আসাম বিশ্ববিদ্যালয়েও ‘নিযুত মইনা’ প্রকল্পের উদ্বোধন
জ্ঞান ও প্রজ্ঞার সমন্বয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার প্রয়াস : মুখ্যমন্ত্রী
বরাক তরঙ্গ, ৬ আগস্ট : ‘নিযুত মইনা’ কোনও হিতাধিকারী তৈরির প্রকল্প নয়, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার সমন্বয়ে অসমের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার এক প্রয়াস। বুধবার সকালে গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত নিযুত মইনা.০২ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। এদিন একই সময়ে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়েও এই প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন কাছাড়ের জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব, উপাচার্য অধ্যাপক রাজীবমোহন পন্থ, নিবন্ধক ড. প্রদোষ কিরণ নাথ, অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার তথা ম্যাজিস্ট্রেট বহ্নিখা চেতিয়া, উপ-নিবন্ধক মনোজ কুমার দে ও ড. আবুল হাসান চৌধুরী সহ বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষাধিকারিকরা।
বিপিনচন্দ্র পাল মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী শর্মা অতীতের অসম ও আজকের অসমের মধ্যে তথ্য সহ ব্যবধানের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি জানান, বিকশিত অসমে আজ ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় ও চারশ’টি মহাবিদ্যালয় গড়ে ওঠেছে। নতুন এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। বর্তমান রাজ্য সরকার স্কুল-কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া সর্বসাধারণের জন্য বিনামূল্যে করেছে, যা সমগ্র দেশের মধ্যেই এক অনন্য নজির। নানা সমালোচনার মুখোমুখি হয়েও অসমে আজ উদ্যোগ স্থাপনে যুগান্তকারী পদক্ষেপ করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, নিযুত মইনা প্রকল্প অসম-তনয়াদের শুধু স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নয়, বাল্যবিবাহ মুক্ত রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলারও এক অঙ্গীকার। তিনি রীতিমতো আক্ষেপ করে বলেন, এই বাল্যবিবাহ নিয়ে আমাদের সমাজ মোটেই চিন্তিত নয়, চিন্তিত অসমিয়ায় লেখা চিঠি বরাকে এলে কিংবা বাংলায় লেখা চিঠি ব্রহ্মপুত্রে গেলে।
আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা আয়ুক্ত যাদব নিযুত মইনা প্রকল্পের বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি জানান, এবার রাজ্য সরকার মোট চার লক্ষ অসম তনয়াকে এই প্রকল্পের আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রীদের এক হাজার টাকা, স্নাতক স্তরের ছাত্রীদের এক হাজার দু’শ পঞ্চাশ টাকা ও স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্রীদের আড়াই হাজার টাকা করে প্রতি মাসে প্রদান করা হবে। এই অনুদান গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময় ছাড়া মোট দশ মাস প্রদান করা হবে।

উপাচার্য অধ্যাপক পন্থ বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বপ্নদর্শী ‘বেটি পড়াও বেটি বাঁচাও’ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন। তিনি রাজ্য সরকারের নিযুত মইনা প্রকল্পকে সমাজকে শিক্ষিত করার এক মহৎ উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করে এর সুফল গ্রহণের জন্য ছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান। উপাচার্য একথাও স্মরণ করিয়ে দেন যে, যারা পড়ে তারাই নেতৃত্ব দেয়।
এদিনের অনুষ্ঠানে ক’জন ছাত্রীর হাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে নিযুত মইনার ফর্ম তুলে দেন জেলা আয়ুক্ত, উপাচার্য সহ অন্যরা। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. জয়শ্রী দে।