“কৃষ্ণকলি”-র অষ্টাদশ সংখ্যার উন্মোচন রাধামাধব কলেজে

বরাক তরঙ্গ, ৩ অক্টোবর : রাধামাধব কলেজ, বাংলা বিভাগের সম্পাদনায় ঐতিহ্যবাহী “কৃষ্ণকলি” দেয়াল পত্রিকার অষ্টাদশতম সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবার। রাধামাধব কলেজ আইকিউএসি-র কো-অর্ডিনেটর ড. সোনালি চৌধুরীর হাত ধরে দেয়াল পত্রিকার নতুন সংখ্যার শুভ উন্মোচন হয়।
এদিনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আইকিউএসি-র কো-অর্ডিনেটর ড. সোনালি চৌধুরী বলেন কলেজ অধ্যক্ষ ড. দেবাশিস রায় কলেজের কাজে বাইরে রয়েছেন এবং উনার নির্দ্দেশ মর্মে দেয়াল পত্রিকা উন্মোচনের দায়িত্ব পালন করতে পেরে অত্যন্ত গর্বিত বোধ করেছি। অধ্যক্ষ ও আইকিউএসি-র পক্ষ থেকে বাংলা বিভাগকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান সোনালি চৌধুরী। তিনি বলেন, এটা আমাদের ছাত্রদের সৃজনশীলতা, শিল্পকর্ম যেগুলি এই পত্রিকাতে প্রষ্ফুটিত হয়েছে। কলেজের বিভিন্ন বিভাগ দেয়াল পত্রিকা সম্পাদনার মাধ্যমে তুলনামূলক, সহযোগিতামূলক শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করেছে এবং কলেজে সুস্থ পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য এধরণের কাজ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। তিনি দেয়াল পত্রিকা সম্পাদনার সঙ্গে জড়িত বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, অধ্যাপক অধ্যাপিকা ও ছাত্রছাত্রীদের ভূয়শী প্রশংসা করেন।

বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডঃ রাহুল চক্রবর্তী বলেন, প্রথাগত নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছরই মহালয়ার পূণ্য দিনে দেয়াল পত্রিকা কৃষ্ণকলি উন্মোচিত হয়ে আসছে। কিন্তু এবার ওই দিন কলেজ বন্ধ থাকায় মহালয়ার পরদিন অর্থাৎ ৩ অক্টোবর কৃষ্ণকলি উন্মোচন করা হয় । দেয়াল পত্রিকার ইতিহাস তুলে ধরতে গিয়ে বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জানান দেয়াল পত্রিকার প্রথম সংখ্যার যাত্রা শুরু হয়েছিল তদানীন্তন বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডঃ ননী গোপাল দেবনাথের হাত ধরে। ‘কৃষ্ণকলি’ নামটিও তাঁরই দেওয়া। কৃষ্ণকলির প্রথম সংখ্যার লেখালেখি সহ অলংকরণের দায়িত্বে ছিলেন রাহুল চক্রবর্তী । এরপর দ্বিতীয় সংখ্যা থেকে আজ অবধি বিভাগীয় শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে ছাত্র ছাত্রীরাই দেয়াল পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি। কৃষ্ণকলির এবারের সংখ্যার থিম সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “এবারের কৃষ্ণকলি সাজানো হয়েছে শুধু মাত্র সাদাকালো রং দিয়ে। কারণ, এবারের পুজো আমাদের জন্য একদিকে যেমন আনন্দের তেমনি অন্যদিকে চিন্তা করলে দুঃখের ও বটে। আমরা যদি আজকাল পত্রপত্রিকা খুলি যেখানে অত্যাচারের করুণ কাহিনির কথা দেখছি, সেখানে রঙিন শব্দ উধাও হওয়ার বিষয়। যে ঘটনা কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে হয়েছে তা ছোট্ট ঘটনা নয়, এটা একটা প্রতিবাদের দিক। অন্ধকার ছাড়া আলোর অস্তিত্ব নেই। সাদাকালো হচ্ছে অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রা। সাদাকালো এখানে তারই ইঙ্গিতবাহী।” দেয়াল পত্রিকা সম্পাদনা করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করার জন্য বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপিকা ড. সুমিতা বসু ও দেবমিতা রায় চৌধুরী, কলেজ পড়ুয়া যথাক্রমে অভিজিৎ চৌধুরী, রাজ চন্দ, রাজলক্ষী শুক্লবৈদ্য, মোঃ জাহির খান, মৌ চন্দ, স্নেহা দাশ ও আকাশ শীলের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ড. অরুন্ধতী দত্ত চৌধুরী, ড. রুমা নাথ চৌধুরী, ড. সন্তোষ বরা, ড. পিয়া দাস, নম্রতা নাথ, সুরভি ঘোষ, ড. আশিসতরু রায়, কলেজ ছাত্র অভিজিৎ চৌধুরী প্রমুখ। গোটা অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সূর্যসেন দেব। ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. কালীপদ দাশ। এদিনের অনুষ্ঠানে অধ্যাপিকা অর্চিস্মিতা রায়, পৌমিতা রায়, ত্রয়ী ভট্টাচার্য সহ কলেজের অশিক্ষক কর্মচারী, লাইব্রেরি বিভাগের কর্মচারী ও কলেজ পড়ুয়ারা উপস্থিত ছিলেন।