বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে অনিবার্য জাতীয় সুরক্ষা ছাড়পত্র : মুখ্যমন্ত্রী

বরাক তরঙ্গ, ৪ মার্চ : ইউএসটিএম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মহবুবুল হকের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা অসমে ব্যক্তিগত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার ক্ষেত্রে থাকা বর্তমান নিয়মগুলো আরেকটু কঠোর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মঙ্গলবার ক্যাবিনেট বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, রাজ্যে ব্যক্তিগত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে হলে জাতীয় সুরক্ষা ছাড়পত্র অনিবার্য।

জাগিরোডের সেমিকন্ডাক্টর নগরীর নাম হবে রতন টাটা ইলেকট্রনিক সিটি____

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে আমরা রাজ্যে ব্যক্তিগত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার নিয়মগুলো কঠোর করেছি এবং আজকের ক্যাবিনেটের এর স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এবার থেকে ব্যক্তিগত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে শুধুমাত্র জমি, বিল্ডিং বা আর্থিক সম্বল থাকলে হবে না। এক্ষেত্রে প্রথম বিষয়টি হচ্ছে কেন্দ্র সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জাতীয় সুরক্ষা ছাড়পত্র পাওয়া। বিশ্ববিদ্যালয়কে পুরোপুরি ধর্মনিরপেক্ষ হতে হবে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যদি তারা ধর্মান্তকরণ বা এধরনের কাজে জড়িত থাকে এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যায়, আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন বাতিল করব। শিক্ষার ক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতা এবং জাতীয় সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে কেউ যদি নিজেদের ধর্মীয় রাজনীতি ছাত্রছাত্রীদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, আমরা এর বিরুদ্ধে কঠোর হব। আজ বৈঠকে এনিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং আমাদের প্রস্তাবকে প্রত্যেকেই স্বীকৃতি দিয়েছেন।’

২০০৭ সালের আসাম ব্যক্তিগত বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট সংশোধন করে এই নিয়মগুলো এর মধ্যে জুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে অ্যাডভান্টেজ আসাম অনুষ্ঠানে স্বাক্ষরিত চুক্তির অধীনে অসমে নতুন দুই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার অনুমতি দিয়েছে কেবিনেট। শিপাঝার এবং তিনসুকিয়ায় এই দুই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানান তিনসুকিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হচ্ছে এডটেক স্কিল ইউনিভার্সিটি এবং শিপাঝাড়ে হবে মা কামাখ্যা ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। তিনি বলেন, ‘অ্যাডভান্টেজ আসাম অনুষ্ঠানে আমরা যেসব চুক্তি স্বাক্ষর করেছি তার প্রথম দুটো সফল হচ্ছে এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে। এটি আমাদের প্রতিশ্রুতি পূরণের যে মনোভাব তার একটি উদাহরণ। আমরা প্রতিটি প্রতিশ্রুতি সময়ের আগেই পূরণ করব।’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে অনিবার্য জাতীয় সুরক্ষা ছাড়পত্র : মুখ্যমন্ত্রী

জাগিরোডের সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট অসমের ইতিহাসের সব থেকে বড় শিল্প যা প্রয়াত শিল্পপতি রতন টাটার সহায়তায় বাস্তব হয়েছে। অসমের প্রতি তার এই অবদানকে স্বীকৃতি দিতে এক বিশেষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেবিনেট। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘প্রয়াত শিল্পপতি রতন নোবেল টাটা, যাকে অসমের সরকার তার প্রথম আসাম বৈভব পুরস্কার প্রদান করেছিল। তার হাত ধরেই আমাদের রাজ্যে সেমিকন্ডাক্টর প্লান্ট গড়ে উঠেছে। কি শিল্পকে কেন্দ্র করে একটি অত্যাধুনিক শহর গড়ে উঠছে জাগি রোডে। সেই শহর এবং তার সঙ্গে জড়িত প্রতিটি বিষয়কে আমরা রতন টাটার প্রতি উৎসর্গ করছি। যে নতুন শহর গড়ে উঠছে তার নাম হবে রতন টাটা ইলেকট্রনিক সিটি। সেখানে তাকে শ্রদ্ধা জানানোর মতো বেশ কিছু বিষয় থাকবে। এর মাধ্যমে আমরা প্রত্যেকের উদ্দেশ্যে একটা বার্তা দিতে চাইছি, যারা আমাদের পাশে থাকেন তাদের সম্মান দিতে কার্পণ্য করে না অসম।’

অ্যাডভান্টেজ আসা অনুষ্ঠানের পর রাজ্যসরকার ব্যবসা এবং বিনিয়োগের সব ধরনের বিষয়কে উন্নত করাকে প্রাধান্য দিচ্ছে। এদিন কেবিনেট বৈঠকে এমন বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এরমধ্যে রয়েছে আসাম ইলেকট্রনিক সিস্টেম ডিজাইন এন্ড ম্যানুফ্যাকচারিং পলিসি এবং আসাম ফার্মাসিউটিক্যাল এন্ড মেডিকেল ডিভাইস পলিসি ২০২৫-কে স্বীকৃতি প্রদান। সঙ্গে আইআইটির প্রাক্তনীদের নিয়ে একটি বিশেষ প্রকল্পকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এদিন।

Spread the News
error: Content is protected !!