শিবরাত্রিব্রত হিন্দুশাস্ত্রের শ্রেষ্ঠ ব্রত : স্বামী মাধবানন্দ গিরি মহারাজ

ভোলাগিরি আশ্রমের শিব চুর্তুদর্শী উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠান

দীপ দেব, শিলচর।
বরাক তরঙ্গ, ২৭ ফেব্রুয়ারি : শিলচর রাঙ্গিরখাড়ির শ্রীশ্রী ভোলাগিরি আশ্রমে মহাশিবরাত্রী উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী শিব চুর্তুদর্শীব্রত সহ চণ্ডীযজ্ঞ সমাপ্ত ঘটে। বুধবার সকাল থেকে শিবচর্তুদর্শীকে কেন্দ্র ভক্তরা শিবের মাথায় জল, বেলপাতা, মধূ, ঘি দিয়ে শিবলিঙ্গকে সাঁজিয়ে তোলেন এবং পরেরদিন বৃহস্পতিবার শিব চুর্তুদর্শীব্রতের পারন উৎসব ও শ্রীশ্রী চণ্ডীযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয় সকাল থেকে বিকেল পাঁচটা অবধি।

ভোলাগিরি আশ্রমের বেনারস শাখার অধ্যক্ষ আচার্য স্বামী মাধবানন্দ গিরি মহারাজ বলেন, শিবরাত্রিব্রত হিন্দুশাস্ত্রের শ্রেষ্ঠ ব্রত। মহাশিবরাত্রি পালন করেন অনেকেই। মনোস্কামনা পূরণের জন্য নির্জলা উপবাস করে চার প্রহরে শিবের পুজো করেন। হিন্দুশাস্ত্র মতে, দেবাদিদেব মহাদেব এবং পার্বতীর বিয়ের দিন শিবরাত্রি হিসাবে পালন করা হয়। কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে মহাশিবরাত্রির ব্রত পালন করা হয়। শিবপুরাণ অনুসারে আদি শক্তির অনন্ত আধার মহাদেব। তিনি সর্ব প্রথম। শাক্ত সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রধান আরাধ্য তিনি। শাস্ত্র মতে মহাদেবের আরাধনার শ্রেষ্ঠ দিন মহাশিবরাত্রি। বিশ্বাস এই দিন উপোস করে ভক্তি ভরে পুজো করলে সন্তুষ্ট হন শিব। ভক্তদের মনবাঞ্ছা পূরণ করেন তিনি। কথিত এই দিন সঠিক নিয়ম মেনে কুমারীরা যদি ব্রত পালন করেন তাহলে শিবের মতো জীবনসঙ্গী পান তাঁরা। স্বামী চৈতন্যনন্দ গিরি মহারাজ বলেন, মহাশিবরাত্রি ব্রত পালন ভক্তদের আধ্যাত্মিক শান্তি এবং আধ্যাত্মিকতা অর্জনে সাহায্য করে এবং ভগবান শিবের আশীর্বাদ লাভ করে বলে বিশ্বাস করা হয়। এটি মন ও শরীরকে পবিত্র করে এবং নেতিবাচক প্রবণতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে বলেও বিশ্বাস করা হয়।

শিবরাত্রিব্রত হিন্দুশাস্ত্রের শ্রেষ্ঠ ব্রত : স্বামী মাধবানন্দ গিরি মহারাজ

স্বামী ভুবনেশ্বরানন্দ গিরি মহারাজ বলেন, মহাশিবরাত্রি হল সেই মহারাত্রি যা শিব উপাসনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত। এই উৎসব শিবের দৈব অবতারের একটি শুভ উৎসব। নিরাকার থেকে আকারে তাঁর অবতারের রাতকে বলা হয় মহাশিবরাত্রি। তিনি আমাদেরকে কাম, ক্রোধ, লোভ, আসক্তি, হিংসা ইত্যাদি থেকে মুক্ত করেন এবং পরম সুখ, শান্তি ও ঐশ্বর্য দান করেন।তিনি আরো বলেন,চণ্ডী যজ্ঞ হিন্দুধর্মের একটি অত্যন্ত শক্তিশালী, অসাধারণ এবং বড় যজ্ঞ। এই যজ্ঞের পাঠ শুধুমাত্র একজন অত্যন্ত যোগ্য এবং বিদ্বান ব্রাহ্মণ দ্বারা করা হয়। এই চণ্ডী যজ্ঞে ৭০০টি শ্লোক পাঠ করা হয়। এতে মা দুর্গার বিশেষ আশীর্বাদ পাওয়া যায়। এই যজ্ঞ সর্বদা পৌরাণিক যুগে ঋষি, ঋষি, দেবতা এবং অসুরদের দ্বারা অপরিমেয় শক্তি অর্জনের জন্য সংগঠিত হয়েছিল। প্রথমত, সাত চণ্ডী যজ্ঞের উপযুক্ত স্থানে হবন কুণ্ডের পঞ্চভূত সংস্কার করা হয়। উপস্থিত মহারাজবৃন্দরা সবাই সহযোগিতায় থাকা পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ সহ এই অঞ্চলের ধর্মপ্রাণ ভক্তবৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও আর্শীবাদ জানান।

শিবরাত্রিব্রত হিন্দুশাস্ত্রের শ্রেষ্ঠ ব্রত : স্বামী মাধবানন্দ গিরি মহারাজ

এদিন অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত কবি-লেখিকা তথা সম্পাদক মিতা দাশ পুরকায়স্থ, লেখিকা ববিতা বরা, সাংবাদিক চয়ন ভট্টাচার্য, সমাজকর্মী সৌমিত্র দত্ত রায়, পরিচালনা কমিটির সম্পাদক ভোলানাথ চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ সৌমেন দত্ত চৌধুরী, আইনজীবী সুম্মিতা পুরকায়স্থ, উত্তম দেব প্রমুখ।

Author

Spread the News