রাজপথে ছুরি দিয়ে মৌসুমীকে খুন করে নিজেকে শেষ করার চেষ্টা প্রেমিকের

বরাক তরঙ্গ, ২৬ ডিসেম্বর : গুয়াহাটি মহানগরের রাজপথে ছুরি দিয়ে তরুণীকে খুন করা ব্যক্তির পরিচয় মিলল। স্বাস্থ্যকর্মী মৌসুমী গগৈকে বৃহস্পতিবার মহানগরের লাস্টগেটে নাহারানি রোডে দিনদুপুরে এ ভয়ঙ্কর কাণ্ডটি ঘটিয়েছে তাঁর প্রেমিক ভূপেন দাস। একটি সাদা সুইফট ডিজায়ার গাড়িতে এসে, ভুপেন মৌসুমী গগৈ ছুরিকাঘাত করে ফেলে পালিয়ে যান। এবং এর পরে, ভুপেন দাস একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিজেকে শেষ করার চেষ্টা করেছিলেন। আহত ভুপেন বর্তমানে জিএমসি চিকিৎসাধীন। মৌসুমী গগৈর বাড়ি টিংখং-এ। তিনি আগে বিবাহিত ছিলেন। কয়েক বছর আগে তাঁর স্বামী একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি বাড়ি ফিরে যান। পরে তিনি একটি এনজিওতে কাজ করেন। গুয়াহাটিতে তিনি ভূপেন দাসের সঙ্গে পরিচিত হন। পরে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

এ দিকে, ভুপেন দাস বিবাহিত। তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। ভুপেন দাসের পরিবার গুয়াহাটিতে থাকে। ভুপেন একজন বাস চালক। কিন্তু তিনি একটি গাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। গাড়িটি দীপ ভাদালি নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। বুধবার ক্রিসমাসের জন্য একটি গাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন ভূপেন। সে মালিককে বলেছিল যে সে কামাখ্যা মন্দিরে ভাড়ায় যাবে। কাল পবিত্র যাওয়ার কথা ছিল।

মৌসুমী ভুপেন দাসের সঙ্গে দুই বছর ধরে সম্পর্কে ছিলেন। কিন্তু ভুপেন বিবাহিত সেকথা জানতেন না মৌসুমী। কয়েকদিন আগে মৌসুমী জানতে পারে যে, ভুপেনের বিয়ে হয়ে গেছে। তারপর থেকে মৌসুমী ভুপেনের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি এই অপমান সহ্য করতে পারলেন না ভুপেন। মৌসুমীর ভাড়া বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভূপেন। সে ফোনে আত্মহত্যা করার হুমকি দেয়। ভুপেন দাসের হুমকির বিষয়ে মৌসুমী পানবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু, ভুপেন থানায় হাজির হননি।

দুই বছর আগে বিহুর সময় মৌসুমীকে সঙ্গে ভুপেন বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। গতকাল বিকেল ৫টা থেকে রাত সাড়ে আটটায় পর্যন্ত দু’জন একসঙ্গে ছিলেন। মামলার নিষ্পত্তি নিয়ে কথা হয়েছিল। দু’জনেই বুঝতে পারলেন। কিন্তু তার আগেই ঘটে গেল ভয়ঙ্কর ঘটনা। জিএমসিএইচ-এ চিকিৎসাধীন ভুপেন-এর ব্যাগে মৌসুমীর প্রায় ২০টি ছবি উদ্ধার করা হয়েছে।

রাজপথে ছুরি দিয়ে মৌসুমীকে খুন করে নিজেকে শেষ করার চেষ্টা প্রেমিকের

ভুপেনের বাড়ি নালবাড়ির সরিয়াহাতালির মালাকার পাড়ায়। বর্তমানে সেখানে কেউ নেই।মা আছেন, কিন্তু বাড়িতে কেউ নেই। বিল ও তার স্ত্রীর দুই মেয়ে রয়েছে। ভুবেন বেশ কয়েক বছর ধরে গাড়ি চালিয়ে গুয়াহাটিতে থাকতেন।

উল্লেখ্য, আজ, সকালে রেপিডোর জন্য অপেক্ষা করার সময় মৌসুমীকে ছুরিকাঘাত করে গাড়িতে পালিয়ে যায় ভুপেন দাস। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন মৌসুমী। তাঁকে গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মৌসুমী।

Author

Spread the News