দত্তক নিয়ে বিপদের মুখে গুয়াহাটির এক দম্পতি, গ্রেফতার শিশুর মা ও ঠাকুমা
বরাক তরঙ্গ, ৩ আগস্ট : সন্তান দত্তক নেওয়ার পর বিপদের মুখে পড়েছেন গুয়াহাটি ফটাশিল আমবাড়ির প্রভাল দাস ও মৌসুমি দাস নামে এক দুর্ভাগা দম্পতি। অভিভাবকত্বের স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে তাঁরা দত্তক নেওয়া এক নবজাতকের কারণে বর্তমানে আইনের ফাঁদে পড়েছেন।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, ঢকুয়াখানা থানার অন্তর্গত জিয়ামারিয়া গ্রামের মিন্টু কোচের স্ত্রী পম্পি কোচ নির্মমভাবে নিজের গর্ভজাত সন্তানকে জন্মের একদিন পরই ওই দম্পতির হাতে তুলে দেন। এই নিষ্ঠুর এবং অমানবিক কাজে পম্পিকে সাহায্য করেছিলেন তার মা পূণ্য দত্ত।
এই অমানবিক ঘটনার পেছনে কারণ ছিল সামাজিকভাবে নিজের ভাবমূর্তি রক্ষা করার অদ্ভুত চিন্তা। জিয়ামারিয়া গ্রামের মিন্টু কোচের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ পম্পি দত্ত স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে গর্ভাবস্থায় পিত্রালয় মকরাচুক গ্রামে চলে যান।
সেখান থেকে কিছুদিন আগে পম্পি ও তার মা লখিমপুরে গিয়ে এক সুস্থ কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। পরবর্তীতে মা-মেয়ে মিলে একজন দালালের মাধ্যমে নবজাতককে গুয়াহাটির প্রভাল দাসের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য চুক্তি করেন।
স্বামীর অজান্তে এবং অনুমতি ছাড়াই লখিমপুরের হাসপাতালে জন্ম দেওয়া নবজাতক কন্যাকে পম্পি বিক্রি করে দেন প্রভাল দাসের কাছে। এরপর পম্পি চিকিৎসালয় থেকে বাড়ি ফিরে এসে স্বামীকে জানান তিনি গর্ভপাত করেছেন।
স্বামী মিন্টু কোচের সন্দেহ হলে তিনি ঢকুয়াখানা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্তে নেমে এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি উদ্ঘাটন করে। প্রথমে পম্পি ও তার মা পুলিশি অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরে তদন্তে ফটাশিল আমবাড়ির প্রভাল দাসের জিম্মা থেকে সাত দিন বয়সী নবজাতককে উদ্ধার করা হয়।
এই অমানবিক ঘটনার পর পুলিশ প্রভাল দাস ও তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে এবং পম্পি ও তার মা পূণ্য দত্তকে গ্রেফতার করে।
প্রভাল দাস দম্পতির দাবি, পম্পি দত্ত একটি স্ট্যাম্প পেপারে লিখিতভাবে জানিয়েছেন যে তিনি স্বামীহীন অবস্থায় সন্তানের লালনপালন করতে অপারগ, তাই তারা নবজাতককে গ্রহণ করেছেন। ঢকুয়াখানার এই নিষ্ঠুর ও বিবেচনাহীন ঘটনা সমগ্র এলাকাকে স্তব্ধ ও লজ্জিত করেছে।