দিল্লিতে আফগান মন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকে নেই মহিলা সাংবাদিকরা! বিতর্ক বাড়তেই সাফাই কেন্দ্রের

১১ অক্টোবর : ভারত সফরে এসেছেন আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। শুক্রবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক  করেন তিনি। কিন্তু অভিযোগ, এই বৈঠকে মহিলা সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমতি ছিল না। এই বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা। তবে বিতর্ক বাড়তেই এনিয়ে নীরবতা ভেঙেছে ভারতের বিদেশমন্ত্রক। আফগান বিদেশমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকে তাদের কোনও ভূমিকা ছিল না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি।

শনিবার এদেশের বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এই সাংবাদিক বৈঠকের আমন্ত্রণপত্রগুলি মুম্বইয়ে অবস্থিত আফগানিস্তানের কনসাল জেনারেলের দ্বারা নির্বাচিত সাংবাদিকদের কাছেই পাঠানো হয়েছিল। যিনি নিজেও মুত্তাকির সফরের জন্য বর্তমানে দিল্লিতে রয়েছেন। এমনকি আফগান দূতাবাসের এলাকা ভারত সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত নয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

শুক্রবার আফগান বিদেশমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকের ছবি প্রকাশ্যে আসতেই দেখা যায়, সেখানে উপস্থিত সবাই পুরুষ সাংবাদিক। কোনও মহিলা সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন না সেখানে। যা ভারতের মাটিতে তালিবানের লিঙ্গবৈষম্য নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন বহু সাংবাদিক।

এনিয়ে কেন্দ্রকে বিঁধে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দল কংগ্রেসও। ওয়েনাডের সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধি বঢরা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘আমাদের দেশের নারীরা দেশের মেরুদণ্ড এবং গর্ব। কিন্তু ভারতের সবচেয়ে যোগ্য নারীদেরই এই দেশের মাটিতে অপমান করা হয়েছে। এমনটা কেন হল? ভারত সফরে এসে তালিবান মন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠক থেকে মহিলা সাংবাদিকদের কেন সরানো হল, সেই বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করুন মোদিজি।’ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধিও এনিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘আমাদের দেশের মহিলাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে সমান অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে। এই ধরণের বৈষম্যের মুখে আপনার নীরবতা নারী শক্তি সম্পর্কে আপনার স্লোগানের শূন্যতাকেই প্রকাশ করে।’ তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্রও এনিয়ে সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘তালিবান মন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠক থেকে মহিলা সাংবাদিকদের বাদ দেওয়ার অনুমতি প্রতিটি ভারতীয় নারীকে অসম্মান করেছে।’

উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের বর্তমান শাসকগোষ্ঠী তালিবান বরাবরই নারীবিদ্বেষী নীতির জন্য পরিচিত। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালিবান ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সেদেশের মহিলাদের সমস্ত অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সেখানকার মহিলাদের উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তাঁদের উচ্চশিক্ষা, কর্মসংস্থানের থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।

Spread the News
error: Content is protected !!