গৃহবন্দীরা ত্রাণ সামগ্রী থেকে বঞ্চিত, প্রদান করার দাবি এসইউসিআই-র

বরাক তরঙ্গ, ৫ জুন : এসইউসিআই (কমিউনিস্ট) দলের একটি প্রতিনিধি দল শহরের বিভিন্ন বন্যাক্রান্ত অঞ্চল, ত্রাণশিবির পরিদর্শন করে জেলা আয়ুক্তের উদ্দেশে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত একটি স্মারকপত্র প্রদান করে। প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের জেলা সম্পাদক ভবতোষ চক্রবর্তী, জেলা কমিটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক অজয় রায়, বিজিৎ কুমার সিনহা, সহ দিলীপ নাথ, চাম্পা লাল দাস প্রমুখ। অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে নদীবাঁধ সংস্কারে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের যে তৎপরতা নিয়ে বাঁধ মেরামত করা উচিত ছিল এই তিন বছরে তা হয়নি। বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলে তাৎক্ষণিক কিছু মাটির বস্তা দিয়ে বাঁধের জল আটকানোর ব্যবস্থা করা হয়। যার ফলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। বন্যা মোকাবিলায় বৈজ্ঞানিক পদক্ষেপ গ্রহণের কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন না। বন্যা পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর সফর এবং প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন কিন্তু এই কাজ তো আগেই করা উচিত ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর মানুষের  ক্ষোভকে প্রশমিত করা।

বিভিন্ন স্থানে জমাজল ও নদীর জল জনগণের বসতবাটিতে প্রবেশ করে তাদের ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছে। প্রতিনিধি দল বেতুকান্দি বাঁধ এবং নাথ পাড়া বাঁধ পর্যবেক্ষেন সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে লক্ষ্য করেছেন যে বহু মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় না নিয়ে নিজস্ব এলাকার উচুঁ স্থানে অস্থায়ী আশ্রয় শিবির তৈরি করে রয়েছেন। এছাড়াও বহু এলাকায় লোকজনের ঘরে জল প্রবেশ না করলেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে কার্যতঃ গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন। ফলে এই সাধারণ মানুষের কারও পক্ষে প্রয়োজনীয় উপার্জন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ত্রাণ শিবিরে আশ্রিতদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু ত্রাণ বিতরণ করা হলেও নদীবাঁধে, অন্যান্য উচুঁ স্থানে বা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যারা গৃহবন্দী হয়ে রয়েছেন তারা ত্রাণ সামগ্রী থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আর্থিক অভাব অনটনের ফলে অনাহারে, অর্ধাহারে তাদের দিন কাটাতে হচ্ছে। এটাও পরিলক্ষিত হয়েছে যে বন্যা পরিস্থিতির সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ী ও কালোবাজারিরা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি করে দিয়েছে।

গৃহবন্দীরা ত্রাণ সামগ্রী থেকে বঞ্চিত, প্রদান করার দাবি এসইউসিআই-র

এই পরিস্থিতিতে এসইউসিআই (কমিউনিস্ট) দলের কাছাড় জেলা কমিটির পক্ষ থেকে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে জেলা আয়ুক্তের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দাবিতে স্মারকপত্র প্রদান করে। দাবিগুলো হচ্ছে বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে আশ্রিতদের উপযুক্ত ত্রাণ সামগ্রী বন্টন, বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করতে হবে। যারা ত্রাণ শিবিরের পরিবর্তে বিভিন্ন উচুঁ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন বা গৃহবন্দী হয়ে রয়েছেন তাদেরকেও পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য সামগ্রী, ওষুধ ইত্যাদি প্রদান করতে হবে। কালোবাজারিদের চক্রান্ত কঠোর হাতে দমন করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য স্বাভাবিক রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। গ্রামাঞ্চলে গোবাদি পশুদের জন্য পশুখাদ্য যোগান দিতে হবে। দল আরও দাবি জানাচ্ছে যে বন্যা পরবর্তীতে শহরের নালা, নর্দমা, খাল পরিষ্কার করে বৈজ্ঞানিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে জমা জল এবং বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে। জনগণকে এই সমস্যার সমাধানের দাবিতে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।

Author

Spread the News