সাংসদ মুর্মুকে দেখতে হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী, ‘রাজনৈতিক লোকদেখানো’ বলে কটাক্ষ বিজেপির
৭ অক্টোবর : সোমবার নাগরাকাটায় দুষ্কৃতীদের হামলায় গুরুতর আহত বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুকে দেখতে মঙ্গলবার শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালে পৌঁছে গেলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রাণ বিতরণে গিয়ে আক্রান্ত বিরোধী দলের এক নেতাকে দেখতে মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এক মানবিক বার্তা দিয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
যদিও খোদ আহত সাংসদের পরিবার এবং বিজেপি নেতৃত্ব এই সাক্ষাৎ নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তুলেছেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরকে ‘রাজনৈতিক লোকদেখানো’ বলে কটাক্ষ করেছেন।
মঙ্গলবার দুধিয়ায় দুর্গতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি শিলিগুড়ির ওই হাসপাতালে যান। চিকিৎসাধীন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “খগেনের সঙ্গে কথা হয়েছে, অবস্থা স্থিতিশীল। আমি তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।” তিনি জানান, চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জেনেছেন যে খগেন মুর্মুর ডায়াবেটিস আছে এবং তার মাত্রাও বেশি। চিকিৎসকরা সেই দিকটায় বিশেষ নজর রাখছেন। কানের নীচেও সাংসদের আঘাত লেগেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মিরিকের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত সোমবার। নাগরাকাটায় বন্যা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ দিতে গিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বামনডাঙায় ঢোকার আগে তাঁরা বিক্ষোভের মুখে পড়েন। বিক্ষোভকারীরা তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে লাঠি, জুতো নিয়ে চড়াও হন। গাড়ি থেকে নেমে খগেন মুর্মু যখন কথা বলতে যান, তখনই অতর্কিতে ছোড়া ইট এসে লাগে তাঁর চোখের নীচে। গুরুতর আঘাত পান তিনি, রক্তাক্ত হন সাংসদ।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, খগেন মুর্মুর চোখের নীচের হাড় ভেঙে গিয়েছে। চোখ থেকে নাকের নীচে পর্যন্ত তাঁর গুরুতর চোট। প্রথমে পাঁচটা সেলাই দেওয়ার পর অবস্থা বুঝে আরও দুটো সেলাই দিতে হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার করে মুখে পাত বসানো জরুরি। তাঁর পুত্র অনিমেষ মুর্মুর সঙ্গে ইতিমধ্যেই অস্ত্রোপচার নিয়ে কথা হয়েছে চিকিৎসকদের। আপাতত তাঁকে কমপক্ষে পনেরো দিন কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে।