সাজুর বিরুদ্ধে আমিনুলের মামলা খারিজ সুপ্রিম কোর্টের

সাজুর বিরুদ্ধে আমিনুলের মামলা খারিজ সুপ্রিম কোর্টের

বাপন লস্কর, সোনাই।
বরাক তরঙ্গ, ৯ এপ্রিল : অবশেষে সার্টিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলেন সোনাইর বিধায়ক করিম উদ্দিন বড়ভূইয়া ওরফে সাজু। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সোনাইর বিধায়ককে স্বস্তির শ্বাস ফেলার সুযোগ করে দিলেও অস্বস্তিতে পড়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক আমিনুল হক লস্কর। এমনকি এই মামলার চূড়ান্ত রায়ে সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, কারো ওপর দোষ দেওয়া সহজ। কিন্তু তা প্রমাণ করা খুবই কঠিন।

উল্লেখ্য, গৌহাটি হাইকোর্টে চলা এ সংক্রান্ত বহুচর্চিত মামলাটি সোমবার খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। মোট ২৩ পাতার রায়ে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু ও বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর আদালত জানিয়েছে, ২০২১ সালের নির্বাচনে সাজুর বিরুদ্ধে আনা ‘করাপ্ট প্র্যাক্টিস’-এর অভিযোগ টিকলো না। 

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের পয়লা এপ্রিল সোনাই বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে নির্বাচনে ৭১ হাজার ৯৩৭ ভোট পেয়ে জয়ী হন ইউডিএফ প্রার্থী সাজু। ১৯ হাজার ৬৫৪ ভোটের ব্যবধানে তিনি হারান তৎকালীন বিজেপি প্রার্থী আমিনুল হক লস্করকে। আমিনুলের ঝুলিতে পড়েছিল ৫২ হাজার ২৮৩ ভোট। এ ফলাফলে হতাশ আমিনুল নির্বাচন বাতিলের দাবি নিয়ে পৌঁছে যান গৌহাটি হাইকোর্টে। ২০২১ সালের ২৪ জুন হাইকোর্টে দায়ের করা মামলায় আমিনুল মূলত চারটি অভিযোগ করেন। সেগুলো হল– সাজু শিক্ষাগত যোগ্যতার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনে মিথ্যে হলফনামা দিয়েছেন, ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমার তথ্য লুকিয়েছেন, ব্যবসায়ীক সংস্থা অ্যালাইড এজেন্সির ব্যাঙ্ক লোন সংক্রান্ত তথ্য লুকিয়েছেন এবং ওই সংস্থার প্রভিডেন্ট ফান্ড সংক্রান্ত তথ্যও লুকিয়েছেন। হাইকোর্ট মামলাটি গ্রহণ করে। এ মামলার গ্রহণযোগ্যতা নেই দাবি করে এটি খারিজ করতে একুশের ২৩ আগস্ট হাইকোর্টে একটি আবেদন করেন সাজু। হাইকোর্ট তাঁর সে আবেদন খারিজ করে দিলে সুপ্রিম কোর্টের দরজায় কড়া নাড়েন সোনাইর বিধায়ক।

সাজুর বিরুদ্ধে আমিনুলের মামলা খারিজ সুপ্রিম কোর্টের

প্রায় বছর খানেক শুনানি চলার পর সোমবার দেওয়া রায়ে সুপ্রিমকোর্ট জানিয়েছে, আমিনুলের আনা অভিযোগ নির্বাচনে ‘করাপ্ট প্র্যাক্টিস’-এর মধ্যে পড়ে না। ২৩ পাতার রায়ে সুপ্রিমকোর্টের বিচারকরা এ-ও বলেন, সাজু শিক্ষাগত যোগ্যতার ব্যাপারে ভুল হলফনামা দিয়েছেন, মনোনয়নপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় রিটার্নিং অফিসারের কাছে এ অভিযোগ জানাতে পারতেন আমিনুল কিন্তু তিনি তা করেননি। তখনই মৌখিকভাবে এ অভিযোগ করা হয়েছিল, আমিনুলের উকিল এ কথা জানালেও সুপ্রিমকোর্ট সেটাকে ধর্তব্যের মধ্যে আনেনি। ২৩ পাতার রায়ে সব দিক বিবেচনা করে বিচারপতি বসু ও বিচারপতি ত্রিবেদী জানান, সোনাই বিধানসভা কেন্দ্রে একুশের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করার দাবিতে গৌহাটি হাইকোর্টে দায়ের করা আমিনুলের মামলা বাতিলযোগ্য। আর তাই মামলাটি বাতিল ঘোষণা করছেন তাঁরা। সুপ্রিমকোর্টে সাজুর হয়ে সওয়াল করেন দুঁদে আইনজীবী কপিল সিবাল ও আমিনুলের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী জয়দীপ গুপ্তা।

Author

Spread the News