দুই মাসের সন্তানকে কোলে নিয়ে শিক্ষাদান বিনা পয়সার শিক্ষিকার
১২ জুলাই : এক বিরল দৃশ্য! দুই মাসের সন্তানকে কোলে নিয়ে প্রায় ১০০ জন শিশুকে শিক্ষাদান করছেন বিনা পয়সার শিক্ষিকা! নিজের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই গড়ে তুলেছেন একটা স্কুল। সকাল থেকে শুরু হয়ে যায় স্কুল। স্কুল ছুটির পর শিক্ষিকা শুরু করেন বাড়ির কাজকর্ম। ২০২০ সাল থেকে এভাবেই শিক্ষার আলো সমাজে ছড়িয়ে দিচ্ছেন আদাবাসী গৃহবধূ মালতী মুর্মু। ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার অযোধ্যা পাহাড়ের হিলটপ থেকে ২৫ কিমি দূরে বিচ্ছিন্ন এক গ্রাম জিলিং সেরেং। পাহাড়ের বুকে দাঁড়িয়ে ছোট্ট এই গ্রামে রয়েছে ৯৫টি পরিবার। এই গ্রাম থেকে সরকারি বিদ্যালয়ে বেশ দূরে হওয়ায় শিশুরা স্কুলে যেতে সমস্যায় পড়েন। ২০২০ সালে করোনাকালে লকডাউনদের সময় শিশুরা যখন বই এর পাতা থেকে চোখ সরিয়ে নিয়েছে। তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন গ্রামের এই ছেলে মেয়েদের বিনা পয়সায় পড়াবেন। কেনোনা এই গ্রামের প্রায় সকল প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পড়াশোনা জানেন না। ঢাল ডোল ছাড়াই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন মালতি।

কয়েকজনকে নিয়ে ২০২০ সালে শুরু করেছিলেন। তারপর থেকে ধীরে ধীরে গ্রামের সমস্ত শিশুরা পড়াশোনা করতে শুরু করেন মালতি দিদিমনির কাছে। এই স্কুলেই পড়াশোনা করে দিদিমণির ছেলেও।শিক্ষিকা মালতি দেবীর স্বামী পেশায় কৃষি কাজ করেন। প্রথমদিকে স্বামীর আপত্তি থাকলেও মালতি দেবীর ইচ্ছা শক্তির কাছে স্বামী সহমত পোষণ করেন। তারপর থেকে স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য করতে শুরু করেন স্বামী। এছাড়া কিছু লোক ও এনজিও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

প্রতিকূল পরিবেশকে কাটিয়ে বর্তমানে মালতী দিদিমণি শুধুমাত্র এই গ্রামের গর্ব নয়, দেশের গর্ব। সম্প্রতি তাঁর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়লে কিছু প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
তথ্য : দিল খান। সূত্র : ফেসবুক।
