গোলাঘাটের বহু অঞ্চল জলের তলায়, মৃত্যু দুই জনের

বরাক তরঙ্গ, ১৭ সেপ্টেম্বর : গোলাঘাট জেলা বন্যার কবলে পড়েছে। ভদীয়া নদীর জলে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষকে মারাত্মকভাবে ভোগাচ্ছে। হঠাৎ আসা বন্যার জলে ডুবে গেছে ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি। জেলা তথ্য ও জনসংযোগ দপ্তরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নাগাল্যান্ডে ধারাবাহিক ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এবং নিপকোর দৈয়াং জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে জল ছেড়ে দেওয়ার ফলে ধনশিরি ও দৈয়াং নদীসহ এর উপনদীগুলির জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে গোলাঘাট জেলার কয়েকটি এলাকায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। জেলার গোলাঘাট, খুমতাই, মরঙ্গী, সরুপথার ও বোকাখাত—এই মোট ৫টি রাজস্ব সার্কল বন্যায় আক্রান্ত। জানা গেছে, ১০০-রও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং প্রায় ১৩,০১১ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বিভিন্ন এলাকায় জেলা প্রশাসন ২৮টি ত্রাণ শিবির স্থাপন করেছে।

এ পর্যন্ত বন্যায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের পরিবারকে অসম সরকার কর্তৃক ৪ লাখ টাকা এককালীন আর্থিক সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ৮৬৮ জন মানুষ এবং ৩৪৫টি গবাদি পশু উদ্ধার করা হয়েছে।

এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ দল উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলি পরিদর্শন করে মানুষের অবস্থা পর্যালোচনা করছেন। ত্রাণ শিবিরগুলিতে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ও পশুখাদ্যও বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এছাড়া, যে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে নাগরিকদের জেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০৩৭৭৪-২৮০২২২ / ০৩৬৭৪-২৮১৫২৮ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষকে সময়মতো প্রয়োজনীয় সহায়তা, আশ্রয় ও সুবিধা দেওয়া হবে।

খুমতাই কেন্দ্রে বন্যার পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। কেন্দ্রের মরঙ্গী মৌজার ৬টিরও বেশি গ্রাম বর্তমানে জলে ডুবে আছে। গ্রামের রাস্তাগুলি দিয়ে প্রবল স্রোতের সঙ্গে জলে বয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন ধরে অবিরাম বৃষ্টির ফলে ধনশিরি নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

ধনশিরি নদীর তীরবর্তী দুসুতিমুখ, কেন্দ্রুগুড়ির মিঠাম চাপরি, কর্দৈগুড়ি, ন-পমুয়া ইত্যাদি মিলিয়ে ৬টিরও বেশি গ্রাম বর্তমানে প্লাবিত। এ বিষয়ে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “দেড় মাস আগে হওয়া বন্যা থেকে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলাম, কিন্তু আবারও দ্বিতীয় দফায় বন্যার কবলে পড়েছি। প্রশাসন খোঁজখবর নিচ্ছে। এনডিআরএফ ও এসডিআরএফ এসে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। প্রায় ১৫ বিঘা কৃষিজমি বন্যার জলে নষ্ট হয়ে গেছে।”

Spread the News
error: Content is protected !!