শহরের বেহাল রাস্তা নিয়ে সরব, অবরোধ
বরাক তরঙ্গ, ৫ জুন : শিলচর শহরের বেহাল সড়ক নিয়ে সরব হল যৌথ ভাবে কয়েকটি সংগঠন। বুধবার নাগরিক স্বার্থ রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ, মার্চ ফর সায়েন্স, শিলচর চাপ্টার ও হাসপাতাল রোড মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা শহরের নাগরিকদের নিয়ে মেরামতের দাবিতে রাস্তায় নামলেন। এ দিন দুপুর ১২ টায় সংগঠনের কর্মকর্তারা হাসপাতাল রোডের ভাঙা সড়কের মেরামতের দাবিতে স্লোগান দিয়ে উত্তাল করে তুলেন। পরবর্তীতে সেখানে অল্প সময়ের জন্য সড়ক অবরোধ করেন।
অবরোধ চলাকালে নাগরিক স্বার্থ রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হরিদাস দত্ত, অধ্যাপক অজয় রায় প্রমুখ বলেন, মানুষের ধর্য্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙা রাস্তায় প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে অথচ পূর্ত বিভাগের আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা নিরব। তাঁরা বলেন যে কোন সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে যে কারোর প্রাণ পর্যন্ত যেতে পারে অথব সংশ্লিষ্ট বিভাগ দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। অবিলম্বে রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু করার দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবেন বলে কড়অ হুঁশিয়ারি দেন।
এ দিনের প্রতিবাদে সামিল নন্দদুলাল সাহা, আশু পাল, বাসু ভট্টাচার্য, কমল চক্রবর্তী, মলয় ভট্টাচার্য, গোবিন্দ চৌধুরী, হিল্লোল ভট্টাচার্য, জয়ন্ত দাস, অধ্যাপক নিরঞ্জন দত্ত, দীপঙ্কর চন্দ, কৃশানু ভট্টাচার্য, সত্যজিৎ গুপ্ত, বিদ্যুৎ কুমার দেব, তমোজিৎ সাহা, পীযূষ কান্তি চক্রবর্ত্তী, বিমলেন্দু দত্ত, বাপ্পা সেন, স্বপন চৌধুরী, প্রবীর রায়চৌধুরী, প্রবীর সুরানা প্রমুখ। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে স্লোগান দিতে দিতে প্রেমতলা, সেন্ট্রাল রোড, দেবদূত হয়ে পিডব্লুডি রোডস ডিভিশনের কার্যনির্বাহী অভিযন্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হন।
সেখানে উপস্থিত হলে তাঁরা তাদের অভিযোগ জানানোর জন্য কার্যনির্বাহী প্রকৌশলী থেকে শুরু করে কাউকে পাননি। এতে শহরের নাগরিকরা তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অবশেষে পিডব্লুডি রোডস ডিভিশনের কর্মচারীদের সহযোগিতায় তাঁরা কার্যনির্বাহী অভিযন্তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন। তিনি বলেন, এই রাস্তাটি এনএইচ আইডিসিএল বিভাগের অধীনে রয়েছে তাই তাদের কিছু করার নেই। তখন হরিদাস দত্ত বলেন, তাহলে কি জনগণ এভাবে দুর্ভোগ পোয়াবে দিনের পর দিন। কার্যনির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বাদানুবাদের পর তিনি তাঁর অধস্তন কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে তিনি কী করেছেন তা উল্লেখ করা একটি চিঠির প্রতিলিপি আন্দোলনকারীদের হাতে তুলে দিতে বলেন। তাঁর আদেশ পেয়ে যে চিঠি আন্দোলনকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাতে উল্লেখ ছিল যে ২০১৫ সালে কেপিট্যাল পয়েন্ট থেকে রাঙ্গিরখাড়ি ও সোনাই রোড সড়কটির দায়িত্ব এনএইচ আইডিএল থেকে পিডব্লুডি রোডস ডিভিশন নেওয়ার জন্য একটি চিঠি দেওয়া হয়। সেখানে পিডব্লুডি রোডস ডিভিশনের পক্ষ থেকে বলা হয় যে তার আগে যেন এনএইচ আইডিসিএল সড়কটি মেরামত করে তাদের সমঝে দেয়। পরবর্তীতে উভয় ডিভিশনের পক্ষ থেকে যৌথ সার্ভেও করা হয় কিন্তু তারপর সবকিছু থমকে রয়েছে। গত ৩১ মে তাই উক্ত বিষয় উল্লেখ করে একটি চিঠি পুরোনো চিঠির প্রতিলিপি সহ পিডব্লুডি বিভাগের মুখ্য প্রকৌশলীর কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু কোন কাজের কাজ হয়নি। এই চিঠি দেখে নাগরিকদের ক্ষোভ চরমে পৌঁছে। তারা তখন পুনরায় প্রতিবারে সোচ্চার হন এবং বলেন শিলচর শহরের নাগরিকদের নিয়ে ছেলে খেলা হচ্ছে অথচ নির্বাচিত সাংসদ, বিধায়করা কোন ভূমিকা পালন করছেন না।
তাঁরা জোরালো দাবি তুলেন যে এসব বিভাগীয় জটিলতা দূর করে অতিসত্বর ক্যাপিটাল পয়েন্ট থেকে রাঙ্গিরখাড়ি পর্যন্ত সড়ক স্থায়ীভাবে গুণগত মান বজায় রেখে মেরামত করতে হবে। অন্যথায় তীব্র নাগরিক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। কার্যনির্বাহী অভিযন্তার কার্যালয়ে বিক্ষোভ চলাকালে সেখানে আন্দোলনে উপস্থিত হন ইয়াসি’র সভাপতি সঞ্জীব রায়।