রাখে হরি মারে কে! ১৮ তলা ভবন থেকে পড়ে অলৌকিকভাবে বেঁচে গেল শিশু

৩ আগস্ট : ‘রাখে হরি মারে কে’ প্রবাদ বাক্য ফের প্রমাণিত হল চিনের হাংঝু শহরে। এক অবিশ্বাস্য ঘটনার সাক্ষী থাকল শহরটি। ১৮ তলা ভবন থেকে পড়ে অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেল তিন বছরের এক শিশু। এই দুর্ঘটনায় শিশুটির প্রাণ বাঁচানোর জন্য একটি গাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কৃতজ্ঞতাস্বরূপ শিশুটির বাবা গাছটিকে একটি বড় লাল ফুল দিয়ে সম্মান জানান।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৫ জুলাই চিনের ঝেজিয়াং প্রদেশের হাংঝু শহরে এই ঘটনাটি ঘটে। শিশুটিকে সাময়িকভাবে দেখভালের জন্য তার দাদা-দাদির কাছে রাখা হয়েছিল। তারা মনে করেছিলেন, শিশু ঘুমাচ্ছে। তাই তারা ঘরের দরজা বন্ধ করে কিছু বাজার করতে বাইরে যান। কিন্তু ঘুম ভেঙে শিশুটি বাথরুমে গিয়ে সেখানে থাকা টয়লেটে উঠে জানালার কাছে পৌঁছায়। বাথরুমের জানালায় কোনও সুরক্ষাবার না থাকায় সেখান থেকে সে নিচে পড়ে যায়। অবাক করা বিষয় হলো, শিশুটি পড়ে যাওয়ার সময় একটি গাছ বাধা হয়ে দাঁড়ায় এবং সে প্রাণে বেঁচে যায়। ভবনের এক বাসিন্দা তাকে পড়ে থাকতে দেখে দ্রুত ভিডিও ধারণ করে তা ভবন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে জানান।

শিশুটির বাবা, যিনি ‘ঝু’ নামেই পরিচিত, প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি তার ছেলেটি ১৮ তলা থেকে পড়েছে। পরে ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিষয়টি নিশ্চিত হন। ঝু জানান, পড়ে যাওয়ার সময় ১৭ তলায় একটি খোলা জানালায় ধাক্কা খেয়ে শিশুর দিক পরিবর্তন হয়, যার ফলে সে সরাসরি গাছের ওপর পড়ে। ‘না হলে ও সরাসরি কংক্রিটে পড়তো,’ বলেন তিনি। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা শিশুটির বেঁচে যাওয়াকে ‘অলৌকিক’ বলে মন্তব্য করেন। তার বাঁ হাত ভেঙেছে, মেরুদ-ে চাপ লেগেছে এবং কিছু অভ্যন্তরীণ অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে মাথায় কোনও আঘাত লাগেনি। চমকপ্রদভাবে, হাসপাতালে শিশু নিজেই চিকিৎসকদের বলেছে, বাবাকে বলো আমাকে একটা বাম্বলবি (ট্রান্সফর্মারস খেলনা) কিনে দিক।

শিশুটির প্রাণ বাঁচানো গাছের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ঝু পরে গাছটিকে একটি বড় লাল ফুল দিয়ে সম্মান জানান। চিনে এই ধরনের ফুল সাধারণত শ্রদ্ধা ও উৎসবের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ঘটনার ভিডিও এবং বিবরণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। একজন মন্তব্য করেন, বাচ্চা তো দূরের কথা, মানুষ তো বিড়াল পুষলেও জানালায় গ্রিল লাগায়! আরেকজন লেখেন, এটা সত্যিই এক অলৌকিক ঘটনা। সোনামনি, তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠো।
খবর : দৈনিক ইনক্লাব পত্রিকা ডিজিটাল।

Spread the News
error: Content is protected !!