মেহনতি মানুষের স্বার্থে হাফিজ রশিদের হয়ে প্রচারে নামছে মজুরি শ্রমিক- স্যোসাল হারমনি
প্রদান ১৫ দাবি সম্বলিত সনদ
বরাক তরঙ্গ, ১৩ এপ্রিল : করিমগঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের ইন্ডিয়া জোটের কংগ্রেস প্রার্থী হাফিজ রশিদ আহমদ চৌধুরীকে অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়ন ও ফোরাম ফর স্যোসাল হারমনির সমর্থন জানাল।
দুই সংগঠন তাদের সাংগঠনিক শক্তিকে সংহত করে বিজেপি জোটের বিরুদ্ধে করিমগঞ্জ লোকসভা আসনে ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থী হাফিজ রশিদ আহমদ চৌধুরীর পক্ষে প্রচারে নামছে। নির্বাচনী প্রচারের মাধ্যমে মেহনতি ও বঞ্চিত মানুষের স্থানীয় ও সর্বভারতীয় দাবিসমূহ তুলে ধরার জন্য ও পরবর্তীতে সেগুলো নিয়ে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রার্থীর হাতে তুলে দেওয়া হয় বিভিন্ন দাবি সম্বলিত একটি দাবি সনদও। দাবিগুলো পূরণে জনগণের কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবেন বলে জানিয়েছেন প্রার্থী হাফিজ রশিদ আহমদ চৌধুরী।
শনিবার সংগঠনদ্বয়ের করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি জেলা কমিটির এক প্রতিনিধিদল হাফিজ রশিদ আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হন। এবং দাবিগুলো তুলে ধরেন।
তাঁরা আশাবাদী দাবিগুলোর প্রতি জনগণ সহমত পোষণ করে মেহনতি মানুষের স্বার্থে ইন্ডিয়া জোটের কংগ্রেস প্রার্থী বরিষ্ঠ আইনজীবী হাফিজ রশিদ আহমদ চৌধুরীকে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত করবেন।
১৫ দফা দাবি গুলোর মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ শ্রমিকদের রুজি-রোজগার বিষয়ে এমজিএনরেগা ২০০৫-এর অধীনে জবকার্ড শ্রমিকদের দৈনিক হাজিরা বর্তমান ২৩৮ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৬০০ টাকা করা এবং ১০০ দিনের জায়গায় ২০০ দিনের কাজের নিশ্চয়তা প্রদান, চা-বাগান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আইন অনুযায়ী মজুরি প্রদানের ব্যবস্থা করা, বরাক-ব্রহ্মপুত্রের মজুরি বৈষম্যের বিলোপ ঘটানো, তাছাড়াও লিভিং ওয়েজ প্রদানের জন্য চেষ্টা করা। এয়ারপোর্ট সহ নানাবিধ উন্নয়নের নামে চা-বাগান ধ্বংস করাকে আটকানো ও চা-শিল্প রক্ষা সহ চা-শ্রমিকদের সুরক্ষা প্রদান করা, মিড-ডে মিল, আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহায়িকাদের শ্রমিকের মর্যাদা প্রদান করা ও ন্যূনতম মজুরি আইন সহ তাদেরকে সব ধরনের সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করা। অসমের বিল্ডিং ও অন্যান্য নির্মাণ শ্রমিক কল্যান বোর্ডের (Statutory Board) মাধ্যমে সুবিধা পেতে হয়রানির অবসান ঘটানো। স্বাস্থ্য ভাতা, ছেলেমেয়েদের স্কলারশিপ, গৃহঋণ, পেনশন সহ বিভিন্ন সুবিধা দ্রুত প্রদানের ব্যবস্থা করা, কৃষকদের জন্য স্থানীয় সুপারি বিক্রির প্রতিবন্ধকতা দূর করা সহ সব ধরনের ফসলের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইন প্রণয়ন করা। কৃষক ও শ্রমিকদের উচ্ছেদ প্রতিরোধ করে জমির পাট্টা প্রদান করা। পতঞ্জলি, আদানিদের নামে জমি হস্তান্তর বন্ধ করা। এনআরসিতে বায়োমেট্রিক ডাটা দেওয়ার কারণে বেআইনিভাবে আটকে রাখা ২৭ লক্ষ লোকের আধার তৎক্ষণাৎ ইস্যু করার ব্যবস্থা করা। সকলের নাগরিকত্ব সুনিশ্চিত করা। ভোটাররাই দেশের নাগরিক এই ধারণার পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করা। আইন করে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিধান ফিরিয়ে আনা।
এ ছাড়া সামাজিক সুরক্ষা করা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প ব্যবস্থা সহ শ্রমকোড ও এনপিএস এবং ড্রাইভারদের বিরুদ্ধে কঠোর অমানবিক আইনের ধারা সহ অপ্রয়োজনীয় জটিল নতুন ফৌজদারি ও সাক্ষ্য আইন বাতিল করা ইত্যাদি।
তাঁরা আশাবাদী দাবিগুলোর প্রতি জনগণ সহমত পোষণ করে মেহনতি মানুষের স্বার্থে ইন্ডিয়া জোটের কংগ্রেস প্রার্থী বরিষ্ঠ আইনজীবী হাফিজ রশিদ আহমদ চৌধুরীকে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত করবেন।
প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন নুমান আহমেদ, শিশির দে, টিংকু গুপ্ত, শান্তনু দাস, পারবেজ খসরু লস্কর, কমরুল ইসলাম খান, আব্দুর রৌফ, মজির উদ্দিন, ইসলাম উদ্দিন, সুয়াইবুর রহমান, বাবুলাল দাস, ফজলুর রহমান লস্কর, আব্দুল হক, সুলতান আহমেদ, সুব্রত পাল প্রমুখ।
অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়নের
করিমগঞ্জ জেলা কমিটির সম্পাদক,
শিশির দে বলেন, অসম মজুরি শ্রমিক ইউনিয়ন এবং সহযোগী সংগঠন ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি শ্রমিক-কৃষকের অধিকার তথা নাগরিক ও সাংবিধানিক অধিকার আদায়ে নিরন্তর আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান বিজেপি বা এনডিএ সরকার মেহনতি মানুষের উপর সমস্ত বোঝা চাপিয়ে দিয়ে পুঁজিপতিদের অতি-মুনাফা সুযোগ করে দিচ্ছে। সেই নীতি রূপায়ণের ফলে মেহনতি মানুষের মনে যে ক্ষোভ দানা বাঁধছে তাকে প্রতিহত করতে সাংবিধানিক ও বৈধ অধিকার কেড়ে নিতে উদ্যত হয়েছে এবং দমননীতি চালানোর চেষ্টা করছে এই সরকার। শ্রমিক-কৃষক বিরোধী এবং কর্পোরেট-বান্ধব নীতির জন্যই তাঁরা বিজেপি তথা এনডিএ সরকারের পরাজয় সুনিশ্চিত করতে চাইছেন।