মোহনখাল-রামমানিকপুর জিপিতে পিএম আবাসের জিও-ট্যাগিঙে ব্যাপক অনিয়ম, বঞ্চিত
রাজীব মজুমদার, ধলাই।
বরাক তরঙ্গ, ২৩ জুলাই : ধলাই বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত পালংঘাট উন্নয়ন খণ্ডের মোহনখাল-রামমানিকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার জিও-ট্যাগিং প্রক্রিয়া নিয়ে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জিপির ৩ নম্বর গ্রুপের ক্ষুব্ধ জনসাধারণ সংবাদমাধ্যমের কাছে এই অভিযোগ তুলে ধরেছেন, যা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জিপির জীবিকা সখী রেজিমা বেগম এই জিও-ট্যাগিংয়ের কাজটি সম্পন্ন করেন। কিন্তু সম্প্রতি যখন এর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তখন দেখা যাচ্ছে এক হতাশাজনক চিত্র। অপেক্ষাকৃত সচ্ছল এবং আর্থিকভাবে সবল ব্যক্তিদের নাম তালিকায় স্থান পেলেও, গ্রামের প্রকৃত দরিদ্র ও যোগ্য পরিবারগুলি তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, মোহনখাল রামমানিকপুর গ্রামের প্রায় ৪০টি দরিদ্র পরিবারের নাম এর তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। এই পরিবারগুলি দীর্ঘদিন ধরে একটি পাকা বাড়ির স্বপ্ন দেখছে এবং সরকারি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এই অনিয়মের কারণে তাদের সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছে। স্থানীয়দের মতে, জিও-ট্যাগিংয়ের সময় সঠিক নিয়মকানুন অনুসরণ করা হয়নি এবং স্বজনপোষণ বা দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে, যার ফলে প্রকৃত অভাবী মানুষরা সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সদস্যরা সংবাদমাধ্যমের কাছে তাদের হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, “আমাদের মতো গরিব মানুষরা সরকারি প্রকল্পের উপর ভরসা করে থাকি। একটি পাকা বাড়ির জন্য আমরা বহু বছর ধরে অপেক্ষা করছি। কিন্তু এখন দেখছি যারা আর্থিকভাবে আমাদের থেকে ভালো অবস্থানে আছে, তাদের নাম তালিকায় রয়েছে, আর আমাদের মতো গরিব মানুষরা বাদ পড়েছি। এটা সম্পূর্ণ অবিচার।” তারা আরও জানান, গ্রামের বহু পরিবার যাদের মাটির বাড়ি বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা যাদের থাকার মতো ন্যূনতম আশ্রয় নেই, তাদের নামও তালিকায় নেই।
এই গুরুতর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, মোহনখাল রামমানিকপুর গ্রামের বঞ্চিত মানুষজন ধলাইয়ের বিধায়ক নীহাররঞ্জন দাস এবং পালংঘাট ব্লকের বিডিও-র জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা অবিলম্বে এই জিও-ট্যাগিং প্রক্রিয়ার স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। গ্রামবাসীরা জোর দিয়ে বলেছেন যে, পুনরায় জিও-ট্যাগিং করা হোক এবং প্রকৃত হিতাধিকারীদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হোক, যাতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত না হয় এবং গরিব মানুষরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন।