রবীন্দ্র সঙ্গীত ও নৃত্য প্রতিযোগিতায় বরাকের তিন কন্যার স্থান দখল

বরাক তরঙ্গ, ১৪ মে : রাজ্য ভিত্তিক রবীন্দ্র সঙ্গীত ও নৃত্য প্রতিযোগিতায় বরাকের তিন কন্যার সাফল্য। সঙ্গীতে ‘গ’ বিভাগে প্রথম হয় নম্রতা ভট্টাচার্য (শ্রীভূমি)। নৃত্যে ‘গ’ বিভাগে দ্বিতীয় হয় নন্দিতা দে (হাইলাকান্দি) নৃত্যে ‘ক’ দ্বিতীয় বিভাগে তনুশ্রী পাল (কাছাড়)। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বরাক উপত্যকার তিন জেলার সমন্বয়ক ভাস্কর দাস (কাছাড়), অরূপ রায় (শ্রীভূমি), তিলকরঞ্জন রায় (হাইলাকান্দি)।

অসম ভাষিক সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে আয়োজিত ৩য় রবীন্দ্র সঙ্গীত ও নৃত্য প্রতিযোগিতার সমাপ্ত_____

উল্লেখ্য, গুয়াহাটির শ্রীমন্ত শঙ্করদেব কলাক্ষেত্রে আয়োজিত ১০ ও ১১ মে অনুষ্ঠিত ফাইনাল রাউন্ড প্রতিযোগিতায় রাজ্যের কুড়িটি সেন্টার থেকে মোট তিনশো ষাট জন প্রতিযোগী অংশ গ্রহণ করে এবং সেখান থেকে মোট একুশ জন স্থান লাভ করে।

রবীন্দ্র সঙ্গীতে ‘ক’ বিভাগে প্রথম পুরস্কার লাভ করে কলমৌজো মার, দ্বিতীয় পুরস্কার আয়ুষ্মান ভট্টাচার্য ও তৃতীয় বিনাশ্রী দাস। ‘খ’ বিভাগে প্রথম পুরস্কার লাভ করে সংস্কৃত চক্রবর্তী, দ্বিতীয় পুরস্কার, নীহারিকা বর্মন ও তৃতীয় পুরস্কার অলোকানন্দ ভুঁইয়া। ‘গ’ বিভাগে যৌথ ভাবে প্রথম হয়েছে নম্রতা ভট্টাচার্য ও গৌরব সিনহা, দ্বিতীয় জয়িতা চক্রবর্তী ও তৃতীয় দীক্ষিত মহন্ত।

রবীন্দ্র সঙ্গীত ও নৃত্য প্রতিযোগিতায় বরাকের তিন কন্যার স্থান দখল

এছাড়া রবীন্দ্র নৃত্যে ‘ক’ বিভাগে প্রথম পুরস্কার লাভ করে প্রিয়াংশী  দাস, দ্বিতীয় পুরস্কার তনুশ্রী পাল ও তৃতীয় পুরস্কার সোনাক্ষী পালিত। ‘খ’ বিভাগে যৌথ ভাবে প্রথম পুরস্কার লাভ করে রাজনন্দিনী দেব ও সুজল  ভট্টাচার্য, দ্বিতীয় অন্বেষা চক্রবর্তী এবং তৃতীয় পুরস্কার রাজনন্দিনী দত্ত। ‘গ’ বিভাগে প্রথম পুরস্কার লাভ করে সূর্য সাহা, দ্বিতীয় নন্দিতা দে এবং যৌথ ভাবে তৃতীয় স্থান দখল করেছে জিশা দে ও রক্তিম চক্রবর্তী।

রবীন্দ্র সঙ্গীত ও নৃত্য প্রতিযোগিতায় বরাকের তিন কন্যার স্থান দখল

উল্লেখ্য, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষ্যে রাজ্যের কুড়িটি শহরে গত ১২ এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিল অবধি অডিশন নেওয়া হয়। কুড়িটি সেন্টারে মোট ৮০জন বিচারক ৫২৫৩ জন প্রতিযোগী থেকে ৩৬০ জনকে বাছাই করে গুয়াহাটির ফাইনাল রাউন্ডে যাওয়ার ছাড়পত্র প্রদান করেন। দু’দিনের ফাইনাল রাউন্ডে ৩৬০ জন প্রতিযোগী থেকে বিচারক মণ্ডলীরা ২১ জনকে চুড়ান্ত হিসেবে বিবেচিত করেন। সোমবার মূল অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ১২ মে অর্থাৎ সোমবার রাতের গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। ফলস্বরূপ রবিবার রাতেই শ্রীমন্ত শঙ্করদেব কলাক্ষেত্রের মাধবদেব ইন্টারন্যাশনাল অডিটোরিয়াম এবং ড০ বানীকান্ত কাকতি অডিটোরিয়ামে অসম ভাষিক সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদ কর্তৃপক্ষ প্রতিযোগীদের হাতে শংসাপত্র ও ট্রফি তথা নগদ অর্থ পুরস্কার হিসেবে তুলে দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

রবীন্দ্র সঙ্গীত ও নৃত্য প্রতিযোগিতায় বরাকের তিন কন্যার স্থান দখল

রবিবারের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারপার্সন তথা হোজাইর প্রাক্তন বিধায়ক শিলাদিত্য দেব, ডেপুটি চেয়ারপার্সন সুশান্ত বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মিতা সেন প্রমুখ।

অসম ভাষিক সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারপার্সন শিলাদিত্য দেব বলেন ‘ বিশ্বকবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে এতবড় আয়োজন দেশের কোথাও আছে বলে মনে হয় না। তবে তৃতীয় রাজ্য ভিত্তিক রবীন্দ্র সঙ্গীত ও রবীন্দ্র নৃত্য প্রতিযোগিতায় অনেক বেশী সাড়া পাওয়া গেছে বিভিন্ন জাতি জনগোষ্ঠীর সমান্তরাল অংশগ্রহণ এই আয়োজনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। প্রতিটি ঘরে রবীন্দ্র নাথের বার্তা বিলিয়ে দিতেই মূলত এই আয়োজন। যেখানে রয়েছে সম্প্রীতি ও সমন্বয়। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী জুন মাসেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসমীয়া সৃষ্টি নিয়ে এক  অনুষ্ঠানের আয়োজন করার পরিকল্পনার কথা জানান চেয়ারপার্সন দেব। যেখানে শুধু রবীন্দ্র সঙ্গীত ও রবীন্দ্র নৃত্যের অসমীয়া অনুবাদের উপর গোটা অনুষ্ঠান হবে। তিনি রাজ্যজুড়ে আয়োজিত সঙ্গীত ও নৃত্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রতিযোগী, অভিভাবক তথা সেন্টার ভিত্তিক সকল আয়োজকদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।

সঙ্গীত ও নৃত্যে পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে ‘ক’ বিভাগে প্রথম পুরস্কার ১০,০০০ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৭০০০ টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার : ৫০০০ টাকা। ‘খ’ বিভাগে প্রথম পুরস্কার: ১৫০০০ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার: ১২০০০ টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার: ১০০০০ টাকা। ‘গ’ বিভাগে প্রথম পুরস্কার ২১০০০ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার: ১৮০০০ টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার  : ১৫০০০ টাকা।

Author

Spread the News