বিভিন্ন দাবিতে তিন দিনব্যাপী ধর্মঘট ও কর্মবিরতি এনএইচএম কর্মীদের
বরাক তরঙ্গ, ৩ নভেম্বর : সারা রাজ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাছাড় জেলায়ও সোমবার থেকে তিন দিনের অবস্থান ধর্মঘট ও কর্মবিরতি শুরু করলেন এনএইচএমের সব স্তরের কর্মচারীরা। চিকিৎসক, নার্স, প্যারা মেডিক্যাল স্টাস ও ম্যানেজমেন্ট কর্মচারীরা সমকাজের সমবেতন সহ বিভিন্ন দাবিতে সকাল থেকেই শিলচর মেডিক্যাল কলেজ, সিভিল হাসপাতাল সহ বিভিন্ন হাসপাতালে ধর্মঘট শুরু করেন।
এনএইচএম এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন (এনইএ) ও সারা আসাম হেল্থ অ্যান্ড টেকনিক্যাল ওয়েলফেয়ার (আটোয়া) অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ আহ্বানে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও সতীন্দ্রমোহন দেব অসামরিক হাসপাতালের সামনে জেলাস্তরে ধর্মঘট শুরু করেন। জেলায় রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য মিশনের প্রায় ৯০০ কর্মচারী রয়েছেন। প্রত্যেকেই এই তিন দিন কর্মস্থল ছেড়ে জেলায় এসে তাঁদের ন্যায্য দাবি উত্থাপন করেন। এই তিন দিন কোনও জরুরি পরিষেবাও দেবেন না এনএইচএমের কর্মচারীরা। কেবলমাত্র যেসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজনও রেগুলার কর্মী নেই, একমাত্র সেখানেই জরুরি পরিষেবা দেবে এনএইচএম।
প্রসঙ্গত, আন্দোলনের ধাপ হিসেবে গত ২৯ অক্টোবর রাজ্যস্তরে কালো ব্যাজ ধারণ করে দিসপুরে গিয়ে প্রায় ১০ হাজার কর্মী সমবেত হয়ে একদিনের কর্মবিরতি ও অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। এদিন যারা দিসপুরে যাননি তাঁরা নিজ কার্যালয় ও জেলাস্তরে শিলচর সিভিল হাসপাতালে কালো ব্যাজ পরিধান করে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন। আন্দোলনের অঙ্গ হিসেবে গত ২৯ অক্টোবর থেকে এনএইচএমের কর্মচারীরা কোনও ধরনের অনলাইন এবং অফলাইন রিপোর্টিং করছেন না। এই কর্মসূচি আগামী ১২ নভেম্বর অবধি চলবে।
এর মধ্যে আগামী ৩ থেকে ৫ নভেম্বর জেলা পর্যায়ে অবস্থান ধর্মঘট পালন করা হবে। আন্দোলনের দাবি সমূহের মধ্যে সমকাজের সমবেতন ছাড়াও পে স্কেল, রেগুলার খালি পদে যোগ্যতা অনুসারে এনএইচএমের কর্মী দিয়ে পূরণ, কর্মরত অবস্থায় এনএইচএমের কোনও কর্মচারীর মৃত্যু হলে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নিযুক্তি প্রদান এবং সামাজিক সুরক্ষা আইনের আওতায় কর্মচারীদের ইপিএফ-র ব্যবস্থা প্রদান। আন্দোলনকে সফল করে তুলতে সংশ্লিষ্ট সংস্থার (এনইএ) সভাপতি ইকবাল বাহার লস্কর, সচিব হিমেন্দুশেখর নাথ, আটোয়া-র সভাপতি ওয়াসিম জাভেদ চৌধুরী, সচিব মুফিদুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন। এই তিন দিন সাধারণ জনগণ স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত নানা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হবেন, এজন্য সংগঠন কর্মকর্তারা দুঃখ প্রকাশ করে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, আগেও এনএইচএমের কর্মচারীরা অনেক আন্দোলন, ধর্মঘট পালন করেছেন। কিন্তু সরকার পক্ষ তাঁদের কোনও দাবি কানে তুলেনি বরং তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা করেছে। এখন পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে। তাই এবার জরুরি পরিষেবা যেমন প্রসূতি, আইসিইউ, দুর্ঘটনা ইত্যাদির মতো পরিষেবা থেকে হাত-পা গুটিয়ে আন্দোলনে নামছেন তাঁরা। আগেকার আন্দোলনে জরুরি পরিষেবাকে আন্দোলনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলস্বরূপ এবারের আন্দোলনে জনগণ হয়রানির শিকার হবেন বলে ব্যথিত দুই সংগঠনের কর্মকর্তারা।

