টাকা তুলতে গিয়ে প্রতারকের খপ্পরে মহিলা, স্থানীয়দের তৎপরতায় ধৃত প্রতারক

মোহাম্মদ জনি, পাথারকান্দি।
বরাক তরঙ্গ, ৩০ জুন : ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার সময় প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা খোয়ালেন এক সহজ-সরল মহিলা। ঘটনাটি ঘটে সোমবার দুপুর নাগাদ শ্রীভূমির পাথারকান্দি শহরের  এসবিআই এটিএমে। ওই মহিলা টাকা তুলতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হন। তবে স্থানীয়দের তৎপরতায় প্রতারককে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

জানা গেছে, ধৃত যুবকের নাম আম্বর আলি ওরফে পীর, বাবা বলু মিয়া। তার বাড়ি ত্রিপুরার উত্তর জেলার কদমতলা থানা অধীন দক্ষিণ কদমতলা এলাকায়। পাথারকান্দি থানার ওসি সোমেশ্বর কোঁওর জানান, ধৃত প্রথমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ও মিথ্যা ঠিকানা দিয়ে পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে তার ব্যবহৃত একটি মোটরবাইক উদ্ধার করে পুলিশ।

টাকা তুলতে গিয়ে প্রতারকের খপ্পরে মহিলা, স্থানীয়দের তৎপরতায় ধৃত প্রতারক

সোমবার দুপুরে স্থানীয় এক মহিলা এসবিআই পাথারকান্দি শাখার এটিএম বুথে টাকা তুলতে যান। সে সময় বুথে উপস্থিত আম্বর আলি সহানুভূতিশীল সহকারী হিসেবে পরিচয় দিয়ে মহিলার পাশে এসে দাঁড়ায় এবং তাঁকে সাহায্য করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। মহিলা প্রথমে কিছু না বুঝেই নিজের এটিএম কার্ডটি যুবকের হাতে তুলে দেন এবং পাসওয়ার্ডটিও জানিয়ে দেন।

এরপর ঘটে মূল প্রতারণা। যুবকটি বারবার ভুল পিন দিয়ে লেনদেন ব্যর্থ করার নাটক করে, এবং পরে জানায় যে কার্ডটি কাজ করছে না। তারপর সে কৌশলে নিজের সঙ্গে থাকা আরেকটি পুরনো বা অব্যবহৃত এটিএম কার্ড মহিলার হাতে ধরিয়ে দেয়, যাতে কিছুতেই কিছু বোঝার উপায় না থাকে। মহিলা তখন বিভ্রান্ত ও হতাশ হয়ে ব্যাঙ্কের শাখা অফিসে যান।

টাকা তুলতে গিয়ে প্রতারকের খপ্পরে মহিলা, স্থানীয়দের তৎপরতায় ধৃত প্রতারক

ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তখন মহিলার অভিযোগ শুনে অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট পরীক্ষা করে দেখেন, ইতিমধ্যেই তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৩৫০০ টাকার বেশি তুলে নেওয়া হয়েছে। এতে হতবাক ও হতাশ মহিলা তখন ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে ফেরার সময়ই এটিএম বুথের পাশেই প্রতারক যুবককে দেখতে পান এবং সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার করে আশপাশের লোকজনকে সতর্ক করেন।

চিৎকার শুনে লোকজন জড়ো হয়ে যায় এবং প্রতারক দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে দেয়াল টপকে, কিন্তু স্থানীয় যুবকরা ধাওয়া করে তাঁকে ধরে ফেলে। উত্তেজিত জনতা তাকে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত আম্বর আলীকে সঙ্গে নিয়েই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে পাথারকান্দি থানা থেকে একটি দল ত্রিপুরার কদমতলায় পৌঁছেছে, ধৃতের ঠিকানা ও পরিচয় যাচাই করতে। পাশাপাশি, ধৃতের মোবাইল ফোন ও অন্যান্য ডিভাইস পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে, যাতে প্রতারণার পেছনে থাকা নেটওয়ার্ক ও লেনদেনের তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

টাকা তুলতে গিয়ে প্রতারকের খপ্পরে মহিলা, স্থানীয়দের তৎপরতায় ধৃত প্রতারক

Author

Spread the News