আগেও, এমন মৃত্যুর মতো ঘটনা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে অভিযুক্ত।
নিহত ইমরানের বাবা তৈয়ব আলি খান বলেন, ‘‘মাফিয়ারা আমার ছেলেসহ দুইজনকে গুলি করে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।’’
নিহত মুন্না তালুকদারের বাবা ইমারাত তালুকদার বলেন, ‘‘ঋণ করে ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছিলাম। দালাল বলেছিল, কোন সমস্যা হবে না। অথচ আমার ছেলেকে মাফিয়ারা গুলি করে হত্যা করেছে।’’
এ বিষয়ে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গির আলম বলেন, লিবিয়ায় গুলিতে তিন যুবকের মৃত্যুর খবর বিভিন্ন মাধ্যমে পেয়েছি। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। নিহতদের পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
খবর : দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকা ডিজিটাল।


