“সেবা হি সমর্পণ” স্বাস্থ্য সপ্তাহে উধারবন্দে বিশাল স্বাস্থ্য শিবির, চিকিৎসা নিলেন তিন হাজারের বেশি মানুষ
বরাক তরঙ্গ, ১৪ অক্টোবর : উধারবন্দের জগন্নাথ সিং কলেজ প্রাঙ্গণ মঙ্গলবার এক বিশেষ ঘটনার সাক্ষী রইল। “সেবা হি সমর্পণ” স্বাস্থ্য সপ্তাহ উপলক্ষে কাছাড় জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল জেলার চতুর্থ বৃহৎ স্বাস্থ্য শিবির, যেখানে চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ করলেন ৩,৬১৯ জন রোগী। এর মধ্যে ৩৯৫ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করার সুপারিশ করা হয়েছে।
এই মেগা স্বাস্থ্য শিবিরটি পরিচালিত হয় জেলা প্রশাসক মৃদুল কুমার যাদব, আইএএস-এর নেতৃত্বে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উধারবন্দ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির কান্তি সোম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার জুনালি দেবী, এ.সি.এস, ফুনলালঙ্গির চোরেই, এ.সি.এস, স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম সঞ্চালক ডা. শিবানন্দ রায়, উধারবন্দ SDM & HO ডা. এ.পি. গোয়ালা, ও NHM কাছাড়ের DPM রাহুল ঘোষ।
বিধায়ক মিহির কান্তি সোম তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “শিশুদের জন্য ৫৯ ধরনের রোগ নির্ণয়ের যে স্বাস্থ্য উদ্যোগ শুরু হয়েছে, তা এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা ও প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়ই সুস্থ অসম গড়ার মূল চাবিকাঠি।”
তিনি জেলা প্রশাসন, শিলচর মেডিক্যাল কলেজ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলির একসঙ্গে কাজ করার প্রশংসা করেন এবং বলেন,
“‘সেবা হি সমর্পণ’ কেবল একটি স্লোগান নয়, এটি মানুষের জন্য প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও চিকিৎসকদের মিলিত দায়িত্বের প্রতিফলন।”
জেলা কমিশনার মৃদুল যাদব বলেন, “এই স্বাস্থ্য শিবিরের সফলতা প্রমাণ করে কাছাড় জেলা প্রশাসন মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কতটা আন্তরিক ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ‘সুশ্রুষা সেতু’ প্রকল্পের মাধ্যমে এই পরিষেবা আরও বিস্তৃত করা হবে।”
স্বাস্থ্য বিভাগের যুগ্ম সঞ্চালক ডা. শিবানন্দ রায় বলেন, “সেবা হি সমর্পণ সপ্তাহটি মূলত দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন উপলক্ষে পালিত হয়। এই সপ্তাহের মূল লক্ষ্য—সমাজের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া।” তিনি জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করা রোগীদের জন্য ‘সুশ্রুষা সেতু’-র আওতায় বিশেষ চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই স্বাস্থ্য শিবিরে সাধারণ চিকিৎসা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য, বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা, অ-সংক্রামক রোগ সচেতনতা শিবির সহ একাধিক স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হয়।
উপস্থিতির পরিমাণ এবং মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রমাণ করে, সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্য উদ্যোগের প্রতি মানুষের আস্থা ক্রমাগত বাড়ছে।
এই মেগা স্বাস্থ্য শিবির শুধু একটি প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন নয়, বরং সরকারের পক্ষ থেকে মানুষের প্রতি এক আন্তরিক সেবামূলক প্রতিশ্রুতি, যার বাস্তব প্রতিফলন দেখা গেল উধারবন্দে।