উত্তরপূর্ব রেলওয়ের নতুন মাইলফলক ভৈরবি–সাইরাং লাইন

বরাক তরঙ্গ, ১১ সেপ্টেম্বর : উত্তরপূর্ব রেলওয়ের নতুন মাইলফলক  ভৈরবি–সাইরাং লাইন।  দুর্গম ভৌগোলিক পরিস্থিতি আর কঠিন পাহাড়ি পথকে জয় করে এবার নীল পাহাড়ের দেশকে রেলপথ দিয়ে জুড়ে দিল ভারতীয় রেল। বহু প্রতীক্ষিত ভৈরবি–সাইরাং রেললাইন প্রকল্প সম্পূর্ণ হয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যের রাজধানী আইজল পর্যন্ত এবার ট্রেন পৌঁছে যাবে। আর এই রেলপথের উদ্বোধন হবে ১৩ সেপ্টেম্বর।

কেন্দ্রের ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির অধীনে উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নমূলক পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবেই এই রেল প্রকল্পের সূচনা করা হয়। প্রায় ৮,০৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫১.৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেললাইনের পথে রয়েছে ৪৮টি সুড়ঙ্গ, ৫৫টি বড় সেতু, ৮৭টি ছোট সেতু, ৫টি রোড ওভারব্রিজ এবং ৬টি রোড আন্ডারব্রিজ। এর মধ্যে ১৯৬ নম্বর সেতুটি একেবারেই অনন্য— যার উচ্চতা ১১৪ মিটার, অর্থাৎ কুতুব মিনারের থেকেও ৪২ মিটার উঁচু। এই রেলপথে সুড়ঙ্গগুলির নির্মাণে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু কংক্রিট আর পাথরের গা ছমছমে কাঠামোই রাখেনি রেল দপ্তর; সেই সঙ্গে স্থানীয় শিল্পকলা আর মিজো সংস্কৃতির প্রতিফলন সেখানে সাজানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উন্নয়নকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রেরণাতেই সম্ভব হয়েছে এই প্রকল্প— এমনটাই জানিয়েছে ভারতীয় রেল দপ্তর। প্রসঙ্গত, বহু দশক ধরে রেল পরিষেবা থেকে বঞ্চিত ছিল মিজোরাম। এখন এই রেল লাইনের হাত ধরে দেশের গোটা রেল পথের সঙ্গে জুড়ে গেল পাহাড়ঘেরা রাজ্যটি।

এই রেলপথ নির্মাণের মাধ্যমে রাজ্যের অর্থনীতি ও সংযোগে বড়সড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। এই রেললাইন চালু হলে মিজোরামের ভেতরেই যাতায়াত সহজ হবে। পাশাপাশি অন্য রাজ্যগুলির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়বে। এমনকি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও এর গুরুত্ব অপরিসীম বলে মনে করা হচ্ছে। পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প— সব কিছুতেই নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে এই রেল সংযোগ।

ভারতীয় রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, যাত্রীদের সুবিধার জন্য প্রতিটি স্টেশনে আধুনিক পরিষেবার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পর্যটকরাও এর থেকে সুবিধা পাবেন।

Spread the News
error: Content is protected !!