পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনে বিরল দৃশ্য, এক ঘাটে শাসক-বিরোধী
রাজীব মজুমদার, ধলাই।
বরাক তরঙ্গ, ৪ জুলাই : গ্রাম পঞ্চায়েত গঠনে এক বিরল দৃশ্য দেখা গেল। সভাপতি নির্বাচনে শাসক ও বিরোধী দলের নেতারা একযোগে কাজ করছেন, যা রাজনীতির চিরাচরিত সমীকরণকে বদলে দিয়েছে। এই ধরনের জোটবদ্ধতা সাধারণ মানুষের কাছে বেশ উপভোগ্য হয়ে উঠেছে, যেখানে শাসক-বিরোধী ভেদাভেদ ভুলে ‘এক ঘাটে জল খাচ্ছেন’ উভয় পক্ষ।
কিন্তু এই নতুন পদ্ধতির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বিশেষ করে যখন স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত প্রার্থীরা সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রকাশ্যে দলীয় প্রতীক নিয়ে র্যালি করছেন। এটি নতুন নিয়মের মূল উদ্দেশ্য, অর্থাৎ পঞ্চায়েতে নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখার ধারণাকে ব্যাহত করছে বলে মনে করছেন অনেকে। বিভিন্ন মহল থেকে ‘হর্স ট্রেডিং’-এর অভিযোগও উঠেছে, যা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কেনাবেচার ইঙ্গিত দেয়।
এছাড়াও, বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতে সভাপতি ও উপ-সভাপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া জটিল সমীকরণে আটকে আছে। একাধিকবার সভা আহ্বান করা সত্ত্বেও সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুপস্থিতির কারণে শপথ গ্রহণ সভা অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। এই অচলাবস্থা পঞ্চায়েতগুলির সুষ্ঠু কার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
নতুন নিয়ম একদিকে যেমন পঞ্চায়েতে স্থানীয় স্তরে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কমানোর উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হয়েছিল, তেমনই অন্যদিকে এটি নতুন ধরনের রাজনৈতিক চাল এবং অপ্রত্যাশিত জোটের জন্ম দিচ্ছে। পঞ্চায়েত স্তরে সত্যিকারের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে এই চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

ইতিমধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা, সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশ বাল্যবিবাহে জড়িত কিংবা, জালিয়াতির আশ্রয়ে অর্জন করা শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র দেখি কোন প্রার্থী যদি নির্বাচিত হন তার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত এফ আই আর জমা করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরবর্তী সময়ে রাজ্যে ইতিমধ্যে অনেক প্রার্থীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট অভিযোগে দায়ের হয়েছে মামলা। বাল্যবিবাহ এবং জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে অর্জন করা শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র জমা দিয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করা অনেক প্রার্থী ইতিমধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতি কিংবা তো উপ-সভাপতি হিসেবে চয়ন হয়েছেন। তাদের কপালে এবার বাজ পড়েছে চিন্তার। দেখার বিষয় জালিয়াতির আশ্রয়ে অর্জন করা শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা মনোনীত প্রার্থী এবং বাল্যবিবাহের জড়িত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।