টিওডি নীতিকে জনবিরোধী আখ্যা কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের, প্ৰত্যাহারের দাবি
বরাক তরঙ্গ, ১৮ মার্চ : আসাম সরকারের বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি বর্তমান অর্থবছরে বিদ্যুতের মাশুল বৃদ্ধি না করার ঢালাও প্রচার করলেও বাস্তবে এবছর থেকেই বিদ্যুৎ মাশুলের ক্ষেত্ৰে ‘টিওডি’ অৰ্থাৎ তিন ধরনের মাশুল নিৰ্ধারণের প্ৰস্তাব করে প্ৰকৃতপক্ষে ঘোর পথে মাশুল বৃদ্ধির ষড়যন্ত্ৰে লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করে অল আসাম ইলেকট্ৰিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের অসম রাজ্য কমিটি। সোমবার গুয়াহাটি প্ৰেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে সংগঠনটির উপদেষ্টা বিমল দাস, রাজ্য কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক অজয় আচাৰ্য এবং রাজ্য কমিটির অন্যতম সদস্য ইদ্ৰিস আলি সাংবাদিকদের সামনে সংগঠনের বক্তব্য তুলে ধরেন।
বিমল দাস বলেন, এপিডিসিএল ২০২৫-২৬ অর্থবৰ্ষে মাশুল নিৰ্ধারণের জন্য নিয়ামক আয়োগের সামনে দাখিল করা আবেদনে বলে যে এইবার তাদের মাশুল বৃদ্ধির কোনো প্ৰস্তাব নেই কিন্তু তারা টিওডি প্রথা চালু করতে চাইছে। তিনি বলেন, এপিডিসিএল পিছনের দরজা দিয়ে মাশুল বৃদ্ধি করতে চাইছে। তিনটা স্তরে মাশুল নির্ধারণের ক্ষেত্রে পিক আওয়ার অর্থাৎ সন্ধ্যা ৫টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত মাশুল সৰ্বোচ্চ ৯.৬২ টাকা করা হবে। সাধারণত মানুষ রাতের বেলায় বিদ্যুতের ব্যবহার বেশি করেন। ছাত্ৰছাত্ৰীদের পড়াশুনা থেকে শুরু করে ঘরের সমস্ত কাজে সন্ধ্যর পরেই বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়ে থাকে। সেই সময়ে যদি মাশুল সৰ্বোচ্চ হয় তাহলে সাধারণ জনগণের উপর মাশুল বৃদ্ধির বোজা চাপবেই। সংগঠনের পক্ষ থেকে এই টিওডি নীতিকে জনবিরোধী আখ্যা দিয়ে এটাকে প্ৰত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
এপিডিসিএল নিয়ামক আয়োগের কাছে দাখিল করা আবেদনে ২০২৩-২৪ বিত্তীয় বৰ্ষে তাদের ৫৪৩.৩৩ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি দেখিয়েছিল। ফলে এই ঘাটতি আগামী বছর আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেছে। অথচ সেই একই অর্থ বর্ষে অডিটেড বেলেন্স শীটে দেখা গেছে যে এপিডিসিএ ৩৭৫.০৪ কোটি টাকা লাভ করেছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্ৰীও কিছুদিন আগে বলেছেন যে বহুদিনের পরে এপিডিসিএল লাভের মুখ দেখেছে। এপিডিসিএল এর এইভাবে অসত্য তথ্য তুলে ধরে মাশুল বৃদ্ধির চেষ্টা অতি দুৰ্ভাগ্যজনক। কনজিউমার্স এসোসিয়েশন গত বছরে এপিডিসিএলের লাভ করা ধনরাশি গ্ৰাহকদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবী জানায়।

অন্যদিকে, সংগঠন অভিযোগ করে যে এপিডিসিএল কর্তৃপক্ষ গ্ৰামাঞ্চলে বিদ্যুৎ গ্ৰাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয় ভীতি প্ৰদৰ্শন করে জোরকরে প্ৰিপেইড স্মাৰ্ট মিটার লাগানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন স্মার্ট মিটার সংযোগ না করলে এখন লাইন কেটে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়, পরে বহু টাকা দিয়ে নিজে মিটার ক্রয় করতে হবে ইত্যাদি বলে বিদ্যুৎ গ্ৰাহকদের ওপর স্মাৰ্ট মিটার স্থাপনের জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।এপিডিসিএল’র এই কাজকে তীব্র ভাষায় নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে স্মাৰ্ট মিটার সংযোগের কাজ বন্ধের দাবি জানান। সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন যে, মাশুল বৃদ্ধি করে, স্মাৰ্ট মিটার লাগিয়ে জনগণকে লুঠ করা বন্ধ করে সরকার এপিডিসিএলের দুৰ্নীতি এবং স্বজনপোষন বন্ধ করতে হবে।